বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
গল্পের পাতা
 

ছায়া শরীর
তরুণ চক্রবর্তী

‘ছুটি’ শব্দটার সর্বাঙ্গ জড়িয়ে থাকে আর একটা শব্দ ‘মুক্তি’। এমনিতে সপ্তাহান্তের ছুটির দিনটা যে সবারই প্রিয়, সে তো বলার অপেক্ষা রাখে না। সাধে কী আর কবি আক্ষেপ করেছিলেন, ‘রবিবারটা কেন মাগো অমন দেরি করে?’
টানা চারদিনের ছুটি ওই পুজোর সময় ছাড়া তো সচরাচর মেলে না। বড়দিনের সময় অবশ্য তেমন গায়ে গায়ে লাগা শনি-রবি মিলে গেলে বেশ বড় ছুটিই কপালে জুটে যায়। কিন্তু সে তো দৈবের হাতে। এবার শীতের ছুটিটাও পাওয়া গেল যেন ভাগ্য সুপ্রসন্ন বলেই। শনি-রবিটা যোগ হয়ে গেল যেন ফাউ হিসেবে। সুতরাং চালাও পানসি..., না বেলঘরিয়া নয়, কালিম্পং।
পরিচিত এক সরকারি আমলার দৌলতে বুকিং পাওয়া গেল সুবিখ্যাত মরগ্যান হাউসে। তবে দিন দুয়েকের জন্যেই। অবশেষে এক বুধে পা দিয়ে আসা গেল সেই ভূত বাংলোতেই। আসলে ভূত বাংলো নামেও কবে একদিন পরিচিত পেয়ে গেছে ব্রিটিশদের তৈরি এই বাংলো বাড়িটি। চারদিক এমনই নিঝুম যে, দিনের বেলাতেও অদ্ভুত একধরনের অনুভূতি হয়। হাওয়াও যেন কথা বলে যায় ফিসফিস করে। মরগ্যান হাউসের প্রাচীনতা আর চারপাশের আবহই কি এর ভূত বাংলো নামের উৎস? সে যাই হোক, ছোটবেলায় ফেলে আসা সেই রোমাঞ্চও যদি খানিকটা মেলে, সেও কি কম প্রাপ্তি! তাছাড়া ‘ডাক বাংলো’ শব্দটা শুনলেই মনে হয়, কেউ যেন ডাকছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই তো আসা।
ইতিহাস আর ঐতিহ্যের গন্ধমেঘে রিংকিং রোডের উপর দাঁড়িয়ে আছে অতীতের স্মৃতিবাহী দোতলা এই বাড়িখানি। ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখতে পাই, পাটের ব্যবসায়ী জর্জ মরগ্যান গত শতকের তিরিশের দশকে বানিয়েছিলেন তাঁর সাধের এই বাড়িটি। গরমকালে তো বটেই, শীতের দিনগুলোতেও তিনি ও তাঁর স্ত্রী নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া এবাড়ি ছেড়ে কোথাও আর যেতে চাইতেন না। মিসেস মরগ্যান তো নয়ই।
তবু সবকিছুই ছেড়ে যেতে হয় একদিন, সবাইকেই। মরগ্যান সাহেব আর তাঁর স্ত্রীকেও ছেড়ে যেতে হয়েছিল ইহলোক। পরে একসময় একটি ট্রাস্টি বোর্ডের হাতে মরগ্যান হাউসের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বর্তায়। তারপর আবার একদিন, এই বাড়িটির চাবি তুলে দেওয়া হয় সরকারের হাতে। ব্রিটিশরাও তখন চলে গিয়েছে এদেশ থেকে পাততাড়ি গুটিয়ে। স্বাধীনতাপ্রাপ্তির বছর পনেরো পরে, ভারত সরকার মরগ্যান হাউসকে একটি রেস্ট হাউস হিসেবে গড়ে তোলার বিশদ পরিকল্পনা তৈরি করে। তবে সে পরিকল্পনা আর কার্যকর হয়নি। ১৯৬৫ সালে পর্যটন দপ্তর বাড়িটি অধিগ্রহণ করে। দশ বছর পর এটির পরিচালন ভার পড়ে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন কর্পোরেশনের ওপর।
কত যে বিখ্যাত মানুষ এসেছেন এখানে— উত্তমকুমার, নার্গিস, কিশোরকুমার, রাজকুমার থেকে শুরু করে ফরাসি কিংবা আমেরিকার রাষ্ট্রদূতও। তাঁরা এখানে থেকেও গিয়েছেন। রিসেপশনে দর্শকদের মন্তব্য লেখার খাতা খুললেই মিলবে তাঁদের স্বাক্ষর আর মনের কথা।
কিন্তু ইতিহাস থাক কেতাবের পাতায় পাতায়। আমার ইচ্ছে এখন, নির্জন এই ভূতের বাড়ির আনাচে-কানাচে একটু উঁকি দিতে। অন্দরেরও অন্তর বলে তো একটা ব্যাপার থাকে। তাকে জানার স্বাদ বড় মধুর। নুন-তেল-লঙ্কা-পাঁচফোড়নের ঝাল মশলা দিয়ে রচনা পড়া এক জিনিস, আর নিজের চোখ দিয়ে, মন দিয়ে প্রত্যক্ষ করা— সে আর এক। সেইজন্যেই তো মানুষ গাঁটের কড়ি খরচ করে, সংসারের হাজার কাজের মধ্যে থেকে একটু সময় বের করে দেশ-দেশান্তরে ছুটে যেতে চায়। দু’দিনের জন্যে এমন বেরিয়ে পড়ার স্বাদ, বর্ণ, গন্ধ সবই আলাদা। সব মানুষের মধ্যেই বাস করে এই মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। কারও পূরণ হয়, কারও হয় না।
এসে পৌঁছেছি পড়ন্ত বেলায় আর তখন তো রাত নেমে এল। শীতের দিনে এখানে তো আরও ঠান্ডা। ইচ্ছে হলেও বাইরে বেরনো এখন ঠিক নয়। সমতলের মানুষদের এমন জায়গায় একটু সাবধানে থাকাই ভালো। তবে, কাচের জানলা দিয়ে তো দিব্যি সব দেখা যাচ্ছে। একটা পাল্লা খুলে একটু ফাঁক করতেই ভারী সুন্দর একটা মিষ্টি গন্ধ ভেসে এল হাওয়া। জুঁই কিংবা চামেলির কি?
হাওয়া বয়ে আনে যে কতকিছু। ফুলগন্ধের স্নিগ্ধতার সঙ্গে কত না বার্তা, কত অতীত, নাম-না-জানা কত দেশ, কাল, মানুষের গল্প কথা, সুখ-দুঃখের বারোমাস্যাও বা কখনও।
মনে মনে ভেবে নিই, সকালে ব্রেকফাস্টের পর বেশ ঘুরে ঘুরে দেখে নেওয়া যাবে চারপাশের গাছগাছালি আর পথশোভা। আবার একটা গন্ধ পেলাম, তবে আর কোমল তো নয়ই, বেশ একটু চড়াই বলতে হবে। যেমন এসেছিল তেমনই মিলিয়েও গেল হঠাৎই। গন্ধটা কিন্তু গেল না আমার মন থেকে। কোথায় যেন পড়েছিলাম অশুভ আত্মা যেখান দিয়ে চলে যায়, সেখানে কটু দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যায়। পুণ্যাত্মাদের ক্ষেত্রে হয় এর বিপরীত। তাহলে এ গন্ধটাও কি কোনও অতীতচারী হয়ে এল? কেমন যেন শিহরন লাগল মনে! আর একটা কারণও আছে। যেদিকে তাকিয়েছিলাম, সেদিকটায় খাঁজ কাটা একটা রাস্তা ঘুরে ঘুরে নেমে গিয়েছে নীচের দিকে। সেই রাস্তাটা ধরে যেন কেউ হাঁটতে হাঁটতে চলে গেল। এত রাতে? ঠিক যেন কোনও ছায়া। নাকি দেখার ভুল আমার? হয়তো বা। জানলাটা বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম বিছানায়। ঘুম আসতেও দেরি হল না অবশ্য।
ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের চমৎকার একটি নিদর্শন এই মরগ্যান হাউস। বাইরের আদলটা সেই কালটা ধরে রেখেছে এখনও। বহির্দেশ প্রাচীনতার স্মারক হলেও, ভেতরটা যে কী চমৎকার নবীন, যাঁরা এখানে এসেছেন তাঁরাই তা চাক্ষুষ করেছেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে চায়ের পেয়ালা হাতে চলে এসেছিলেন। চেয়ার টেবিলগুলো যেন অতিথির মুখ চেয়েই বসে থাকে। এমন মনোরম লনে বসে, শান্তি স্নিগ্ধ এই পাহাড়গুলির শোভা দেখতে দেখতে, কেমন আনমনা লাগে। ঘিঞ্জি কালিম্পং শহরটার অনতিদূরেই যে এমন একটা জায়গা থাকতে পারে, না এলে বিশ্বাস হতো না।
ব্রেকফাস্ট সেরে এক সময় নেমে এসেছিলাম বাইরে, একটু হেঁটে বেড়ানোর তাগিদে। তখনই জানলাম, জায়গাটা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন। নিরাপত্তার দিক থেকেও দেখছি জায়গাটা সুরক্ষিত একেবারে। সেনাবাহিনীর চমৎকার একটা ক্যান্টিনও আছে দেখছি। এক সময় ঢুকে পড়লাম। এক কাপ কফি অন্তত নেওয়া যেতেই পারে। কফি খেতে খেতে চোখে পড়ল বিরাট এলাকা জুড়ে একটা গলফ কোর্স। সেকালের সাহেবদেরই বানানো।
এসব জায়গা এমনই, শুধু চুপ করে বসে থাকলেই অনন্ত ঐশ্বর্য মেলে অন্তরে। ক্যান্টিনের এক কর্মীই জানালেন, সামনের চৌরাস্তার একদিকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই চোখে পড়বে, বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের একটি গুম্ফা। সেখানে আজ সন্ধ্যায় বিশেষ প্রার্থনা হবে, আজ যে পূর্ণিমা।
কোথাও আর যাইনি তখন। ঘরে ফিরে দুপুরের খাওয়া সেরে আবার গিয়ে বসেছিলাম লনে। ভারী সুন্দর সময় কেটে যায় লনে বসলে। প্রকৃতি এখানে অকৃপণ ভাবে মেলে ধরেছে তার সম্পদ। আহা, টানা বেশ কয়েকদিন যদি এখানে থেকে যাওয়া যেত! ভাবি, কেন যে মানুষ একে ভূত বাংলো বলে। ভূত বা অশরীরী কেউ যদি বাইরে থেকেও থাকে, বাংলোর ভেতরে থাকাটা তাদের পক্ষে বেশ বেমানান রকমই হবে।
রাতে মিলিটারি ক্যান্টিনের কর্মীটির কথাটা মনে পড়ল ‘আজ যে পূর্ণিমা।’ সন্ধের পর থেকেই দেখছি, জ্যোৎস্নায় ভেসে যাচ্ছে চরাচর। এখানে রাতের খাওয়া একটু আগেভাবেই সেরে নিতে হয়। বোধ হয় সাহেবি নিয়মই এখনও রক্ষা করা হয়। একে তো সাড়ে ন’টার মধ্যেই নৈশাহার সেরেছি, তার ওপর এমন চাঁদের আলো। কে এখন আর ঘুমতে যায়? বসে বসে জানলার কাচের ভেতর দিয়ে চাঁদের আলোয় ধোয়া এখানকার রাত দেখি বরং।
চোখের পাতা বুজিয়ে ফেললে এমন আলোকে অপমানই করা হবে। পূর্ণিমার চন্দ্রালোকে ঠকে যায় নাকি কাকপক্ষী, ভোরের আলো ফুটে উঠল ভেবে। কিন্তু কাক নয়, কোথাও একটা পেঁচা ডেকে উঠল বার দুয়েক। রাত-চরা কি না জানি না, অন্য কোনও এক পাখির ডাকও শোনা গেল। আর তারপর আবার সেই আগেকার স্তব্ধতা।
হিমে ভেজা এমন রাত আর এই পূর্ণিমা আগেও কত এসেছে। আসবেও আরও কত। কিন্তু প্রতিটি রাতেরই ভাষা যায় বদলে। বদলে যায় রাতের চরিত্রও। যার চোখে যেমনভাবে তা ধরা পড়ে, যার কানে যেমনভাবে বাজে তারস্বর। এই মুহূর্তেই তো পৃথিবীর কত দেশের কত না মানুষ এই একই ছবি দেখছে, একই রাতের আকাশের নীচে। কিন্তু সবই কি এক? ছোট এক একটা শব্দ কেমন সব বিচিত্র ভার আর ভাষার জন্ম দেয়। ফুটিয়ে তোলে ছবি, অন্ধকারের পর্দায়, জ্যোৎস্নার আলোক সম্পাদে। জ্যোৎস্না ব্যাপারটা যে কি মোহময় আর মায়াময়! চাঁদের আলো মানুষকে উদাসী, এমনকী পাগলও করে দেয়— এমন কথাও শুনেছি কখনও। এ জগতে আলো বড়ই বিস্ময়, হাজারো তার রং আর কারুকৃতি। আমাদের জীবনে তার প্রভাবও হয় সুদূর প্রসারী।
এই মুহূর্তে নির্জন এই বাংলোয় জ্যোৎস্নায় মাখামাখি হয়ে রাতটা কেমন যেন রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজের একখানা পৃষ্ঠার ছবি। সে ছবি কথা বলছে অচেনা, অজানা, ভিন দেশি ভাষায় যেন। হালকা হাওয়া-লাগা গাছের পাতা ছড়িয়ে দিচ্ছে ফিসফিস করা কীসব গোপন খবর। অনেকদূর থেকে একবার অন্তত ভেসে এসেছে নিশাচর শেয়ালের ডাক। মাথার ওপর দিয়ে বাতাস কাটতে কাটতে উঠে গেছে সারস জাতীয় দু-একটি পরিযায়ী পাখি হয়তো-বা। এরাতের স্বর আর পাঁচটা রাতের মতো নয় কোনও মতেই। কেমন যেন শিহরন লাগে মনে আবারও। চন্দ্রাহত হলাম কি তবে আমিও?
সংবিৎ ফিরে পেলাম আচমকাই। এ কী! একদিকের পাকদণ্ডী পথ দিয়ে গাউন-পরা এক মহিলা ধীর পায়ে নেমে গেলেন কোথায়! মূর্তিটি যে মহিলার সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তবে এত রাতে ওই পথ দিয়ে কেই-বা যেতে পারে। ওঁর কি ভয়-ডর বলে কিছু নেই অদ্ভুত ব্যাপার! যতদূর জানি, আজ রাতে আমি ছাড়া মরগ্যান হাউসে আর কোনও বোর্ডার নেই। শেষ বোর্ডারটি চলে গেছেন বিকেলেই। আগামীকাল সকালেই আসবেন সরকারি কয়েকজন আধিকারিক। ম্যানেজার থাকেন কিছুটা দূরে। মালি, কর্মচারী, রাঁধুনি আর গার্ড মিলিয়ে মাত্র চারজনই আছে এখন বাংলোয়। তাহলে যিনি ওই পথে নেমে গেলেন এই শীতের রাতে, তিনি কে?
