গল্পের পাতা

পঞ্চমুণ্ডির আসন
হিমাদ্রিকিশোর দাশগুপ্ত

তুষারবাবু ভ্যানরিকশতে বসে শ্মশানের দিকে যাত্রা করার আগে গোবিন্দ সাহার পরিচিত স্থানীয় যে মানুষটির বাড়িতে সকালে এসে উঠেছিলেন সেই বিধু মল্লিক বললেন, ‘আপনার সঙ্গী হতে পারলাম না বলে দুঃখিত। একথা সত্যি সাধুবাবা পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসে কারওর জন্যত কিছু চাইলে সে প্রার্থনা মঞ্জুর হয়। এ বিষয়ে বহু জনশ্রুতিও আছে এ অঞ্চলে । কিন্তু তবুও ওই পঞ্চমুণ্ডির আসনকে এই গ্রামের মানুষজন বড় ভয় পায়। জানেনই তো,  পঞ্চমুণ্ডির আসন মানেই অপদেবতা, ভূত-প্রেতের আনাগোনা। তাছাড়া ওখানে একটি কুয়োও আছে। সাধুবাবা কারও উপর কুপিত হলে তাকে ওই কুয়োতে ফেলে দেন।  সেই ব্যওক্তির আত্মা তখন  ওই কুয়োতেই আটকে পড়ে। আমি ছাপোষা মানুষ। সন্তান-সন্ততি নিয়ে সংসার করি। তাই ওখানে যাওয়ার সাহস নেই আমার। তার উপর আজ আবার অমাবস্যার। পঞ্চমুণ্ডির আসনে বসবেন সাধুবাবা। মহামায়ার কাছে প্রার্থনা করি, আপনার যাত্রা শুভ হোক। তারপর ভালোয় ভালোয় ফিরে আসুন।’ একটানা কথাগুলি বলে থামলেন তিনি। তার কথা শুনে তুষারও মনে মনে বললেন, ‘প্রয়োজন না হলে আমিও কি আর যেতাম সেখানে! দেখি গোবিন্দ সাহার মতো সাধুবাবার আশীর্বাদে আমারও ভাগ্যো ফেরে কি না।’
এরপর তিনি বিধু মল্লিককে ধন্য্বাদ জানিয়ে রওনা হলেন তাঁর গন্তব্যে র উদ্দেশে। ভ্যা নরিকশ কিছুটা এগতেই একটি লোক হঠাৎ ছুটে এল। লোকটির পোশাক শহুরেদের মতো। চালককে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এখানকার শ্মশানটা কোন দিকে? আমাকে পৌঁছে দিতে পারবে সেখানে?’ চালক বলল, ‘ওখানেই যাচ্ছি এই বাবুকে নিয়ে। ওঁর আপত্তি না থাকলে আপনাকেও নিয়ে যেতে পারি।’
তুষার সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, ‘আপত্তির কি আছে! নিয়ে নাও।’
ভদ্রলোক উঠে বসে বললেন, ‘আমি কনিষ্ক পাইক। কলকাতায় থাকি। সাধুসঙ্গের নেশা আছে।’
তুষারও নিজের নাম বললেন এবং জানালেন তিনিও কলকাতারই। সাধুবাবার দর্শনেই চলেছেন। দু’জনের পরিচয় পর্ব মেটার পর কণিষ্ক চালককে বললেন, ‘আজ তো অমাবস্যাক। সাধুবাবার ডেরায় কালীপুজো হবে। তুমি সে কালীমূর্তি দেখেছ? অনেক মানুষ সেখানে যায় পুজো দেখতে?’
বড় রাস্তা ছেড়ে মেঠো পথ ধরে চলতে চলতে চালক বলে চলল, ‘ওখানে পঞ্চমুণ্ডির আসন আছে। তাই ওদিককার শ্মশানে গ্রামের লোকজন দল বেঁধে মড়া পোড়াতে গেলেও কখনওই কেউ সে পুজোয় যায় না। সে মূর্তিও কেউ কোনওদিন তাই দেখেনি। শুনেছি, কষ্টিপাথরের মূর্তি। কোনও এক রাজা নাকি বহু বছর আগে প্রচুর সোনার গয়না দান করেছিলেন মাকে।’
আধ ঘণ্টা চলার পর ভ্যা নরিকশ পৌঁছে গেল শীর্ণকায়া একটি নদীর পাড়ে। সেখানে ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে আছে পোড়া কাঠ, কয়লার টুকরো, ভাঙা মেটে কলসি। ভ্যা নচালক নেমে পড়ল সেখানে। তারপর বলল, ‘এটাই শ্মশান। ওপাশে যে বড় বড় গাছের জঙ্গল দেখছেন, ওখানেই সাধুবাবার ডেরা। আপনাদের এখানে নেমে পায়ে হেঁটে নদী পেরিয়ে সেখানে যেতে হবে। আমি আর এরপর যাব না।’
ভাড়া মিটিয়ে কনিষ্ক নামের সেই লোকটির সঙ্গে তুষার এগিয়ে চললেন নদী পেরিয়ে জঙ্গলের দিকে। সাধুবাবার আস্তানার খোঁজে। 
(২)
বিশাল বিশাল প্রা চীন শ্যাসওলা ধরা গাছের সে  জঙ্গল এমনই ঘন যে, সূর্যালোককে তারা যেন সেখানে প্রবেশ করতে দিতে চায় না। কেমন গা ছমছমে আধি ভৌতিক পরিবেশ। কিছুটা চলার পর হঠাৎই  মাথার উপরের ডালপালা কেঁপে ওঠার শব্দে সেদিকে তাকিয়ে দু’জনে দেখলেন একটি বিশাল হনুমান সেখানে বসে তাদের দেখছে। হনুমানটিকে দেখে তারা থমকালেন ঠিকই,  কিন্তু  প্রাণীটিকে তাদের আক্রমণাত্মক বলে মনে হল না। তারা আবারও চলতে শুরু করলেন। যদিও মাথার উপরের শব্দ শুনে তারা অনুমান করলেন প্রাণীটিও তাদের অনুসরণ করে চলেছে। জঙ্গলের ভিতর আরও কিছুদূর চলার পর একটি উন্মুক্ত স্থানে এসে উপস্থিত হলেন তাঁরা। সে জায়গার ঠিক মাঝখানে বাখারি আর শনের ছাউনি দেওয়া একটি কুঁড়ে— সেটাই সাধুবাবার ডেরা।
তুষার আর তার সদ্যয় পরিচিত সঙ্গী কনিষ্ক সেই কুঁড়ে ঘরের সামনে এসে দাঁড়াতেই হনুমানটি একটি গাছের ডাল থেকে লম্বা এক লাফে কুঁড়ের চালে গিয়ে পড়ল। আর তারপর হুপ্ হুপ্ শব্দে ডাকতে শুরু করল।  সে ডাক শুনে সাধুবাবা বলে উঠলেন , ‘কারা এলি? ভিতরে আয়।’
ঘরে ঢোকার আগে একটা ঘেরা বারান্দা মতো জায়গার এককোণে অন্ধকারের সঙ্গে গা মিশিয়ে বসে থাকা নেংটি পরা কালো মিশমিশে বাবরি চুলের একটি লোক দেখলেন তারা। রক্তাভ তার চোখ। তুষারের তাকে দেখে শ্মশানের চণ্ডাল মনে হল। তার দিকে একবার তাকিয়ে এরপর দু’জনে প্রবেশ করলেন সাধুবাবার ঘরে। সেখানে একটি খাটিয়ার উপর জটাজুটোধারী রক্তাম্বর পরিহিত সাধুবাবা বসে আছেন। তাঁর পায়ের কাছে একটি বেজি ঘুরে বেড়াচ্ছে। তুষারদের দেখে খানিকক্ষণ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পর তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘তোরা কারা? কী চাস?’
