বিকিকিনি

ঘরোয়া পথে জব্দ
ডাস্ট অ্যালার্জি

ধুলো ও ময়লা এদের জীবনের ভিলেন। সামান্য ছোঁয়াচ লাগলেই শুরু সমস্যা। আপনার চারপাশেই রয়েছেন এমন অনেক মানুষ। ঘরোয়া কোন কোন হাতিয়ারে ভালো রাখবেন তাঁদের? লিখেছেন মনীষা মুখোপাধ্যায়।

ঘর ঝাড়ামোছা শুরু করলেই সহেলির হাঁচি-কাশি শুরু হয়। বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসার সময় ট্রেকারের পিছনে বসতে তো ভয়ই পায়। সারা রাত নাক দিয়ে জল পড়া, খুশখুশে কাশি, নাক জ্বালা লেগেই থাকে। বাড়াবাড়ি হলে তো শ্বাস নেওয়াই দায় হয়ে যায়! তখন ছুটতে হয় চেনা ডাক্তারবাবুর কাছে। 
এ সমস্যা সহেলির একার নয়। বরং আজকাল ঘরে ঘরে ডাস্ট অ্যালার্জিতে ভুগছেন অনেকে। বর্তমানে যে হারে ধুলো বালি ও ধোঁয়া পরিমাণ পরিবেশে বাড়ছে, তাতে ডাস্ট অ্যালার্জির রোগীবৃদ্ধি খুব অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। তাই ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার পাশাপাশি রোজনামচায় কিছু নিয়ম পুরে নিলে ডাস্ট অ্যালার্জির সঙ্গে লড়াই সহজ হয়। একটা সময় পর্যন্ত ধরে নেওয়া হতো, শীতেই এই অসুখের প্রকোপ বাড়ে। কিন্তু আজকাল দূষণের কারণে ডাস্ট অ্যালার্জি প্রায় সারা বছরেরই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পালমোনোলজিস্ট (ফুসফুস রোগ বিশেষজ্ঞ) ডাঃ অনির্বাণ নিয়োগী+র মতে, ‘ধুলোর মধ্যে থাকা জীবাণুকে বলে ডাস্ট মাইটস। এই সব পোকা আমাদের নাক ও মুখ দিয়ে প্রবেশ করে শ্বাসনালীর পথে আটকে যায়। এর ফলে নাকে অ্যালার্জি রাইনাইটিস হয়। এই ডাস্ট অ্যালার্জির কারণে অ্যালার্জি সাইনুসাইটিসও হতে পারে। সিওপিডি ও ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমার রোগীরা এই ডাস্ট অ্যালার্জির কারণে বেশি ভোগেন।’ 
এই অসুখে চিকিৎসক ও ওষুধ সবই প্রয়োজন। তবে তার সঙ্গে দরকার কিছু বাড়তি ঘরোয়া উপায়। নিত্যদিনের জীবনযাপনে কী কী নিয়ম মেনে চললে ডাস্ট অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণে থাকবে জানালেন বিশেষজ্ঞরা।
কার্পেট চলবে না: ঘর সাজানোর শখ যতই থাকুক, ডাস্ট অ্যালার্জি থাকলে রোগী যে ঘরে প্রায়ই ঢোকেন বা যে ঘরগুলো ব্যবহার করেন, সেসব ঘরে কার্পেটের ব্যবহার চলবে না। কার্পেটে ধুলো জমার শঙ্কা অনেক বেশি থাকে। এটি ঝাড়লেও প্রভূত ধুলো বেরয়। তাই কার্পেট ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।
ঝাড়ামোছা নয়: অবসর পেলেও ঘর ঝাড়ামোছা, ঝুল ঝাড়ার মতো কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। বাড়ির অন্য কোনও সদস্য এই কাজ করলেও সেখান থেকে দূরে থাকতে হবে। ইদানীং অ্যাপ থেকে লোক ভাড়া করেও এই কাজটি সারা যায়। তাই স্বহস্তে ঘর ঝাড়ামোছার কাজ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। একান্তই তা করতে হলে মাথা, মুখ ও নাক ঢেকে কাজ সারুন।
মাস্ক পরুন: শুধু বাড়িতে থাকলেই নয়, সমস্যা বাড়ে রাস্তার ধুলোবালি ও ধোঁয়া থেকেও। তাই অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন। সার্জিকাল মাস্ক হলে সবচেয়ে ভালো। করোনার সময় এই মাস্ক পরা আমরা অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে এসেছিলাম। বর্তমানে সেই অভ্যাসের পাট চুকিয়েছি অনেকেই। তবে এটি পরীক্ষিত সত্য যে মাস্ক পরলে ডাস্ট অ্যালার্জি প্রকোপ থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যায়।
বিছানার চাদর বদলান: ডাস্ট অ্যালার্জি থাকলে প্রতি পাঁচদিন-এক সপ্তাহ অন্তর বিছানার চাদর ও ওয়াড় পাল্টাতে হবে। বিছানার চাদরে ডাস্ট মাইটস খুব দ্রুত জন্ম নেয় ও বৃদ্ধি পায়। অনেক সময় দেখা যায়, রোগী খুব একটা ধুলোর মধ্যে যাননি, বাইরে বিশেষ বেরননি, তবু সমস্যা বাড়ছে। তখন বিছানার চাদর, বালিশের ওয়াড় থেকে এই মাইটস বাড়ছে বলে ধরে নেওয়া হয়। 
• ডায়েটে লেবু: লেবুর অ্যাসিড ডাস্ট মাইটস মারতে সাহায্য করে। এছাড়া লেবু প্রাকৃতিক ভাবে টক্সিন দূর করতে সক্ষম। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বেশি থাকায় এই ফল শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। তাই ডাস্ট অ্যালার্জি থাকলে লেবু রাখুন ডায়েটে।
• গ্রিন টি-তে চুমুক: ঠিক যে কারণে লেবু প্রয়োজন, অনেকটা সেই কারণেই সঙ্গে রাখুন গ্রিন টি। যে কোনও সংক্রমণ দমনে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গ্রিন টি খুব ভালো কাজে আসে। তাই ডাস্ট অ্যালার্জির রোগীরাও মাঝেমধ্যেই চুমুক দিন গ্রিন টি-তে। 
• ভেপারে স্বস্তি: যাঁদের ক্রনিক ঠান্ডা লাগা, নাক বন্ধ বা শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা থাকে, ভেপার তাঁদের অন্যতম সেরা হাতিয়ার। সুস্থ অবস্থাতেও প্রতিদিন অন্তত একবার ভেপার নিন। একটি পাত্রে গরম জল নিয়ে তার মধ্যে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল ফেলেও ভাপ (ভেপার) নিতে পারেন। ঠান্ডা লাগা অবস্থায় ভেপার নেওয়ার নিয়মে কিছুটা বদল আনুন। তখন একদিনে দুই থেকে তিনবার ভেপার নিন। ভেপার নেওয়ার পর কিছুক্ষণ ঠান্ডা জল খাওয়া, স্নান করা কিংবা এসি- পাখার সামনে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। 
পুদিনার গুণ:  এক কাপ গরম জলে এক মুঠো শুকনো পুদিনা পাতা দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। খানিকক্ষণ ঢাকা দিয়ে রাখুন। তার পর তা ছেঁকে পান করুন। কমবে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ও শ্বাসে অসুবিধের সমস্যা।
ঘিয়ের শরণ: আয়ুর্বেদ মতে, ঘি যে কোনও অ্যালার্জির সেরা পথ্য। বায়ুভাব কমিয়ে বলভাব বৃদ্ধি করার অন্যতম সেরা খাবার ঘি। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও যে কোনও সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘি-এর জুড়ি মেলা ভার। ঘি উষ্ণ খাবার। তাই শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রার ভারসাম্য রাখে। ডাস্ট অ্যালার্জির ক্ষেত্রেও পরিমাণ মতো ঘি রাখুন ডায়েটে। তবে এক একজনের চেহারা ও ওজন এক এক রকম হয়। তাই সারাদিনে কে কতটুকু ঘি খাবেন, তার পরামর্শ নিন ডায়েটেশিয়ানের কাছ থেকে।
ইনহেলার অবহেলা নয়: অ্যাজমা ও সিওপিডি-র রোগীদের কেউ কেউ একটু ভালো থাকলেই আর ওষুধ ও ইনহেলার ব্যবহার করেন না। চিকিৎসকের নির্দিষ্ট পরামর্শ মেনে ইনহেলার না নিলে বা ওষুধ খাওয়ায় ঢিলেমি দিলে কিন্তু যে কোনও সংক্রমণ ও অ্যালার্জি বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। তাই ডাস্ট অ্যালার্জি প্রতিরোধে চিকিৎসকের ধার্য করা নিয়ম মেনে চলুন। 
 
15Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা