বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
এবিষয়ে চাঁচল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কংগ্রেসের উৎপল তালুকদার বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি পঞ্চায়েতে এলাকায় বহু লোকের গৃহ ও ভূমি কর বকেয়া রয়েছে। যে কর জমা পড়লে গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয় অনেকটা বাড়বে। এতে এলাকার উন্নয়ন করা যাবে। তাই বকেয়া কর আদায়ে জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা বকেয়া কর আদায় করতে বাড়ি ও জমির মালিকদের নোটিশ পাঠাব। তাছাড়া গ্রামবাসীরা যাতে স্বেচ্ছায় গৃহ ও ভূমি কর পঞ্চায়েত অফিসে জমা দিয়ে যান সেজন্য বিভিন্নভাবে তাঁদের সচেতন করা হচ্ছে।
গাজোল ব্লকের বৈরগাছি-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের ভরত চন্দ্র মণ্ডল বলেন, পঞ্চায়েতে পরিষেবামূলক বিশেষ কাজ না থাকলে গ্রামবাসীরা ভূমি ও গৃহকর দিতে চান না। এটা দীর্ঘদিনের চল। এভাবে বকেয়া করের পরিমাণ বাড়তে বাড়তে পাহাড় জমে উঠেছে। এতে পঞ্চায়েতের আয় বাড়াতে সমস্যা হয়। তাই মানুষ যাতে নিজেদের উদ্যোগেই ভূমি ও গৃহ কর দিয়ে দেন সেজন্যই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যথাসময়ে ঠিকভাবে কর জমা পড়লে সমস্যা হয় না। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই গ্রামবাসীদের সচেতনতার অভাবে আমরা নিজস্ব তহবিল বাড়াতে পারছি না। এনিয়ে মানুষদের সচেতন করছি। তাছাড়া সংসদ সদস্যদেরও নিজের এলাকায় বকেয়া কর জমা দেওয়ার ব্যাপারে গ্রামবাসীদের মধ্যে প্রচার করতে হবে। মানুষকে বোঝাতে হবে তাঁরা কর দিলে সেই টাকাতেই এলাকার উন্নয়ন সম্ভব।
পুরাতন মালদহ ব্লকের যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল কংগ্রেসের নূর হক বলেন, আমাদের গ্রাম পঞ্চায়েতে দুই থেকে আড়াই লক্ষ টাকার মতো ভূমি ও গৃহ কর বকেয়া পড়ে আছে। সেই কর উঠে এলে গ্রাম পঞ্চায়েতের তহবিলে জমা হবে। তা থেকে এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ করা সম্ভব। কিন্তু সেটা সহজেই উঠে আসবে না। এজন্য আমরা প্রচারের উপর জোর দিচ্ছি। ওই কর তুলতে গ্রামে গ্রামে মাইকে করে প্রচার করা হচ্ছে। গ্রামবাসীরা এতে সাড়াও দিচ্ছেন। যারা কর দেননি তাঁরা নতুন করে কর জমা দিচ্ছেন। এবিষয়ে জেলার পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক জ্যোতি ঘোষ বলেন, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তাদের নিজস্ব পঞ্চায়েত আইন মেনে কর আদায় করে থাকে। এলাকার উন্নয়নের জন্য সেকাজ করতে হয়। কোথাও কর বকেয়া থাকলে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকেই উদ্যোগ নিতে হবে। আমরাও পঞ্চায়েতগুলিকে নিজস্ব আয় বাড়ানোর কথা বলে থাকি।
বিভিন্ন পঞ্চায়েত জানিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব আয়ের অনেকটা অংশই ভূমি ও গৃহ কর থেকে আসে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই গ্রামবাসীরা কর না দিয়েই দিনের পর দিন বসবাস করছেন। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া তাদের কর জমা দেওয়ার আগ্রহ দেখা যায় না। এবিষয়ে অনেকে সচেতনই নন। এদিকে কর না জমা পড়ায় একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে টান পড়েছে। সে কারণেই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি গ্রামে গ্রামে প্রচার করে ভূমি ও গৃহ কর আদায়ের তৎপরতা শুরু করেছে। পুরাতন মালদহের যাত্রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতে গাড়িতে মাইকিং করে কর জমা দেওয়ার কথা প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া চাঁচল-১ গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ তাদের বকেয়া আদায়ে বাড়ি বা জমির মালিককে নোটিশ পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। এছাড়াও বহু গ্রাম পঞ্চায়েত গ্রামসভা থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বকেয়া কর আদায়ের তৎপরতা শুরু করেছে।
গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের বর্তমান জমির বাজার মূল্যের উপর পঞ্চায়েতকে কর প্রদান করতে হয়। সেই কর থেকে যা আয় হয় তা পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিলে জমা হয়। সেই তহবিল খরচ করে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এলাকার উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়।