সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
গত বছর দীঘা মোহনায় ১লক্ষ ৩৬হাজার মেট্রিকটন মাছ ওঠে। যার আনুমানিক মূল্য ১০০০কোটি টাকা। এছাড়াও দীঘায় মোট ৩৬১৭মৎস্যযান আছে। বরফ কলের সংখ্যা ৭৩টি। মোট আটটি প্রসেসিং প্ল্যান্ট আছে। গোটা কর্মযজ্ঞে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যুক্ত ১লক্ষ ১৮হাজার মানুষ। এখানকার বেশিরভাগ সামুদ্রিক মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। সামুদ্রিক মাছের সন্ধানে সমুদ্রে নামা সমস্ত ট্রলার এসে পৌঁছায় দীঘা মোহনায়। কিন্তু, পাইকারি বাজারের ভগ্নদশা নিয়ে সরব ছিলেন মৎস্যজীবী থেকে ওই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত লোকজন। এতদিনে তাঁদের সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক মানের ওই পাইকারি বাজার ‘ইউরো অ্যাপ্রুভ ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট’ হিসেবে গড়ে উঠবে। অর্থাৎ মাছের গুণগত মান জানা যাবে ওই বাজার থেকে। সেখানে দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীরা এসে সরাসরি মাছ কিনতে পারবেন। ১০০শতাংশ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ওই বাজার তৈরি হবে। চারিদিক ঘেরা থাকবে। ভিতর একটি পাখিও ঢুকতে পারবে না। হাত-পা ঢাকা অবস্থায় বাজারে ঢুকতে হবে। এরকম একটি বাজার গোটা দীঘা মোহনার চিত্রটাই বদলে দেবে বলে মনে করছে মৎস্যজীবী থেকে মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
বুধবার দীঘা-শঙ্করপুর ফিশারমেন অ্যান্ড ফিস ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণবকুমার কর এবং সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস মুখ্যমন্ত্রীর জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। দীঘা মোহনায় আন্তর্জাতিক মানের পাইকারি মাছবাজার তৈরির ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন সংগঠনের সভাপতি। তিনি বলেন, আমরা গত কয়েক বছর ধরে দীঘা মোহনায় একটি উন্নতমানের পাইকারি মার্কেটের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। এজন্য আমরা তিন একর জমিও দিয়েছি। শেষমেশ এদিন মুখ্যমন্ত্রী আন্তর্জাতিক মানের ওই বাজারের প্রথম পর্যায়ের কাজের সূচনা করেছেন। যার অর্থমূল্য ৬কোটি ১লক্ষ টাকা। এর ফলে দীঘা মোহনায় ছবিটাই বদলে যাবে।
সংগঠনের সম্পাদক বলেন, দীঘা মোহনা থেকে নানা রকমের সামুদ্রিক মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হয়। ১০০শতাংশ স্বাস্থ্যবিধি মানা হলে বিদেশে এখানকার মাছের কদর আরও বাড়বে। আরও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আয় হবে। বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। এরকম একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।
দীঘার পর্যটনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একগুচ্ছ কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাঁচ একর জায়গার উপর পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের আদলে এখানেও জগন্নাথ মন্দির গড়া হবে। পুরনো মন্দিরটি যেমন আছে, সেই অবস্থাতেই থাকবে। পাশাপাশি ন্যায়কালী, জলদা এবং শৌলায় মেরিনা ব্রিজের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য পূর্ত দপ্তরকে নির্দেশ দেন তিনি। বৈঠকে পূর্তদপ্তরের সচিব বলেন, আগামী বছর মার্চের মধ্যে জলদায়, এপ্রিলের মধ্যে ন্যায়কালী এবং জুনের মধ্যে শৌলায় কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
পাশাপাশি দীঘায় হোটেলের ভাড়া না বাড়ানোর জন্য দীঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতিকে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, অল্প খরচে কম দিনের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর একটি সুন্দর পর্যটনকেন্দ্র হল দীঘা। এখানে হোটেলভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। আপনাদের কাছে আবেদন, ভাড়া বাড়াবেন না।