গল্পের পাতা

ছোট  গল্প
গোধূলি
শুচিস্মিতা দেব

মন্ট্রিয়লের গোধূলি-আকাশ বিদায়ী সূর্যের ম্লান আলোয় বিধুর। ঘড়ির কাঁটায় যদিও রাত ন’টা। কানাডার দিনরাতের গোলমেলে সময়ের হিসাবে এখনও তেমন রপ্ত হননি শুক্লার। তিনি মুগ্ধ চোখে দেখছিলেন অস্তগামী দিবাকরের কারসাজি... কমলা হলুদ রং ছিটিয়ে গুরুগম্ভীর সেন্ট লরেন্স নদীর বেগবান জলরাশিকে কেমন ছলেবলে চঞ্চল করে তুলছে যেন। কত শত অসংখ্য সাদা ভাসমান বোটের আলো জ্বলে উঠছে বন্দরের কোলে। সব কিছু কেমন অলীক লাগছে শুক্লার। কত দূরে চেনা পরিমণ্ডল ছেড়ে তিনি এক অন্য পৃথিবীতে এসে পড়েছেন। এখানে চারপাশে রঙিন মানুষের ঝলমলে উচ্ছ্বাস। ফুর্তি আর লাস্যময় আনন্দের ঘনঘটা ফুলঝুরির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। তিনি শুনেছিলেন বটে শীতল কানাডায় স্বল্পস্থায়ী ‘সামার’ নিয়ে দারুণ মাতামাতি করে লোকে। তবে এত হইচই, এত উচ্ছ্বাস তাঁর কল্পনার অতীত ছিল। এখন তাঁর মনে হচ্ছে চনমনে সুখের উষ্ণতায় মাতাল মন্ট্রিয়লের উইকএন্ডের বাতাস।
‘কী এত ভাবছেন?’
সুজনের প্রশ্নে শুক্লা চোখ ফিরিয়ে হাসেন। ‘ভাবছি কোথায়? দেখছি কেবল। রিয়ারা আইসক্রিম কিনতে গেছে কিন্তু অনেকক্ষণ হয়ে গেল।’
‘একটু ঘুরছে ফিরছে হয়তো।’ সুজন বিস্তৃত নদী দেখেন। শুক্লাকেও দেখেন একঝলক। তাঁর একমাত্র পুত্র সুদীপ আর পুত্রবধূ রিয়ার গৃহস্থালিতে নতুনতম সংযোজন শুক্লা, তাঁর বেয়ান। শিক্ষিতা গৃহবধূ। বয়স ষাট পার হলেও এখনও চেহারায় হাবেভাবে সজীব। কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কায় স্বামী দিবাকরকে হারিয়ে একমাত্র সন্তান রিয়ার কাছে আসতে বাধ্য হয়েছেন শুক্লা। যেমন সুজন নিজেও। ভদ্রমহিলা নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কাজটা যে সহজ নয়, তা সুজনের চেয়ে ভালো আর কে জানে। সুজনের মৃদু দীর্ঘশ্বাস পড়ে। করোনা মহামারী যে কত অবিশ্বাস্য ঘটনাই ঘটাল। তাঁর স্ত্রী চন্দনাও করোনার প্রথম ঢেউয়ে ভেসে গেলেন যখন, কী ভীষণ অসহায় হয়ে পড়েছিলেন তিনি। একটু বেশিই চন্দনা নির্ভর ছিলেন বলে হয়তো। শরীরও নড়বড়ে বরাবর। সত্তরেই তিনি এখন বেশ কাহিল। ছেলে কিছুতেই ছাড়ল না। কলকাতার পাট চুকিয়ে টরেন্টোতে ছেলেবউয়ের সংসারে আশ্রয় নিতেই হল তাই। 
অনুমতি নিয়ে সুজন সিগারেট ধরান। তামাকের ধোঁয়া শুক্লাকে আলতো জড়ায়। দিবাকর স্মোক করতেন না। তবে, সিগারেটের গন্ধটা ভালো লাগে শুক্লার। আড়চোখে সুজনের সিগারেট ধরা ডানহাতের দীর্ঘ আঙুল দেখে ফেলেন শুক্লা। সুদর্শন পুরুষটি বসে আছেন নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে। চশমার কাচের সামনের সুদৃশ্য ল্যাম্পপোস্টের আলো চমকাচ্ছে। গুনগুন করে একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে উঠলেন সুজন, ‘ওগো নদী আপনবেগে পাগলপারা...’
বড় ভালো গান করেন সুজন। দরাজ গলা। মানুষটা আসলে গান গাইতে ভালোবাসেন। শুক্লা কান পাতেন। তিনি নিজে গান শিখলেও সুজনের মতো যখন তখন গাইতে পারেন না। সুজন হঠাৎই গান থামিয়ে বলেন, ‘মন্ট্রিয়লে বেড়াতে এসে ভালোই হল। এখানকার ফরাসি কালচারটা দেখা গেল। ফরাসিরাই তো প্রথম কানাডায় আস্তানা গেড়েছিল। ওদের তৈরি কত সুন্দর সুন্দর চার্চ ছড়িয়ে আছে শহরময়।’
—সবই ঠিক। তবু কলকাতার কথা বড্ড মনে পড়ছে। আজ রথযাত্রা।
—প্রথম প্রথম মনে হবে। আমার এখন অনেকটা সয়ে গেছে। একমাত্র ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর সময় তো বুঝিনি এমন একটা সময় আসবে! এখন নিজেকে বোঝাই, পৃথিবীর উল্টো পিঠের বিত্তশালী দেশে এসে পড়েছি যখন, সেটাকেই এনজয় করতে হবে। কী পরিচ্ছন্ন দেশ, সুখসম্পদ। কত বৈভব! 
—এই বয়সে আবার নতুন করে বাঁচতে শিখতে হচ্ছে! তবু তো আপনি আছেন বলে সুবিধা। দুটো কথা বলে বাঁচি। নাহলে রিয়ারা যা ব্যস্ত!
সুজন স্মিত হাসেন।
—তবে রিয়া আপনার বড় ভালো মেয়ে। ওদের সংসারে কখনও আমাকে পর বলে ভাবেনি।
কথাটা সত্যি। বরং অতীতে সুজনকে মেয়ের সংসারে আশ্রয় নিতে দেখে শুক্লাই ভুরু কুঁচকেছিলেন। বিরক্ত হয়েছিলেন। দিবাকরের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করতেন। তখন কি জানতেন ভাগ্যদেবী অলক্ষ্যে হাসছেন। তাঁকেও এসে একদিন উঠতে হবে মেয়ে-জামাইয়ের আশ্রয়ে? দিবাকরকে হারিয়ে একা জীবনে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন শুক্লা। আত্মীয়স্বজনদের জোর কমে এসেছে। বন্ধুবান্ধবরা নিজবৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। বয়সের ভারে কলকাতার পরিচিত মহল ধুঁকছে। সুজনের মতো শারীরিকভাবে অসুস্থ তিনি হননি বটে। তবে অভ্যাস না থাকায় ব্যাঙ্ক, বাজারহাট সামলে উঠতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। ভরসা করার মতো একটা মানুষ নেই কোথাও। অনিশ্চয়তার আতঙ্কে দিশাহারা লাগত। কোনওমতে বছরখানেক চালিয়ে তার পর হাল ছাড়লেন। মেয়ে-জামাইয়ের পরামর্শ মতো ভাবলেন, দেখাই যাক না হয় একবার টরেন্টোতে গিয়ে। 
রিয়া অবশ্য প্রথম থেকেই বলে আসছে এখানেই পাকাপাকি ভাবে থাকার জন্য। শুক্লারই অস্বস্তি ছিল। সুজনের উপস্থিতি নিয়ে দোনোমনা ভাব তো ছিলই। মেয়ের শ্বশুরের সঙ্গে একই ছাদের তলায় থাকার কথা স্বপ্নেও ভেবেছেন কখনও? আসলে কলকাতায় থাকতে খুব বেশি ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠেনি বেয়াই-বেয়ানের সঙ্গে। একে তো রিয়া বিয়ের পরই টরেন্টোতে চলে এল। তার উপর দিবাকর ঘরকুনো সংসারী মানুষ ছিলেন বলে দু’পক্ষে তেমন যাতায়াত ছিল না। কলকাতার কিছু মানুষজন অসুবিধায় দেখাশোনা না করলেও  দু’চারটি মন্তব্য করতে ছাড়েনি! তবে প্রথমে বাধোবাধো ঠেকলেও এখন মনে হচ্ছে সুজন থাকায় শুক্লার সুবিধাই হচ্ছে। না হলে বড় সঙ্গীহীন সময় কাটত তাঁর। মেয়ে-জামাই এত ব্যস্ত! সুজনই সঙ্গী হয়ে উঠেছেন এখন। যেমন একজন তরকারি কাটেন আর অন্য জন রাঁধেন। শুক্লা ডিশওয়াশারে বাসন সাজান তো সুজন বাসন তুলে জায়গায় রাখেন। বিদেশে সংসারের পারিপাট্য  দু’জনের কাছেই নতুন। হোঁচট খান দু’জনেই। তাই নিয়ে নিজেরাই রঙ্গ-রসিকতা করেন। কাজের ফাঁকে দু’জনে কফি নিয়ে বসে কলকাতা, ছেলেবেলা বা কলেজ-জীবনের নানা রকমের গল্প করেন। একসঙ্গে বসে চা খেয়ে বিকেলে পার্কে হাঁটেন দু’জনে। হারিয়ে যাবার ভয়ে একা বেরন না শুক্লা। প্রাথমিক সঙ্কোচ কাটিয়ে উঠে সুজনের সঙ্গে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সহাবস্থানের সম্পর্ক বুঝি গড়ে উঠছে। একটুখানি শূন্যতা কি ফিকে হয়ে আসছে শুক্লার?
শুক্লা তাঁর হাতের সোনারচুড়ি নিয়ে খেলা করেন। গোধূলির নরম আলো খেলা করে তাঁর চোখের তারায়। একটা জাহাজ জল কেটে কেটে চলে যাচ্ছে। মোহনার পানে। সমুদ্রের পথে চলেছে হয়তো। আলতো হাসি ছুঁয়ে যায় শুক্লাকে।
—চন্দনা সেন্ট লরেন্স নদী দেখতে চেয়েছিল। ইতিহাসের ছাত্রী ছিল তো। কানাডার ইতিহাস পড়ে ফেলেছিল। আমাকে ম্যাপে নদীটা দেখিয়ে বলেছিল এটা হল ও দেশের বৃহত্তম আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। ইউরোপিয়ানরা এই নদীপথে উত্তর আমেরিকার ভিতরে ঢোকে। নদীতীরে ক্যুবেক প্রভিন্সে ফরাসি উপনিবেশ গড়ে ওঠে। এইখানেই ইন্দো-ফরাসি লড়ালড়ি শেষে ইংরেজের কায়েমি শাসন চালু হয়।
স্মৃতিচারণায় এমন সূক্ষ্ম হতাশা মিশে থাকে সুজনের গলায় যে শুক্লা আহত বোধ করেন। তাঁর মনে হয় আজ সুজনের পাশে তাঁর বসার কথা নয়। জায়গাটা চন্দনার। নিজেকে বেমানান লাগে একটু। দিবাকরের অভাব তাঁর মনে এই মুহূর্তে তেমন সোচ্চার হয়নি বলে হয়তো সামান্য অপরাধীও লাগে নিজেকে। শুক্লার চোখে সন্ধ্যার আঁধার ঘনিয়ে আসে। চন্দনার হাসি বন্দরের ঢেউয়ে ভেসে ভেসে যেন আলো-আঁধারে লুকোচুরি খেলে। শুক্লা নিজের উপর বিরক্ত হন। দেরি করছে বলে রিয়াদের উপর ক্ষুব্ধ হন। 
‘তা-ও ভাগ্যিস, আপনি আছেন পাশে,’ লাজুক স্বরে বলেন সুজন। ‘এক জন সমব্যথী—’
শুক্লা তাকান। সুজন হাওড়া ব্রিজের মতো দেখতে সেতুটার দিকে চেয়ে বলছেন। ‘প্রথম প্রথম এসে বড্ড একা লাগত জানেন।’
দপ করে শুক্লার চোখেমুখে আলো জ্বলে। হয়তো মস্ত নাগরদোলাটার জ্বলে ওঠা সারসার আলোরই প্রতিফলন ঘটে। কী যে হয় সঠিক বোঝেন না শুক্লা। অপ্রস্তুতবোধ করেন। এলোমেলো তাকান পিছনে। বুঝি মেয়ে-জামাই এলেই বাঁচেন। তাড়াতাড়ি বলেন,‘সত্যি বড্ড দেরি করছে ওরা—’
‘আচ্ছা, কোথায় গেল বলুন তো দুটিতে?’
ঘুম থেকে যেন জেগে উঠে বলেন সুজন। শুক্লা অবাক। ‘ও মা! ভুলে গেলেন? আইসক্রিম?’
সুজন লজ্জা পান। ‘ও হ্যাঁ। তাই তো...’ 
শুক্লা ভ্রু কুঁচকে কামিজের ভাঁজ সমান করেন। সুজনের ভুলে যাওয়া স্বভাবটা গত তিন-চার মাস অস্বাভাবিক রকম বেড়ে গেছে যেন। সেদিন চা খেয়ে খানিক বাদে বলেছিলেন, ‘আজ বিকেলে চা খাবেন না? আজ বরং আমিই বানাই।’
—সে কি? এই তো চা খেলেন। আপনি লনে জল দিচ্ছিলেন, আমি ডাকলুম!
—তাই? এ বাবা! বেমালুম ভুলে গেলাম?
এখনও লজ্জাই পেলেন সুজন। কেন যে এই ভুলে যাওয়া? অথচ অতীতকে তো ভুলতে পারেন না? চন্দনাকে তো স্পষ্টই মনে পড়ে? নিজের উপর বিরক্ত সুজন দেখেন রিয়ারা আসছে। আইসক্রিম খেতে খেতে ওরা চলেছে ওল্ড পোর্টের দিকে। সুজন বলে ওঠেন, ‘বাব্বা, আইসক্রিমেরই কত বাহার এদেশে! বাপের জন্মে এত দেখিনি।’
শুক্লা হুহু বাতাসে চুল আর কামিজ সামলে মাথা নাড়েন, ‘যা বলেছেন।’
রিয়া সামনে সুদীপের হাত জড়িয়ে আহ্লাদি হাসিতে ভেঙে পড়ল। শুক্লা সুস্বাদু আহারের সুখে মগ্ন হন। শুক্লা বুঝি এই মুহূর্তের বাঁচাকে আত্মস্থ করতে চেষ্টা করছেন। সুখকে নিজের মধ্যে স্থায়ীভাবে প্রোথিত করে ফেলার বাসনায় দৃঢ় পদক্ষেপে সুজনের পাশে পাশে হাঁটেন তিনি। 
ওল্ড পোর্টের পাথর বাঁধানো ঐতিহাসিক চত্বরে ফরাসি কায়দায় রাস্তার উপর সাজানো প্যাটিও দোকানের সারি। রঙিন ফুলে আর বিচিত্র আলোয় মার্জিত ছিমছাম পরিবেশ। দুশো বছরের পুরনো পাথুরে চত্বরে এখনও যেন অতীত থমকে আছে। অলিগলিতে সুভেনির, সুরা আর সুস্বাদু খাবারের প্রলোভন। এমন লাস্যময়ী সন্ধ্যা শুক্লা আগে দেখেননি। তাঁর মনে হল এই মানুষদের জীবনে কোনও দুঃখ নেই, ব্যথা নেই, শোক নেই। উল্লাসময় বর্ণিল এই জীবনে শুধুই নিজের জন্য বাঁচা। শুধুই নতুনকে খোঁজা। শুধুই শুরুর সঙ্গীত ছড়াচ্ছে এই উষ্ণ আবহে।
রিয়া আর সুদীপ এখন অনেকটা নিশ্চিন্ত। দুই বাবা-মা মিলেমিশে মানিয়ে আছে এই স্বস্তিতে দু’জনে হাত জড়িয়ে হাঁটছে। এই শহরের বাতাসের যৌবনের সুবাস তাদের ছুঁতে চাইছে। কতদিনের পরিচয় তাদের। একসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারিং, এমবিএ পড়া। কোভিডের ভয়াবহ দিনগুলিতে আছড়ে পড়া শোককে সামাল দেওয়া।
রিয়া-সুদীপ গল্প করতে করতে চলেছে। কত সুসজ্জিত মানুষ। বিচিত্র বেশ তাদের। বহু দিন পরে বুঝি এই মন্ট্রিয়ল ট্রিপটা তাদের টানটান স্নায়ুতন্ত্রের উপর জাদুর ছোঁয়া বুলিয়ে দিচ্ছে। শুক্লা দেখেন সুজন তার পাশে পাশে হাঁটছেন খানিক দিশাহারা ভঙ্গিতে। রথের মেলায় হারিয়ে যাওয়া কিশোর যেন। শুক্লার ইচ্ছে হয় সুজনের একটা হাত নিজের হাতে নিতে। মানুষটাকে দেখেশুনে রাখতে। তাঁর বেয়াই মানুষটি বড় ভালো বিদ্বান, সুপুরুষ, মরমি।
রাস্তার ধারে এক উলুরঝুলুর সাহেব বেহালা বাজাচ্ছে। মুগ্ধ শ্রোতারা ঘিরে আছে তাকে। বাদকের পাশে একজন টলটলে লাল ওয়াইনের ভরা পাত্র রেখে গেল। বাদকের হুঁশ নেই। সে সুরের স্রোতে ভেসে চলেছে। সেই সঙ্গে ভিড় করে দাঁড়ানো মানুষগুলিকেও টেনে নিয়ে যাচ্ছে সে। শুক্লার মনে হয় একটা পরিপূর্ণতার ছবি সুরে সুরে আঁকা চলেছে মন্ট্রিয়লের গোধূলি আকাশে।
 সুজন হঠাৎ ভিড়ের মধ্যে দু’টি চোখ দেখে বিস্মিত হয়ে পড়েছেন— এ তো চন্দনার চোখ! দীঘল দু’টি চোখে নীলাভ তারা! এমন চোখ তো কেবল তাঁর চন্দনারই ছিল। সম্মোহিতের মতো তিনি শুক্লাকে ফেলে সেই নীলনয়নার পিছু হাঁটতে থাকেন। এই গলি— ওই গলি— আলোর রোশনাইয়ে চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে সুজনের। পায়ে পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে মানুষ— হাসির ফুলঝুরি— চন্দনাকে কিছুতেই আর হারানো চলবে না। কেমন যেন গুলিয়ে যাচ্ছে সব সুজনের। কে তিনি? কী নাম তাঁর? কোথায় তাঁর বাড়ি? তিনি উদ্ভ্রান্তের মতো দু’টি নীল চোখের খোঁজে হাঁটতে থাকেন... হাঁটতে থাকেন।
সেন্ট লরেন্স নদীর ঘনকালো গভীর জল এখন চাঁদের আলো মেখে বিষণ্ণসুরে বয়ে যাচ্ছে। শুক্লা হঠাৎ দেখেন সুজন নেই। ভিড় থেকে দ্রুত বেরিয়ে সুজনকে খোঁজেন। সুজন কোথায় গেলেন? পাশেই তো ছিলেন। সুদীপ-রিয়া? ওই তো দূরে— এগিয়ে যাচ্ছে ওরা। তিনি ডাকার চেষ্টা করেন। গলা দিয়ে যেন আওয়াজ বেরচ্ছে না। ওরা ক্রমশ আরও দূরে চলে যাচ্ছে। কী করবেন বুঝতে পারছেন না। এক আকাশ অন্ধকার মাথার উপর নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন শুক্লা। একা। একদম একা। বুকের ভিতরে তোলপাড়। অতীত—ভবিষ্যৎ—রিয়া— সুদীপ— সুজন সব দূরে সরে যাচ্ছে। বেহালার সুর কেবলই ঝরে পড়ছে এখন কান্নার মতো। ভিজিয়ে তুলছে মন্ট্রিয়লের আকাশ। বাতাস।
অঙ্কন : সুব্রত মাজী
20Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা