বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, এধরনের ইঞ্জেকশন সাময়িকভাবে হাসপাতালে একটু কম রয়েছে। আমরা উপর মহলে জানিয়েছি। দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।
বাণেশ্বরের বাসিন্দা গীতারানি বসাককে এদিনই কুকুরে কামড়েছে। বৃদ্ধা মাকে নিয়ে এমজেএন হাসপাতালে এসেছিলেন তাঁর পূত্র গৌরহরি বসাক। কিন্তু হাসপাতালে কুকুরে কামড়ানোর ইঞ্জেকশন নেই। বৃদ্ধা মাকে নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে এদিক ওদিক চরকি কেটেও কোনও কূলকিনারা তিনি পাননি। এদিন তিনি মায়ের জন্য ইঞ্জেকশন না পেয়ে হাসপাতাল চত্বরে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এদিন গাড়ি ভাড়া দিয়ে অনেকেই হাসপাতালে ইঞ্জেকশনের জন্য এসেছিলেন। তাঁরা তা না পেয়ে অথৈ জলে পড়েন। বাঘরোয়া গ্রাম থেকে এদিন হাসপাতালে জলাতঙ্কের ইঞ্জেকশনের জন্য এসেছিলেন ধরণীকান্ত দেউড়ি। তিনি বলেন, হাসপাতাল থেকে বলছে ইঞ্জেকশন নেই। কোথায় যাব কিছুই বুঝতে পারছি না। বেসরকারি জায়গায় এধরনের ইঞ্জেকশন দেওয়ার মতো আর্থিক ক্ষমতা আমাদের নেই। বুলা মোহন্ত নামে অপর এক রোগিণী বলেন, কুকুরে কামড়ালে বর্তমানে চারটি ইঞ্জেকশন দফায় দফায় দিতে হয়। একটা ইঞ্জেকশন কয়েকদিন আগে পেয়েছিলাম। এরপর এদিন সকাল ৬টা থেকে হাসপাতালে ইঞ্জেকশনের জন্য ঘুরছি। কিছুতেই পাচ্ছি না। বাইরে থেকেই যদি ইঞ্জেকশন কিনতে হয় তবে সরকারি হাসপাতালে আসব কেন? কেন আমাদের এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে? এদিন কয়েকজন মা তাঁদের বাচ্চাদের নিয়েও হাসপাতালে জলাতঙ্কের ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য এসেছিলেন। কিন্তু তাঁরাও এদিন ইঞ্জেকশন পাননি। তাঁরা তাঁদের সন্তানদের নিয়ে আরও দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যান।
দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করার পরেও ইঞ্জেকশন না পেয়ে ক্ষুব্ধ রোগীরা হাসপাতাল চত্বর থেকে বেরিয়ে সুনীতি রোড অবরোধ করেন। এর জেরে স্বাস্থ্য দপ্তরের অন্দরে শোরগোল পড়ে যায়। এদিন অবরোধকারীদের মধ্যে মহিলাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিস গিয়ে অবরোধকারীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়। এরপর ক্ষুব্ধ রোগী ও তাঁদের পরিজনরা হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছে। হাসপাতালের আধিকারিকদের একাংশের মতে, গ্রামের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ইঞ্জেকশনের জন্য এমজেএন হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে হাসপাতালে এধরনের রোগীদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। যার জেরে দ্রুত ইঞ্জেকশন ফুরিয়ে যাচ্ছে। তবে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাজুড়েই এধরনের ইঞ্জেকশনের কিছুটা অভাব রয়েছে। তবে দ্রুত সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে উপর মহলে জানানো হয়েছে। আপতকালীন পরিস্থিতিতে কিছু ইঞ্জেকশন আনা হচ্ছে। রোগীর পরিজনদের একাংশের অভিযোগ নানাভাবে হাসপাতাল থেকে রোগীদের একাংশকে ঘুরপথে বেসরকারি জায়গায় পাঠানোর চেষ্টা হচ্ছে। কোথাও ইঞ্জেকশন না থাকার প্রসঙ্গ তুলে রোগীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। কোথাও আবার ডাক্তারের বেসরকারি চেম্বারের ঠিকানা যুক্ত কার্ড হাসপাতালের বহির্বিভাগে বিলি করা হচ্ছে। এসবের জেরে রোগী ও তাঁর পরিজনদের মধ্যে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আরও সতর্ক হওয়া দরকার।