একি সত্যিই কোনও ভৌতিক ব্যাপার? কাউকে বললেও তো বিশ্বাস করবে না। একবিংশ শতাব্দীতে এমন কথা ও কাহিনি কৌতুককর বা গাঁজাখুরিই মনে হবে। জানলাটা কখন যে খুলে দিয়েছিলাম আনমনে। এবার বন্ধ করে বিছানায় এসে শুয়ে পাড়ি। কিন্তু ঘুম কি আর আসে! সাত-পাঁচ ভাবতে থাকি। হয়তো-বা অবচেতন মনে কখনও এমন কিছু ছবির কোলাজ তৈরি হয়েই ছিল কোনওভাবে। একটু আগে দেখা ছায়াছবিটা তারই প্রকাশ হতেও পারে।
সেবারে কলকাতায় ফেরার পর নানা কাজে-কম্মে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়েছিল খুবই। দু’একবার ছোটখাট ছুটি ছাটায় কাছেপিঠের বকখালি আর দীঘা ছাড়া আর কোথাও যাওয়া হয়নি। তবে বদলির সুবাদেই এখন চলে আসতে হল নাগপুরে। বেশ কয়েকটা দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসা যাবে এবার আরামসে।নাগপুরে দেখছি বেশ নির্ঝঞ্ঝাট জীবনযাত্রা। কেউ কারও সাতে-পাঁচে থাকে না, যে যার নিজের কাজেই ব্যস্ত। প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভালো বলেই চারদিক যেমন পরিচ্ছন্ন, কাজের পরিবেশটাও সুন্দর। সবচেয়ে বড় কথা, অফিসে সহকর্মীরা খুব ভদ্র। যে কোনও প্রয়োজনে সাহায্য করতে যেন সদাপ্রস্তুত। এদিক থেকে আমি ভাগ্যবান, ভালো পোস্টিং পেয়েছি। কথায় বলে, ‘ঘরে আর কর্মস্থলে শান্তি থাকলে আর কী চাওয়ার থাকে।
অফিস থেকেই যে ফ্ল্যাটটিতে আমার থাকার ব্যবস্থা হয়েছে, সেটি যাকে বলে ওয়েল ফার্নিশড। ইচ্ছে হলে নিজেও রান্না করে নেওয়া যায়। তবে বাসা থেকে অফিসের দূরত্ব তো হাঁটাপথের, আর  অফিস ক্যান্টিনের খাবারটাও ভালো। দুপুরের খাওয়া সারি ওখানে বসেই। রাতের খাবারটা নিয়ে আসি হেঁটে গিয়ে। সকালে ব্রেকফাস্টটা শুধু বানিয়ে নিই। ঘরে মজুত রাখি দুধ, কলা, কফি, কর্নফ্লেক্স আর ব্রেড-বাটার।
সহকর্মী সদাশিব ডোংরের সঙ্গেই এ পর্যন্ত বন্ধুত্ব হয়েছে বেশি। সমবয়সি বলেই আরও জমেছে ভালো। ওর বাড়িতে একদিন মারাঠি খাবারের নিমন্ত্রণও রক্ষা করে এসেছি। ডোংরের বাড়িটা একটু দূরে হলেও স্কুটারে বেশিক্ষণ লাগে না। ওর স্কুটারের পেছনে বসেই সেদিন গিয়েছিলাম।
এক রবিবার সন্ধ্যায় ডোংরে এল আমার ফ্ল্যাটে। কফি আর স্যান্ডউইচ নিয়ে বসে গেলাম দু’জনে আড্ডায়। কথায় কথায় একসময় পরলোকতত্ত্ব প্রসঙ্গ উঠতে আমার মনে পড়ে গেল কালিম্পং-এর ভূত বাংলোর ছবিটা। ডোংরেকে বললাম, ‘আমি ওসবে কোনওদিনই বিশ্বাস করি না, তবে মরগ্যান হাউসে একবার এক ছায়াশরীর দেখেছিলাম। বুদ্ধি দিয়ে অবশ্য মেলাতে পারিনি ব্যাপারটাকে।’ ডোংরে বললেন, ‘দেখুন, যুক্তি দিয়ে কি আর সবকিছুকে মেলানো যায়? আপনি যদি আত্মা বলে কিছু আছে একথা বিশ্বাস করেন, তাহলে তো অশরীরীর অস্তিত্বেও বিশ্বাস করতে হয়।’ কথাটা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দিতে পারলাম না।
সেদিন আমার জন্যে অপেক্ষা করছিল একটি চমক। ডোংরেও একবার মরগ্যান হাউসে গিয়ে একই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। পরে ও জেনেছে, মিসেস মরগ্যান বিয়ের অল্পকাল পরেই ওই বাড়িতেই আত্মহত্যা করেছিলেন গলায় দড়ি দিয়ে। এ্যাঁ? তাহলে সেই ছায়াশরীর কি...!
অলঙ্করণ : সোমনাথ পাল

13th     November,   2022
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