কনিষ্কই প্রথম উত্তর দিলেন। বললেন, ‘আমার কোনও প্রার্থনা নেই। সন্ন্যা সী দর্শনে পুণ্য হয়। তাই আপনার দর্শনে এসেছি। যদি অনুমতি দেন তো মায়ের পুজোর সময় মাকে একটি বার দেখতে চাই।’
তুষার এরপর সন্ন্যারসীর উদ্দেশ্যে  হাতজোড় করে বললেন, ‘আমি কিন্তু আপনার কাছে বড় আশা নিয়ে এসেছি বাবা। ব্যাবসার অবস্থা খুব খারাপ। বারে বারে লোকসানের ধাক্কায় দেনার দায়ে এবার স্ত্রী-সন্তানের হাত ধরে পথে বসার অবস্থা হয়েছে। আপনি আমাকে রক্ষা করুন।’ এরপর তিনি আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই ঘরের এক কোণে চোখ পড়তে নিজে থেকেই কথা বলা বন্ধ হয়ে গেল তার। একটি বিশাল বড় সাপ কুণ্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে সেখানে। মাঝে মাঝে ফণাও তুলছে। রাজ গোখরো। মৃত্যুর দোসর। 
তুষারের আতঙ্কের কারণ বুঝতে পেরে সাধুবাবা হেসে বললেন, ‘ওকে নিয়ে তোদের আতঙ্কিত হতে হবে না। খারাপ মানুষ ছাড়া ও কারও ক্ষতি করে না। দেখছিস না সাপে-নেউলে কেমন একসঙ্গে আমার কাছে রয়েছে।’
সত্যিগ ব্যা পারটা বড় অদ্ভুত। নিশ্চিতরূপে এটি সাধুবাবার অলৌকিক ক্ষমতার প্রকাশ। এরপর কুঁড়ে ছেড়ে বেরিয়ে তাদের নিয়ে এলেন ঘরের পিছনের অংশে। সেখানেই পঞ্চমুণ্ডির আসন ও মা কালীর বেদী। একটি ঝাঁকড়া যজ্ঞডুমুর গাছের ঠিক নীচেই অনুচ্চ সে বেদীর উপর অধিষ্ঠিতা মাঝ আকৃতির কষ্ঠিপাথরের দেবী মূর্তি। সর্বাঙ্গ তাঁর স্বর্ণালঙ্কারে ঝলমল করছে। আর তার ঠিক সামনেই মাটি নিকোনো একটি চারকোণা বেদীর উপর বাঘছাল পাতা– পঞ্চমুণ্ডির আসন!
তিনজন সে আসনের কাছে পৌঁছতেই দেবী মূর্তির আড়াল থেকে একটি প্রাণী বেরিয়ে এল। আধো অন্ধকারে তার চোখ জ্বলছে। একটি শেয়াল! তারপর তুষারদের দেখে আবার যজ্ঞডুমুর গাছের আড়ালে গিয়ে লুকিয়ে পড়ল সে। সাধুবাবা হেসে বললেন, ‘রাতের জীব তো, তাই দিনের প্রাণীদের দেখলেই পালায়।’
তুষার একসময় সে জায়গা থেকে কিছুটা তফাতে কুয়োটাও দেখতে পেলেন। মাটির ওপরে তার দেহের সামান্য অংশই জেগে আছে। বেখেয়ালে কেউ সে পথে হাঁটলে তার কুয়োর ভিতর পতন অবশ্যম্ভাবী।
কনিষ্ক দেবী মূর্তির দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন কিছুক্ষণ। দেবী মূর্তি আর পঞ্চমুণ্ডির আসন দেখানোর পর সাধুবাবা তাঁদের বললেন, ‘এসেছিস যখন, তখন আজ রাতটা আমার ঘরেই থেকে যা। রাতে পুজো দেখবি।’
(৩)
কিছুক্ষণ পর তাঁরা যখন কুঁড়েঘরে ফিরে এলেন তখন মাঝদুপুর। কিন্তু তখন সেখানে সেই চণ্ডাল, সাপ বা বেজি কেউই নেই।  হয়তো অন্যন কোথাও চলে গিয়েছে সেখান থেকে। সামান্যঝ কিছু কথাবার্তার পর কনিষ্ক সাধুবাবাকে বললেন,  ‘ভাঙ এনেছি সঙ্গে। একটু শরবত করে দিই আপনাকে। আপনি গ্রহণ করলে আমরাও একটু প্রসাদ পেতে পারি তবে।’
সাধুবাবা সম্মতিসূচক মাথা নাড়লেন। সাধুবাবা আর তুষার এরপর কথা বলতে লাগলেন। আর কনিষ্ক বারান্দায় গেলেন শরবত বানাতে। কিছুক্ষণ পর মাটির ভাঁড়ে শরবত বানিয়ে এনে তুলে দিলেন সাধুবাবা আর তুষারের হাতে। সাধুবাবা তাতে একটি চুমুক দিয়ে বললেন, ‘বাহ ভালো বানিয়েছিস।’
কনিষ্ক বললেন, ‘অনুমতি দিলে আমি বাইরে খোলা আকাশের নীচে বসে পান করি।’ কিছু পরে তুষারও বেরিয়ে এলেন কুঁড়ে থেকে। তবে কনিষ্ককে তিনি দেখতে পেলেন না। তুষারের ভাঙ খাওয়ার অভ্যা স নেই। তবুও এক যাত্রায় যাতে পৃথক ফল না হয়, তাই একটা চুমুক দিলেন তিনি শরবতে। আর তারপরই ঘটল একটা ঘটনা। হঠাৎই কুঁড়ের ছাদ থেকে তার উপর লাফিয়ে পড়ল সেই হনুমান। আকস্মিক এই ঘটনায় তার হাত থেকে ছিটকে পড়ল ভাঙের পাত্রটা। এরপর অবশ্য  প্রাণীটা ছুটল অন্য দিকে। পাছে সে আবারও কোনও উপদ্রব করে, সেই ভয়ে তুষার ঘরের ভিতর ফিরে এলেন। তিনি দেখলেন, সাধুবাবা ইতিমধ্যেেই চিৎপাত হয়ে পড়ে আছেন তার খাটিয়ায়। শূন্যয় ভাঁড়টা মাটিতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। মাত্র এক চুমুক শরবত খেলেও কয়েক মুহূর্তের মধ্যে তুষারের মাথাটাও কেমন ঝিমঝিম করতে লাগল। তিনিও শুয়ে পড়লেন মাটিতে। 
(৪)
তুষারের চেতনা ফিরল যখন, তখন বাইরের পৃথিবীতে অন্ধকার নেমে গিয়েছে। ঘড়িতে সময় দেখে চমকে উঠলেন তিনি। প্রায় মধ্য রাত। অর্থাৎ অন্তত সাত-আট ঘণ্টা কেটে গেছে ইতিমধ্যে। উঠে দাঁড়াতে গেলেন তিনি। কিন্তু তখনও মাথাটা ঝিমঝিম করছিল। সাধুবাবা একইভাবে শুয়ে আছেন। তুষার বার কয়েক ডাকলেন তাঁকে। কিন্তু তিনি সাড়া দিলেন না। হতভম্ব তুষার উপায়ান্তর না দেখে বাইরে বেরিয়ে এলেন কনিষ্কের খোঁজে। সেখানে তখন অমাবস্যাার মিশমিশে কালো রাত। হঠাৎ এক ঝলকের জন্য  যেন কনিষ্ককে দেখতে পেলেন তিনি। একটি মশাল হাতে নিয়ে তিনি অদৃশ্যা হয়ে গেলেন কুঁড়ের পিছনে পঞ্চমুণ্ডির আসনের দিকে। কৌতূহলী তুষারও সেদিকেই এগলেন তার পিছনে পিছনে। 
ততক্ষণে কনিষ্ক পৌঁছে গিয়েছেন পঞ্চমুণ্ডির আসনের সামনে। তার এক হাতে একটি ব্যা্গ, অন্যপ হাতে মশাল। সেই আলোতে ঝিলিক দিচ্ছে দেবীর গয়না। সেদিকে কিছুক্ষণ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর কনিষ্ক পাইক বেশ নিশ্চিন্তভাবেই মশালটা মাটিতে পুঁতে এগিয়ে গেল দেবী মূর্তির দিকে। 
