বিকিকিনি

মিনি সুইৎজারল্যান্ড খাজিয়ার

ভারতের মিনি সুইৎজারল্যান্ড গিয়েছেন নাকি? হিমাচলপ্রদেশের ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম খা‌঩জিয়ার।  চোখের আরাম আর মনের শান্তি পেতে ঘুরে আসতে পারেন। বর্ণনায় কাকলি পাল বিশ্বাস।

রাত আটটা নাগাদ ডালহৌসি এসে পৌঁছেছি। পারদের কাঁটা জানান দিচ্ছে এক ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতে কাঁপতে কাঁপতে পৌঁছে গেলাম হোটেলে। পরের দিন থেকে আসল ভ্রমণ সূচি শুরু হবে। আর তাতে প্রথম গন্তব্য ভারতের মিনি সুইৎজারল্যান্ড, খাজিয়ার।  পথে যেতে যেতে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে সরু একটি রাস্তা। একদিকে সবুজ খাড়াই পাহাড় অন্যদিকে অতল খাদ। ওই একটি রাস্তাই যাতায়াতের জন্য বরাদ্দ। একটু ভয় লাগলেও বেশ রোমাঞ্চকর সেই যাত্রাপথ। পাহাড়ের ধার ঘেঁষা উঁচু পাইন গাছগুলো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেন বাড়িয়ে দিয়েছে। দূরে বরফে ঢাকা পাহাড়ের শোভাও অপূর্ব।
খাজিয়ার ভিউ পয়েন্ট 
খাজিয়ারের ভিউ পয়েন্টে ঢুকতে গেলে প্রথমেই একটি গেট পড়ে। গেটের মাথায় লেখা ‘ওয়েলকাম টু মিনি সুইৎজারল্যান্ড’। প্রথম দর্শনেই জুড়িয়ে গেল চোখ। পুরো জায়গাটা যেন সবুজ কার্পেটে মোড়া। চারধারে পাইন দেওদারের বন। এই ঢালু তৃণভূমিই খাজিয়ারের গর্ব। সবুজের পাশাপাশি বরফ ঘেরা পাহাড় একে অপরকে টেক্কা দিয়ে চলেছে। 
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম খাজিয়ার। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম খাজিয়ার লেক, নাগ টেম্পল, কালাটপ পাহাড়ে অবস্থিত বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, বিশালাকার শিব ইত্যাদি। এই জায়গাগুলো ঘিরে পর্যটকদের আগ্রহ খাজিয়ারের প্রাকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে মিশেছে।
খাজিয়ার লেকটির দৃশ্য ভারী মনোরম। চারপাশে থালার মতো ঘাসজমি লেকের সৌন্দর্য বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। আর আছে ঘন পাইন বন। লেকের মাঝে একটি দ্বীপ। সবুজ মখমলে মোড়া এই দ্বীপটিকে হঠাৎ দেখলে ভাসমান ভূমিখণ্ড বলে মনে হয়।
নাগ টেম্পল নির্মিত হয়েছিল বারো শতকে। সর্পদেবতা খাজিনাগকে উৎসর্গ করে বানানো হয় মন্দির। তবে সর্পদেবতার মন্দির হলেও দেবী হিড়িম্বা, শিব এবং পাণ্ডব ও কৌরবদের মূর্তিও রয়েছে।
দূর থেকে কালাটপ পাহাড়টিকে দেখতে অত্যন্ত সুন্দর লাগে। এই পাহাড়ে আছে নানা ধরনের গাছ ও বন্যপ্রাণী। হলুদ গলাযুক্ত মার্টেন, লাঙ্গুর, চিতাবাঘ, হরিণ, ভালুক, শেয়াল সহ নানা পশুর বাস এখানে। এই পাহাড়ি জঙ্গলটি ট্রেক করার জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা। তবে কালাটপ পাহাড়ের প্রধান আকর্ষণ সূর্যাস্ত। পাহাড়ের উপর থেকে সূর্যদেবকে আকাশে বিলীন হতে দেখাও এক বৈচিত্র্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা। আকাশের প্রতি পরতে যখন রং ছড়িয়ে পড়ে, তখন সূর্যের শেষ কিরণে স্নাত হয় এই পাহাড় চূড়া। অপার্থিব সেই রূপ।
খাজিয়ার লেকের কাছেই অবস্থিত গোল্ডেন দেবী টেম্পল। অত্যন্ত জনপ্রিয় এই মন্দির। দেওয়ালের কারুকাজ ও নকশা খুবই সুন্দর। তবে লোকে বোধহয় শান্তির টানে এই মন্দির দর্শনে আসে।
হিমাচলপ্রদেশের সব থেকে বড় শিবের মূর্তিটি এখানেই অবস্থিত। ব্রোঞ্জ দিয়ে মূর্তিটি বানানো হয়েছিল। সূর্যের আলো পড়লে মূর্তির সোনাঝরা সৌন্দর্য দেখার মতো। শীতকালে জায়গাটি বরফে ঢাকা থাকে। সেই সময় মূর্তি দর্শন করার সৌভাগ্য হলে মনে হয় কৈলাসে মহাদেব ধ্যানে বসেছেন।
কেন বলা হয় মিনি সুইৎজারল্যান্ড 
সুইৎজারল্যান্ডের ভাইস কাউন্সিলর উইলি ব্লেজার ভারতে এসেছিলেন একবার। দেশের বিভিন্ন জায়গার সঙ্গে খাজিয়ারেও গিয়েছিলেন তিনি। খাজিয়ারের সঙ্গে সুইৎজারল্যান্ডের প্রকৃতিগত মিল পেয়েছিলেন ব্লেজার। তিনিই খাজিয়ারের নাম দেন মিনি-সুইৎজারল্যান্ড। এরপর থেকেই হিমাচলপ্রদেশের এই ছোট্ট পাহাড়ি জনপদটি মিনি সুইৎজারল্যান্ড নামে পরিচিতি পায়। জুলাই ও আগস্ট মাস বাদ দিয়ে সারা বছরই খাজিয়ারের সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো। শীতকালে বরফে ঢেকে যায় চারদিক। সেই সৌন্দর্য অপার্থিব। তবে অন্যান্য সময় খাজিয়ারের সবুজ শোভাও নেহাত কম মনোরম নয়। কীভাবে যাবেন খাজিয়ার: ট্রেনে কলকাতা থেকে পাঠানকোট পৌঁছে সেখান থেকে সড়কপথে  ডালহৌসি পৌঁছানো যায়। বিমানে দিল্লি হয়ে সড়কপথে ডালহৌসি যাওয়া যায়। ডালহৌসি থেকে সড়কপথে খাজিয়ার মোটামুটি এক ঘণ্টার রাস্তা। 
ছবি: মাইইন্ডিয়া.কম-এর সৌজন্যে
4Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা