বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
গল্পের পাতা
 

ছুটির চিঠি
দীপারুণ ভট্টাচার্য

অফিসে বসে একমনে কাজ করছিল শোভন। দুপুর প্রায় বারোটা বাজতে চলেছে। সাধারণত কাজের লোকদেরই অফিস কাজ দেয় বেশি। অবশ্য শোভনের তাতে কোন অভিযোগ নেই। অফিসের কাজ ছাড়া আজকাল সময় কাটতে চায় না তার। যখন বাবা-মা বেঁচেছিলেন, তখন তবুও বাড়িতে কিছুটা সময় কেটে যেত। গতবছর কয়েক মাসের ব্যবধানে পরপর চলে গিয়েছেন দু’জনেই। এখন বাড়িতে ঢুকলেই শোভনের মনে হয় সময় যেন থমকে রয়েছে। সেই জন্যে রান্না থেকে ঘর পরিষ্কার, সংসারের যাবতীয় কাজ নিজের হাতে সে করা শুরু করেছে কয়েক মাস হল। তবুও কাটতে চায় না সময়। দিনের বেশির ভাগটাই তার অফিসে চলে যায়। সমস্যা হয় ছুটির দিনগুলোতে। শনি-রবিবার মনে হয় কেউ যেন সময়ের শৃঙ্খল পরিয়ে দিয়েছে তাকে। সুযোগ পেলেই আজকাল অফিসের লোকেরা নানা রকম উপদেশ দেয় শোভনকে। রবিনদা বলেন, ‘অবসর সময়ে বই পড়বে। বইয়ের থেকে বড় বন্ধু আর কে আছে বল।’ বড় সাহেবের পিএ সাবিত্রী নায়ার বলে, ‘আমার তো ফেসবুক আর ইউটিউবেই সময় চলে যায়। একবার ওটিটিতে ওয়েব সিরিজ দেখতে শুরু করলেই দেখবেন কোথা থেকে যেন সময় কেটে যাচ্ছে, বুঝতেই পারবেন না।’ এসব শোভন চেষ্টা করে দেখেছে, লাভ হয়নি। তার মনে হয়, মানুষের একটা শখ তৈরি হওয়া খুব জরুরি। ছোটবেলা থেকে যেটা সে কোনওভাবেই করে উঠতে পারেনি।
চেয়ার টেনে বসতে বসতে অরিন্দম বেয়ারাকে হুকুম দিল, ‘দো চায়ে, জলদি।’ দুর্গাপুরের ছেলে এই অরিন্দম ব্যানার্জি। বছর দুয়েক হল প্রোমোশনের লোভে পোর্ট ব্লেয়ারে এসেছে। সুযোগ পেলেই অন্য কোথাও চলে যাবে। উন্নতি করাই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। এক অফিসে থাকলে যেমন আলাপ-বন্ধুত্ব হয়, শোভনের সঙ্গে অরিন্দমের তেমনই সম্পর্ক। ছেলেটা কম বয়সে অনেকটা উন্নতি করেছে বটে, তবে কাজ বিশেষ জানে না। কাজেই তাকে শোভনের কাছে আসতে হয়। ‘সিগারেট আছে?’ বলে হাতটা বাড়িয়ে দিল অরিন্দম। পোর্ট ব্লেয়ারের এই সরকারি অফিসটা এখনও পুরনো ধাঁচেই রয়েছে। কাজেই টেবিলে বসেই ধূমপান করা যায়। শোভন সিগারেট আর দেশলাই এগিয়ে দিয়ে বলল, ‘কেমন চলছে?’ যেন এই প্রশ্নটা শুনতেই এসেছিল অরিন্দম। সে সঙ্গে সঙ্গে নিজের অসুবিধার কথা ফলাও করে বলতে শুরু করল। শোভন ভালোই চেনে অরিন্দমকে। তাই তার কথায় কান না দিয়ে সে নিজের কাজে আবার ডুবে গেল।
‘লোকটা রোজ আসে। তারপর সারাদিন বসে থাকে। অফিস বন্ধ করার সময়ে চলে যায়। পরদিন অফিস খুলতে না খুলতে আবার এসে উপস্থিত হয়। আমার জীবনটা অতিষ্ট করে দিচ্ছে। লোকটাকে আমি আর নিতে পারছি না!... আচ্ছা, ও যদি কিছুই না বলে, তাহলে আমি কি করব বলতে পার?’ হঠাৎ বেয়ারা, রতন এসে চায়ের কাপ দুটো টেবিলে শব্দ করে রাখতেই শোভনের চিন্তায় ছেদ পড়ল। সে অরিন্দমের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল, ‘কী হয়েছে?’
প্রশ্নের উত্তরে খানিকটা বিরক্তি নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন করল অরিন্দম, ‘পুবের বারান্দায় একটা লোক কয়েকদিন থেকে বসে আছে, লক্ষ করনি?’ সরকারি অফিসে কত লোকের যাতায়াত। একই কাজে মানুষকে বারবার আসতে হয়। কাজেই একজন মানুষ পূর্ব দিকের বারান্দায় বসে কয়েকদিন অপেক্ষা করছে, এটা এমন কিছুই বিচিত্র নয়। তবুও বিষয়টা নজর এড়িয়ে যায়নি শোভনের। হয়তো লোকটার সঙ্গী, বিশাল আকারের দেশি কুকুরটাই এর জন্যে দায়ী। সে দেখেছে, লোকটা রোজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একই জায়গায় একইভাবে বসে থাকে। মাঝে মাঝে কুকুরটার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। সাদামাটা এই দৃশ্যটাই সবার মনে সৃষ্টি করেছে কৌতূহল। এখন প্রায় সবাই জানে, লোকটার কাজ অরিন্দমের টেবিলে আটকে আছে! রোজ এসে এই বসে থাকাটা যেন তার নীরব প্রতিবাদ! বিষয়টা যে অরিন্দমের উপর এমন মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে, সেটা শোভনের জানা ছিল না। সে জানতে চাইল, ‘লোকটা কে?’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে অরিন্দম বলল, ‘ওর বাড়ি বিহার না উত্তরপ্রদেশ, লোকটা সেটাই বলতে পারছে না। এখন বল তো বাড়ির ঠিকানা, ফোন নাম্বার, ব্যাঙ্কের ডিটেল না হলে পেনশন চালু করি কীভাবে!’ সমস্যাটা উড়িয়ে দেওয়ার ভঙ্গিতে শোভন বলল, ‘কেন, তোমার কাছে ওর সার্ভিস রেকর্ড নেই?’ চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে অরিন্দম নিচু গলায় বলল, ‘অফিস বলছে সুনামিতে ওর ফাইলপত্র সব গেছে। লোকটা ঠিকমতো কথা পর্যন্ত বলতে পারে না। মনে হচ্ছে বোবা।’ ঠিক এই সময়ে বড় সাহেবের পিএ সাবিত্রী এসে বলল, ‘শোভন বাবু, আপনাকে সাহেব ডাকছেন।’ শোভন উঠে দাঁড়াল। অরিন্দম উঠে যেতে যেতে বিড়বিড় করে বলল, ‘আমি পাগল হয়ে যাব।’
রবীন্দ্রনাথ সিং এই অফিসে নির্দেশক হয়ে আসার পর অফিসের অনেক উন্নতি করছেন। তিনি শোভনকে অন্য চোখে দেখেন। সে ঘরে ঢুকতেই প্রশ্ন করলেন, ‘চা না কফি?’ শোভন বলল, ‘এইমাত্র চা খেলাম।’ হাতের ইশারায় তাকে বসতে বলে, বললেন, ‘তাহলে কাজের কথা বলি। কলকাতা অফিসে একটা পোস্ট খালি হচ্ছে। সপ্তাহ দুয়েক বাদে ইন্টারভিউ। রাজি থাকলে আমি তোমাকে রেকমেন্ড করে দেব।’ বড় সাহেবের মুখের উপর সরাসরি না বলা ভালো দেখায় না। মাস তিনেক আগে মুম্বই অফিসের জন্য এমনই একটা প্রস্তাব দিয়েছিলেন সাহেব। শোভন, ‘না’ বলতে সাহেব বুঝিয়েছিলেন, ‘পোর্ট ব্লেয়ারে বসে থাকলে জীবনে উন্নতি হবে না।’ তবুও রাজি হয়নি শোভন। বলেছিল, ‘আমি চলে গেলে আপনার অসুবিধা হবে।’ রবীন্দ্রনাথ সিং হেসে বলেছিলেন, ‘কারও জন্যে কিছু থেমে থাকে না। তুমি নিজেরটা চিন্তা কর।’ উত্তর দিতে পারেনি শোভন। ছোটবেলা থেকে নিজেরটুকু চিন্তা করতে করতেই তো বড় হয়েছে সে! বাবা জুট মিলের ডাক্তার ছিলেন। মায়ের কাছে সে শুনেছে, চট-কলের শ্রমিকরা দারুণ ভালোবাসত তার বাবাকে। একদিন সেই বাবাই সেরিব্রাল স্ট্রোক হয়ে একটা জড়পদার্থে পরিণত হল। শোভন তখন স্কুলে পড়ে। তারপর কয়েক বছর মা জুট মিলে কাজ করে সংসার চালিয়েছেন। এরপর  উঠে যায় জুট মিলটা। তখন বাড়ি বাড়ি খবরের কাগজ বিলি করত শোভন। মা ছোট বাচ্চাদের পড়াতেন আর সেলাইয়ের কাজ করতেন। বছর কয়েক বাদে জুট মিলের কলোনি ভেঙে প্রোমোটারি শুরু হতেই শোভনদের আস্তানা হয় ষষ্ঠীতলার বস্তির ভাড়া বাড়ি। সেজন্যে পোর্ট ব্লেয়ারে ভারত সরকারের এই চাকরি আর কোয়ার্টার তার কাছে স্বর্গের মতো মনে হয়েছিল। তাই সে বাবা-মাকে নিয়ে কলকাতা ছেড়ে পাকাপাকি আন্দামানে আসতে দ্বিধা করেনি। খাতার উপর তিনবার কলম ঠুকে রবীন্দ্রনাথ সিং বললেন, ‘এত ভাবার কী আছে। ইন্টারভিউ দিলেই যে হবে এমন তো নয়! একবার কলকাতা থেকে ঘুরে এসো। তুমি তো চাকরি পাওয়ার পর থেকে ছুটিই নাওনি!’ মাঝে মাঝে পুরনো কথা মনে পড়ে শোভনের। কলকাতার জীবন তাকে এখনও যন্ত্রণা দেয়। স্কুল-কলেজের বন্ধুরা সবাই তাকে নিচু চোখে দেখেছে একসময়। তাদের সঙ্গে এখন ফেসবুকে যুক্ত হতেও ইচ্ছা করে না শোভনের। সরকার বাজার রোডে তার একসময়ের প্রেমিকা সুনীতার বাড়ি। 
পড়াতে পড়াতে শিক্ষক আর  ছাত্রী পরস্পরের প্রেমে পড়েছিল। বিষয়টা সুনীতার বাড়িতে জানাজানি হতেই, কুকুরের মতো শোভনকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তারা। এখনও মাঝে মাঝে সুনীতাকে স্বপ্নে দেখে শোভন। সে সাহেবের দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আমি এখানেই ভালো আছি স্যর।’ সাহেব হেসে বললেন, ‘আন্দামানের প্রতি এত টান! কোনও আদিবাসী মেয়ের প্রেমে পড়ে যাওনি তো?’
সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। অফিসে বিশেষ কেউ নেই আর। ফটকের কাছে এসে সিগারেট ধরাল শোভন। সে দেখল, সঙ্গী কুকুটিকে নিয়ে লোকটা অফিস বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে আসছে। হাতের ইশারায় তাকে কাছে ডেকে একটা সিগারেট এগিয়ে দিল শোভন। লোকটা খানিকটা ইতস্তত করল। তারপর সিগারেট নিল। এরপর অনেকক্ষণ সেটা নাকে লাগিয়ে ঘ্রাণ নেওয়ার পর ধরিয়ে সুখটান দিল। অবশেষে মাথা নিচু করে শোভনকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে হাঁটা দিল নিজের পথে। মিনিট কয়েকের এই নীরব আলাপ শোভনের মনে এমন প্রভাব ফেলল যে, বাড়ি ফিরে লোকটাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই সারা রাত কেটে গেল। 
পরদিন বৃষ্টি শুরু হল সকাল থেকে। অফিসে বিশেষ কেউ আসেনি তখনও। শোভন দেখল, লোকটা পূর্ব দিকের বারান্দায় একইভাবে বসে আছে কুকুরটিকে সঙ্গে নিয়ে। কী আশ্চর্য, কুকুরটিও কি লোকটার মতোই শব্দহীন! অফিসে ঢুকে অরিন্দম রাগ দেখিয়ে বলল, ‘আমাকে কি ও বাঁচতে দেবে না!’ রবিনদা বললেন, ‘লোকটার কথাটাও একবার চিন্তা কর। এখানে না এসে ও কোথায় যাবে? একা থাকতে থাকতে একটা মানুষ সব ভুলে গেছে। তাকে সাহায্য করা কি আমাদের উচিত নয়?’ শোভন প্রশ্ন করল, ‘লোকটার নাম কি জানা আছে?’ উত্তরে অরিন্দম বলল, ‘দীনবন্ধু প্রজাপতি।’ রবিনদা বললেন, ‘লোকটা জাতে হরিজন। মনে হয় উত্তরপ্রদেশে বাড়ি। দিল্লিতে অনেক সাফাই কর্মীর পদবি প্রজাপতি, আমি জানি।’ এটুকু শুনে শোভন বলল, ‘লোকটা যখন মেনল্যান্ড থেকে এখানে এসেছে তখন মেনল্যান্ডের কোনও না কোনও অফিসে ওর সার্ভিস রেকর্ড নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে?’ কথাটা শুনে অরিন্দম হতাশ গলায় বলল, ‘উত্তরপ্রদেশে আশিটা জেলা। কয়েক’শো অফিস। আমি কোথায় খুঁজব ওর ফাইল! থাক বসে। একদিন ঠিক ওর মনে পড়ে যাবে।’ কথাটা বলতে বলতে উঠে টয়লেটে চলে গেল অরিন্দম। শোভন কয়েক পা এগিয়ে এসে প্রশ্ন করল, ‘ব্যাপারটা কী বলুন তো রবিনদা?’
প্রবীণ সহকর্মী রবিন শীলের মুখে দীনবন্ধু প্রজাপতির গল্প শুনে চোয়াল ঝুলে গেল শোভনের। বিস্ময়ে হতবাক সে। ছোট বড় অনেক দ্বীপ নিয়ে এই আন্দামান। বিগত কুড়ি বছর জনহীন নর্থ রিল দ্বীপের লাইট হাউসের একমাত্র কর্মী হিসাবে একা জীবন কাটিয়েছে দীনবন্ধু। সম্ভবত তার স্ত্রী আগেই মারা গিয়েছে। সন্তান নেই। সপ্তাহে একদিন মায়াবুন্ডির থেকে পোর্ট ব্লেয়ার ফেরার পথে একটা ছোট ফেরি তাকে খাবার আর জ্বালানি তেল পৌঁছে দিয়ে আসত। বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে এই ছিল তার যোগাযোগ! এছাড়া, জেনারেটর খারাপ হলে বা লাইট হাউসের আলো বদলাতে এই কুড়ি বছরে মাত্র তিন থেকে চারবার অন্য সরকারি লোক গিয়েছে সেখানে। রবিন বললেন, ‘বছরের পর বছর একা থাকতে থাকতে দীনবন্ধু কথা বলার ইচ্ছেটাই হারিয়ে ফেলেছে। দেশে গিয়ে আত্মীয়দের মধ্যে পড়লে হয়তো ধীরে ধীরে আবার কথা বলবে! নতুনভাবে বাঁচার আগ্রহ খুঁজে পাবে! কিন্তু মুশকিল হল, গ্রামের নাম, বাড়ির ঠিকানা, সে কিছুই বলতে পারছে না।’
বড় মায়া হল শোভনের। সে দীনবন্ধুর পাশে গিয়ে বসল। চুপচাপ বসেই রইল, ঘণ্টার পর ঘণ্টা। পরপর কয়েকদিন। ছোটবেলায় এভাবেই সে বাবার সঙ্গে প্রথম বন্ধুত্ব করেছিল। অনেকটা সময় চুপচাপ পাশাপাশি বসে থাকলে সে বাবার মনের কথা কিছু কিছু বুঝতে পারত! দিন কয়েকের চেষ্টায় দীনবন্ধুর জিনিসপত্রের মধ্যে থেকে একটা পুরনো চিঠি আবিষ্কার করল শোভন। সঙ্গে তার ছোট ভাইজির বিয়ের কার্ড। লোকাল থানার মাধ্যমে যোগাযোগ হল কানপুরে দেহাত জেলার পালি গ্রামে দীনবন্ধুর ভাইয়ের সঙ্গে। খবরটা জানতেই খুশির ছোঁয়া লাগল অরিন্দমের মনে। পূর্ব দিকের বারান্দায় লোকটা আর কুকুর নিয়ে চুপচাপ বসে থাকবে না।
নির্দেশক রবীন্দ্রনাথ সিং ডেকে পাঠিয়েছেন শোভনকে। গরম কফিতে চুমুক দিতে দিতে তিনি বললেন, ‘তোমাকে ধন্যবাদ দেওয়ার ভাষা নেই। কিন্তু ভাবছিলাম, লোকটাকে একা একা ছেড়ে দেওয়া কি ঠিক হবে?’ শোভন বলল, ‘বাড়ি থেকে নিতে আসার মতো তো কেউ নেই।’ রবীন্দ্রনাথ সিং সিগারেট ধরালেন। ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললেন, ‘তুমি যাবে ওকে বাড়ি পৌঁছে দিতে? তুমি তো ছুটিই নাও না বছরের পর বছর। রাজি থাকলে বল, অফিসই ব্যবস্থা করবে।’ প্রস্তাবটা খারাপ লাগল না শোভনের, বরং ভালোই লাগল। জায়গার পরিবর্তন অনেক সময় মনের উপর ভালো প্রভাব ফেলে। একটু ভেবে শোভন বলল, ‘তাহলে দীনবন্ধুর একটা আর্জি আপনাকে রাখতে হবে। কুকুরটাকে ও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চায়।’ হঠাৎ হাসির ঝিলিক খেলে গেল নির্দেশকের চোখে মুখে। সিগারেটের শেষ অংশটা ফেলে দিয়ে তিনি বললেন, ‘তাহলে আমার একটা আর্জিও তোমাকে রাখতে হবে।’ শুনে চোখে প্রশ্ন নিয়ে তাকাল শোভন। নির্দেশক বললেন, ‘ফেরার পথে কলকাতা অফিসের ইন্টারভিউটা তোমাকে দিয়ে আসতে হবে।’ কে জানে কেন হঠাৎ এখন সুনীতার মুখটাই কেন মনে পড়ছে শোভনের! জানলার কাচ ভেদ করে শেষ বিকেলের আলো এসে পড়েছে তার মুখে। সেই আলোয় তার চোখের কোণে চিকচিক করতে থাকা অশ্রুবিন্দু ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে উঠছে নির্দেশক রবীন্দ্রনাথ সিংয়ের চোখেও। 
অঙ্কন : সুব্রত মাজী

23rd     July,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