তাঁর উদ্দেশ্যদ কী? তাঁকে ডাকতে গিয়েও থমকালেন তুষার। তারপর একটা গাছের আড়াল থেকে চেয়ে রইলেন সেদিকে। ঠিক তখনই হঠাৎ সেই হনুমানটি কোথা থেকে এসে লাফিয়ে পড়ল কনিষ্কর সামনে। কনিষ্ক তাকে তাড়াতে চাইলেন। কিন্তু সে নড়ল না। যেন বেদী আগলে দাঁড়িয়ে রইল সেখানে। এরপর যজ্ঞডুমুর গাছের আড়াল থেকে বেরিয়ে এল  শেয়ালটাও। আর মায়ের বেদীর দু’পাশে আবিষ্কৃত হল সাধুবাবার সাপ ও বেজি। একসঙ্গে এতগুলো প্রাণীকে দেখে থমকালেন কণিষ্ক। তবে আরও একজনের আসা তখনও বাকি ছিল সেখানে। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেনই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে তাঁর মুখোমুখি দাঁড়াল সকালের সেই চণ্ডাল। তাঁকে দেখেই ব্যাসগ থেকে একটি পিস্তল বের করে কনিষ্ক বলে উঠলেন , ‘পালা এখান থেকে।’
লোকটা কিন্তু শান্তই রইল। কনিষ্ক এবার আর সময় নষ্ট করলেন না। গুলি চালিয়ে দিলেন। গুলিটা তার গা ফুঁড়ে বেরিয়ে যজ্ঞডুমুর গাছটার গায়ে বিঁধল। গাছটা যেন কেঁপে উঠল। কিন্তু চণ্ডাল দাঁড়িয়েই রইল। একইভাবে। কনিষ্কর মতো তুষারও হতবাক হয়ে গেলেন ব্যায়পারটা দেখে। আর তখনই সেই চন্ডাল সহ বাকি প্রাণীগুলি এগতে লাগল কনিষ্কের দিকে। তিনি এবার ভয় পেয়ে ছুটতে চাইলেন। কিন্তু মুহূর্তের অসতর্কতায় গিয়ে পড়ে গেলেন কুয়োর পাশে আর তারপর একটি আর্ত চিৎকারের সঙ্গে হারিয়ে গেলেন কুয়োর ভিতর। ঘটনার আকস্মিকতায় বিহ্বল তুষার সেখানেই সংজ্ঞা হারালেন।
(৫)
চোখে মুখে জলের স্পর্শে তুষারের যখন জ্ঞান ফিরল তখন সদ্যয় ভোর হয়েছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন সাধুবাবা। একহাতে তাঁর কমণ্ডলু, অন্যহাতে শালপাতায় মায়ের প্রসাদ। তুষার তাঁকে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত গলায় বললেন, ‘বিশ্বাস করুন, আমি কিছু করিনি।’ সাধুবাবা হেসে বললেন, ‘জানি। অলংকার চোরকে ওরা শাস্তি দিয়েছে। প্রসাদটা নে। মায়ের কাছে তোর কথা বলেছি। সৎপথে থাকিস সব ঠিক হয়ে যাবে।’ তাঁর কথায় কিছুটা আশ্বস্ত তুষার আবারও বললেন, ‘ওরা আবারও ফিরে আসবে না তো?’
সাধুবাবা বললেন, ‘না ওরা আসবে না। ভূতচতুর্দশীর রাতেই ওরা এই পঞ্চমুণ্ডির আসন ছেড়ে বেরিয়ে আসে এবং অমাবস্যাতয় মায়ের পুজোর শেষে সেখানেই ফিরে যায়। পঞ্চমুণ্ডির আসন কীভাবে তৈরি হয় জানিস তো? এই আসন বানানো হয় চণ্ডাল, ধূর্ত শৃগাল, বৃক্ষচারী হনুমান, ক্ষিপ্র বেজি আর ক্রূর সর্পের খুলি দিয়ে। ওরা কেউই জীবিত নয়। ওদের সবার খুলি পোঁতা আছে ওই আসনের নীচে।’
সাধুবাবার কথায় বিস্মিত তুষার কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন সেখানে। তারপর মায়ের প্রসাদ নিয়ে আরও একবার সেই পঞ্চমুণ্ডির আসন, দেবী মা এবং সাধুবাবাকে প্রণাম করে ফেরার পথ ধরলেন। 
8Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা