বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
গল্পের পাতা
 

সখা হে
সোমজা দাস

।। এক ।।
ফোনটা এসেছিল দুপুর নাগাদ।  
খাওয়া দাওয়া সেরে সবে সিরিয়াল দেখতে বসেছিল বনানী। আর ঠিক তখনই মোবাইলটা বেজে উঠেছিল। অচেনা নম্বর, অপরিচিত কণ্ঠস্বর। টিভির পর্দা থেকে চোখ না সরিয়ে ফোনটা কানে ছুঁইয়েছিল বনানী অগাধ নির্লিপ্তি নিয়ে। ঝিমলি তখনও স্কুলে, অনন্ত কারখানায়। সামনে কেউ থাকলে দেখতে পেত যে অন্য প্রান্তের বক্তব্য শুনতে শুনতে ধীরে ধীরে নির্লিপ্তির পর্দা সরে যাচ্ছিল তার। পরিবর্তে চোখেমুখে উত্তেজনা ঝিলিক দিয়ে উঠেছিল।      
এরপর সারাটা দিন যে কীভাবে কাটিয়েছে বনানী, সেসব ফেনিয়ে লাভ নেই। আজকের মতো ঘটনা তার নিস্তরঙ্গ জীবনে অপ্রতুল। অনন্তকে বেশ কয়েকবার ফোন করার চেষ্টা করেছে সে। কিন্তু যথারীতি ও প্রান্ত থেকে সাড়া আসেনি। আসেও না কোনওদিন। অনন্ত কর্মী পুরুষ। মেশিন পার্টস তৈরির কারখানায় সুপারভাইজারের কাজ তার। অনেক দায়িত্বের কাজ। ক্ষণমুহূর্ত বসার জো নেই। যে দিকে না তাকাবে, সেখানেই লেবাররা ফাঁকি দেবে। ঠান্ডাঘরে শুয়ে বসে, গিন্নির সঙ্গে ফোনে গজল্লা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বেতন দিয়ে পুষছে না তাকে। এসব অবশ্য অনন্তরই ভাষ্য। অন্যসময় কথাগুলো শুনলেই গা জ্বলে যায় বনানীর। তবে বোনেদের সঙ্গে আড্ডায় এসব কথাতেই রং চড়িয়ে বেশ চালিয়ে নেয় সে। সুখ-সচ্ছলতার এক কাল্পনিক ছবি আঁকতে বসে যত্ন নিয়ে।    
অবশ্য সেটা যে খুব সহজে ঘটে, তা নয়। বোনেরা সব কথা পুরোপুরি যেন বিশ্বাস করে না আজকাল। ছোট বোন মালিনী বলে, ‘ছাড় তো দিদি। আমাদের বরেরা যেন আর কাজকম্ম করে না! তা বলে বছরে একবার বেড়াতে যেতে না পারলে বাবা দম আটকেই মরে যাব আমি।’       
বড় বোন রোশনি অবশ্য এরকম চাঁচাছোলা ভাষায় বলে না। তবু সেও মনে মনে মালিনীকেই সমর্থন করে, বোঝে বনানী। আর সেটাই তো স্বাভাবিক। প্রেমের বিয়ে ছিল বনানীর। বাড়ির অমতে অনন্তের গলায় মালা দিয়েছিল। অনন্তর কম আয়, টানাটানির সংসারযাপন, ফিকে হয়ে যাওয়া দাম্পত্যরসায়ন সবই মানিয়ে নিয়েছে সে এত বছর ধরে। কিন্তু বোনেরা যখন তাদের স্বামীদের পত্নীপ্রেম নিয়ে আদিখ্যেতা করে, তখন অনন্তর উপর রাগটা দপ করে জ্বলে ওঠে। এই তো ক’দিন আগে রোশনি ভাইজ্যাগ থেকে ঘুরে এসে কাঞ্জিভরম শাড়ি উপহার দিয়ে গেল বনানীকে। সমুদ্রতটে স্বামীকে জড়িয়ে ধরা ছবি দেখাল। ওর আলো আলো মুখটার দিকে তাকিয়ে ভেতরটা পুড়ছিল বনানীর। কাঞ্জিভরম না ছাই, নকল সিল্ক যেন চেনে না সে!              
তারপর যেমন গত বছর মালিনীরা কাশ্মীর ঘুরে এসে ফেসবুকে কত ছবি দিল। সেই অবধি তবু ঠিক ছিল। তারপর ফোন করে বিয়ের দশ বছর পরে দ্বিতীয় হানিমুনের ন্যাকা ন্যাকা গল্প শোনানোর খুব দরকার ছিল কি? কিন্তু শোনাল তো? কেন শোনাবে না! বনানী যতই গল্প বানাক, ওরা তো জানে আসল সত্যটা! তাই বনানীকে সান্ত্বনা দেয় বটে, কিন্তু আসলে করুণা করে, সেটা কী আর বোঝে না বনানী! দুই কুড়ি হল বয়স, সংসারে কম তো আর দেখল না! 

।। দুই ।।
বাড়িতে পা দিয়েই অন্যান্য দিনের সঙ্গে পার্থক্যটা অনন্তর ইন্দ্রিয়ের র‌্যাডারে ধরা পড়ে গেল।   
‘কী ব্যাপার! কিছু হয়েছে নাকি! বেশ খুশি খুশি লাগছে তোমাকে!’ জুতো খুলতে খুলতে বলল সে।   
অনন্তকে দরজা খুলে দিয়েই রান্নাঘরে ঢুকেছিল বনানী। বাসনপত্রের সুললিত টুংটাং শব্দ ভেসে আসছে। মিনিট দশেকের মধ্যে চা-জলখাবার এনে টেবিলের উপর রাখল বনানী। অনন্তও জামা-কাপড় বদলে এসে বসল টেবিলে।   
‘শোনো না, আজ একটা কাণ্ড হয়েছে!’  
‘কী কাণ্ড?’ ভুরু কুঁচকে জিজ্ঞাসা করল অনন্ত। কিছু যে ঘটেইছে, সেটা বনানীর মুখ দেখেই বুঝেছে সে। তবে ঘটনাটা কতটা গুরুতর, সেটাই আপাতত ভাবনার ব্যাপার।   
বনানী একটা বড় নিঃশ্বাস নিল। তারপর বলল, ‘তোমার মনে আছে, গত সপ্তাহে হস্তশিল্প মেলায় কী একটা কার্ড দিয়েছিল একটা মেয়ে। নাম, ফোন নম্বর লিখে নিয়েছিল। সেই যে, তুমি জিজ্ঞাসা করলে এটা কী! মেয়েটা বলল লাকি ড্র হবে? মনে পড়ছে?’  
চায়ে চুমুক দিয়ে মাথা নাড়ল অনন্ত। মনে পড়েছে তার। জোর করে কার্ডটা গছিয়েছিল মেয়েটা।  
‘আজ ফোন এসেছিল,’ বলতে বলতে চোখ জ্বলজ্বল করে বনানীর। দ্রুত নিঃশ্বাস পড়তে থাকে। অনন্তর কাছে ঘনিয়ে এসে বলে, ‘লাকি ড্রয়ে জিতেছি আমরা। চার দিন, তিন রাতের দু’জনের গোয়া বেড়ানো সম্পূর্ণ ফ্রি। আরও কীসব উপহার নাকি দেবে ওরা। কালকের দিনটা ছুটি নিতে পারবে গো?’   

।। তিন ।।
অনন্ত বিস্মিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে তার দীর্ঘ সতেরো বছরের বিবাহিত জীবনের সঙ্গিনীটির দিকে। আজ চুলে খোঁপা করেনি বনানী। শ্যাম্পু করা খোলা চুল হাওয়ায় উড়ছে যেমন উড়ত সেই প্রথম প্রেমের দিনগুলিতে। বনানীর এমন ঝলমলে মুখ শেষ কবে দেখেছে সে মনে পড়ে না। শুধু বনানীই বা কেন, অনন্তর মতো সামান্য সুপারভাইজারের জীবনে লাকি ড্রয়ে জেতার মতো এমন অলৌকিক মুহূর্ত খুব বেশি আসে না।       
সুতরাং সিদ্ধান্তটা নিতে দেরি করল না অনন্ত। সকালে উঠে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নিয়েছে দু’জনে। ঝিমলি স্কুলে বেরিয়ে যেতেই তারাও বেরল। বনানী আজ বেশ সেজেছে। তার দিকে তাকিয়ে অনন্তর আজ হঠাৎই মনে হল, কম সুন্দরী তো ছিল না বনানী! বোনেদের মতো পয়সাওয়ালা ঘরে-বরে পড়লে হয়তো এত তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যেত না। তিনজনের সংসার হলেও খাটুনি তো কম যায় না সারাদিন।        
সদরে তালা লাগিয়ে রাস্তায় নামল দু’জনে। অন্যদিন হলে হয়তো বাসের জন্য অপেক্ষা করত। কিন্তু আজকের দিনটা অন্যরকম। বনানীকে খানিকটা চমকে দিয়েই রাস্তার অন্য প্রান্তে হলুদ ট্যাক্সিটাকে হাত তুলে দাঁড় করাল সে। বনানী একটু অবাক হয়ে অনন্তর দিকে তাকাল। অনন্তও না জানি কত বছর, নাকি কত যুগ পরে তার সতেরো বছর পুরোনো স্ত্রীর হাত ধরে রাস্তা পেরিয়ে ট্যাক্সির দরজা খুলে ধরল।   
ঠিকানা মিলিয়ে নির্দিষ্ট জায়গায় এসে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল দু’জনের। এমন হোটেল এতদিন টিভিতে, সিনেমায় দেখেছে তারা। কিন্তু বাস্তবে...! গতকাল থেকে তাদের স্বপ্নের রথের যে চাকা তরতরিয়ে ঘুরছিল, তার রাশে যেন হ্যাঁচকা টান পড়ল এবার। বনানী সন্ত্রস্ত মুখে স্বামীর দিকে তাকাল। অনন্তর মুখের রেখায় স্বাভাবিক গাম্ভীর্য ফিরে এসেছে।     
‘বাপ রে! এ কোথায় এলাম? কী গো, ফিরে যাবে?’ চাপা গলায় বলল বনানী। 
অনন্ত স্বামীসুলভ ধমকে উঠে উত্তর দিল, ‘এসে যখন পড়েইছি, দেখাই যাক। এখন ফিরে লাভ কী হবে! মাঝখান থেকে ছুটিটা নষ্ট হল।’  
হোটেলের বিশাল ব্যাঙ্কোয়েট হলে গোটা বিশেক গোল টেবিল পাতা। প্রতিটি টেবিলের উপর ধবধবে সাদা কাপড়ের ঢাকনা, মাঝে কাট গ্লাসের শৌখিন ফুলদানি। ত্রস্তপদে দু’জনে সেখানে ঢুকতেই তাদের অভ্যর্থনা করে একটি টেবিলে নিয়ে বসানো হল।  
‘স্যর, কফি খাবেন, নাকি চা? ম্যাডাম, কী খাবেন বলুন!’ পাটভাঙা দামি শার্টের কলারে প্রজাপতি টাই আঁটা এক ছোকরা এগিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করল।  
স্যর! ম্যাডাম! তড়িঘড়ি উঠে দাঁড়াল বনানী। বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে না যে তারা নির্ঘাত ভুল জায়গায় এসে পড়েছে। অনন্ত চোখের ইশারায় বসতে বলল তাকে। দোনোমনা করে আবার বসে পড়ল সে।  
ছোকরা বেশ চালাক। ওদের দ্বিধা বুঝতে পেরেই হয়তো আর কিছু জিজ্ঞাসা করল না। বরং ভেতরে গিয়ে একজন ওয়েটারের হাতে ট্রে নিয়ে ফিরে এল। দু’টি চীনা মাটির কাপে ধোঁয়া ওঠা কফি। সঙ্গে প্লেটে বড় বড় বাদামওয়ালা বিস্কুট। এগুলোকে কুকিজ বলে, জানে বনানী। সুঘ্রাণ এত দূর থেকেও নাকে আসছে। চোখ বুঝে গন্ধটুকু বুকে জড়িয়ে নিল বনানী।  
কফিতে চুমুক দিয়ে আশপাশে চোখ বোলাল অনন্ত। তাদের মতো আরও জনা পনেরো দম্পতি হাজির হয়েছে এতক্ষণে। সামনে ডায়াস বানানো রয়েছে। সেখানে এসে দাঁড়াল স্যুট টাই পরিহিত এক ভদ্রলোক। প্রথমেই প্রতি টেবিলে পৌঁছে গেল একটি করে চকচকে র‍্যাপিং পেপার জড়ানো বাক্স এবং একটি পাতলা বই। বনানী বাক্সটি নিজের দিকে টেনে নিল। খুলে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে খুব। কিন্তু বাকিরা কেউই খোলেনি দেখে কৌতূহলটা দমন করল সে। অনন্ত বইটা ওল্টাচ্ছে। পুরোটাই ইংরেজিতে লেখা। পাতায় পাতায় পাহাড়, সমুদ্র, বিভিন্ন হোটেলের ছবি। ভেতরের লেখাগুলি পড়ে খুব বেশি কিছু বোঝার মতো ইংরেজিতে দক্ষতা অনন্তর নেই। অতএব বই বন্ধ করে সেই স্যুট-টাইধারীর দিকে মন দিল।
ভদ্রলোক একটা ফাইলে চোখ বোলাচ্ছিলেন। এবার সেটা পাশে রেখে উপস্থিত দম্পতিদের দিকে তাকিয়ে হাসলেন। তারপর বলতে শুরু করলেন-  
‘আপনারা, আমাদের সম্মানীয় অতিথিরা এখানে এসে আমাদের সম্মানিত করেছেন। লাকি ড্রয়ের বিজেতা আপনারা। তাই আমাদের সংস্থার হোটেল অ্যান্ড রিসর্ট চেনের তরফ থেকে আপনাদের জন্য থাকছে দারুণ আকর্ষণীয় উপহার।...’
বনানী নড়েচড়ে বসল। আগ্রহী দৃষ্টিতে অনন্তর মুখের দিকে তাকাল। অনন্তও খুব মন দিয়ে শুনছে। পরবর্তী আধ ঘণ্টায় বাঁধাকপির পাতা ছাড়ানোর মতো করে পরতে পরতে উপহারের স্বরূপ উদ্ঘাটিত হল উপস্থিত দম্পতিদের সামনে। এই সংস্থার অসংখ্য হোটেল ও রিসর্ট ছড়িয়ে আছে সারা দেশ জুড়ে। তারা দম্পতিদের সামনে নিয়ে এসেছে এক অভাবনীয় সুযোগ। খুব সামান্য কিছু টাকা দিয়ে তাদের সংস্থার সদস্য হতে হবে। তাহলেই ভারতের যে কোনও স্থানে তাদের যে কোনও হোটেলে থাকা, খাওয়ার ক্ষেত্রে মিলবে বড়সড় ছাড়। এ ছাড়াও সদস্যপদ নিলে বিশেষ উপহার হিসেবে আগামী এক বছরের মধ্যে যে কোনও সময়ে তিন রাত চার দিনের জন্য গোয়ায় তাদের রিসর্টে স্বামী-স্ত্রীর থাকা সম্পূর্ণ ফ্রি।     
বনানী অনন্তর দিকে তাকাল। অনন্ত পাথরের মতো নিশ্চল।  
স্যুট-টাইধারী পুরোপুরি পেশাদার। এই পরিস্থিতির মুখোমুখি তাঁকে প্রায়ই হতে হয় দেখেই বোঝা যায়। স্মিতমুখে বরাভয় দিলেন তিনি। সমস্যার কিছু নেই। সমাগত অতিথিবৃন্দ এখনই কিছু টাকা দিয়ে সদস্যপদ গ্রহণ করলে টাকার পরিমাণ বেশ খানিকটা কমিয়ে দিতে পারবেন তিনি। সকলের কথা ভেবে যদি কোম্পানি মালিকের হাতে-পায়ে ধরতে হয় তাও ধরবেন। আর পুরোটা তো দিতে হচ্ছে না এখনই! বাকি টাকা ছয় মাসের কিস্তিতে দিলেই চলবে।     
বনানী ও অনন্তর মধ্যে চকিতে নীরব দৃষ্টি বিনিময় ঘটে গেল। অনন্ত দেখল, বনানীর চোখে নীরব আকুতি। বনানী দেখল, অনন্তের দৃষ্টিতে হতাশা।  
ঠিক তখনই বোমাটা ফাটালেন স্যুট-টাইধারী। টাকার অঙ্কটা অতি সামান্য। মাত্র দেড় লক্ষ টাকা। এখন পঁচাত্তর হাজার দিলেই চলবে। বাকিটা সেই ছয় মাসের কিস্তি। তার পরিবর্তে কত সুখের আঁকিবুকি, কত রঙিন আশা, কত স্বপ্ন বোনা...  
।। চার ।।
হোটেল থেকে বেরিয়ে এসে ফুটপাথে দাঁড়াল বনানী ও অনন্ত। বনানী তার শ্যাম্পু করা খোলা চুল জড়িয়ে হাতখোঁপা বেঁধে নিয়েছে। অনন্ত সেদিকে তাকাতে ফিকে হেসে বলল, ‘এত হাওয়া, ধুলো! চুল উড়ে মুখে এসে পড়ছে। মিছিমিছি জট পাকিয়ে যাবে।’     
দীর্ঘশ্বাস ফেলল অনন্ত। সত্যিই তো, রোজনামচার নিয়মের বাইরে বেহিসাবি পা ফেলা মানেই জীবনটাকে মিছিমিছি জট পাকিয়ে ফেলা, বনানীর চুলের মতো। তবু কে জানে কেন আজ বেহিসাবি হতে ইচ্ছে করছে অনন্তর। তাই হয়তো বলে বসল, ‘ঝিমলির স্কুল থেকে ফিরতে তো দেরি আছে এখনও। আজকের দিনটা আর বাড়ি ফিরে রান্নাবাড়ির হাঙ্গামা করতে হবে না। চল, বাইরেই খেয়ে নিই।’ 
বনানী অবাক হয়ে তাকাল তার সতেরো বছরের পুরনো স্বামীর মুখের দিকে। অনন্ত হাসার চেষ্টা করল, হয়তো বা সত্যিই হাসল। হাসল বনানীও। বলল, ‘কফি খেলাম তো! বিস্কুটটা কী সুন্দর না! আমি না ঝিমলির জন্য একটা বিস্কুট চুপিচুপি ব্যাগে ভরে নিয়েছি।’       
অন্য দিন হলে অনন্ত কী বলত কে জানে, আজ মৃদু হাসল।   
খাওয়া শেষ হলে রাস্তার পাশে সিগারেটের দোকান থেকে সিগারেট ধরাল অনন্ত। বনানীর জন্য মিঠে পাতা পান কিনল একটা। তারপর হঠাৎই বাঁ হাত বাড়িয়ে বনানীর খোপা খুলে পিঠে ছড়িয়ে দিল। চোখ বড় বড় করে খিলখিল করে হেসে উঠল বনানীও। 
ফেরার পথেও ট্যাক্সিই নিয়েছে অনন্ত, বনানীর আপত্তি সত্ত্বেও। দামি কুকিজের গন্ধ আলতো সুখ ছড়িয়ে দিচ্ছে ট্যাক্সির ভেতর। নিঃশ্বাসের সঙ্গে খানিকটা সুখ বুকে ভরে নিল বনানী। তারপর আদুরে বেড়ালের মতো স্বামীর কাছে সরে এসে বলল, ‘ইশ কতগুলো টাকা বাজে খরচ হয়ে গেল!’     
অনন্ত সিটে হেলান দিয়ে চোখ বুজে ওমটুকু মেখে নিল শরীরে, মনে। তারপর বলল, ‘তোমাকে বলা হয়নি। আমি গত সপ্তাহে পিএফ লোনের জন্য অ্যাপ্লাই করেছি। পুজোর সময় কোথাও ঘুরে আসব তিনজনে মিলে। কী, যাবে তো?’

5th     March,   2023
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