অমৃতকথা

সঙ্ঘ

সঙ্ঘ-পরিচালনায়, বিশেষতঃ শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের ন্যায় বিশাল ধর্ম-সংস্থায় শুদ্ধানন্দজীর ন্যায় স্থিতধী পুরুষের সুদক্ষ নেতৃত্ব ভাবী সঙ্ঘনায়কগণের কাছে চিরদিনই স্মরণীয় ইতিহাস হইয়া থাকিবে। শুধু শ্রীরামকৃষ্ণ-সঙ্ঘের অভ্যন্তরেই নহে, বাহিরেও উচ্চ আদর্শের পতাকাবাহী তদানীন্তন কলিকাতার একাধিক ধর্মপ্রতিষ্ঠানকে তিনি নানাভাবে শক্তি ও প্রেরণা যোগাইতেন। কলিকাতার এমনই একটি প্রতিষ্ঠানের জনৈক সঞ্চালককে লেখা শুদ্ধানন্দজীর এক চিঠি হইতে কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃতির যোগ্য। শুদ্ধানন্দজীর পরিচালন-দক্ষতার সঙ্গে সঙ্গে তাঁহার অনন্যসাধারণ দূরদর্শিতা ও বিশ্লেষণ-শক্তির কিছু আভাস ইহাতে মিলিবে। বেলুড় মঠ হইতে তিনি ঐ পত্রে লিখিয়াছিলেনঃ “মূল কথা এই, ভিতরের প্রীতি, ভালবাসা প্রভৃতির অভাব হইলে religious society-র ভিতরও এই সব আইন-কানুন ভোটাভুটির ব্যাপার আসিয়া পড়ে। আসলে যে-কারণে লোকে কোন ধর্ম সমাজের সভ্য হয়, অর্থাৎ ‘আত্মনো মোক্ষার্থং জগদ্ধিতায় চ’ তাহা আর স্মরণ থাকে না। শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের সকলের ভিতর সদ্বুদ্ধি দিন এবং কামিনী, কাঞ্চন, প্রভুত্ব-স্পৃহা প্রভৃতির মোহ হইতে রক্ষা করুন।” শুদ্ধানন্দজীর এই সতর্কবাণী শুধু সেই যুগে নহে—সর্বকালের যে-কোনও ধর্ম-সংস্থার জন্যই সত্য।
শুদ্ধানন্দজীর স্বাস্থ্য কোনকালেই তত সবল ছিল না। দীর্ঘকাল একটানা পরিশ্রমে শরীর বড়ই ক্লান্ত হইয়া পড়িতেছিল। ১৯৩৪-এর মার্চ। অবশেষে অবসর মিলিল,—বিরজানন্দজী সাধারণ-সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করিলেন। কিছুদিন নিরিবিলিতে থাকিয়া সাধন-ভজনের জন্য মে মাসে হিমালয়ের কোলে শ্যামলাতালে গিয়াছিলেন—সঙ্গে বিরজানন্দজীও ছিলেন। বহুকাল ব্যবধানে দুই বন্ধু একান্তে একত্রবাস করার সুযোগ লাভ করিয়া কতই না আনন্দিত হইয়াছিলেন—কত পুরাতন স্মৃতির প্রসঙ্গ চলিত। কর্ম-কোলাহল হইতে দূরে আসিয়া শুদ্ধানন্দজীর মন স্বাভাবিকভাবেই অন্তর্জগতে বিচরণ করিতে লাগিল। এইভাবে ছয়মাসকাল উভয় গুরুভ্রাতা একত্রে বেশ শান্তিতে কাটাইয়াছেন।
1935-এর শেষভাগে, হিমালয় হইতে নামিবার পথে হরিদ্বারের সমীপবর্তী কনখলে অপর গুরুভ্রাতা কল্যাণানন্দের সাহচর্যেও কয়েকদিন তিনি অতিবাহিত করেন। কনখল সেবাশ্রমে স্বামিজীর এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে তখন যথোপযুক্ত মর্যাদায় আনুষ্ঠানিক সম্বর্ধনা জানানো হইয়াছিল। উল্লেখ বাহুল্য, স্বামী কল্যাণানন্দের উৎসাহ-উদ্যেগই ছিল উহার মূলে। শুদ্ধানন্দজীর উদ্দেশ্যে একটি মনোজ্ঞ অভিনন্দন-গীতিও কল্যাণানন্দ রচনা করাইয়াছিলেন। প্রত্যক্ষ-দ্রষ্টা জনৈক সাধুর ম্লান স্মৃতি হইতে সেই গীতের যে কয়টি ছত্র উদ্ধার করা গিয়াছে, তাহা এইঃ
“জ্ঞানীবর শুদ্ধচিত্ত কে তুমি সন্ন্যাসী!/ স্বামী-বরে অপরূপ মেধা/ বঙ্গ অনুবাদে করিলে সমাধা;—/ যথা তুমি রহ, জ্ঞানের প্রবাহ,—/ বিচারশীল স্বভাবে বিরাজ... ...।” ইত্যাদি।
উল্লিখিত স্মৃতি-প্রসঙ্গ হইতে আরও জানা যায় যে, আয়োজিত সেই সম্বর্ধনা-সভায় সাধু-ব্রহ্মচারী ও অনুরাগিবৃন্দের পক্ষ হইতে যে সুন্দর সুলিখিত মানপত্রখানি পঠিত হইয়াছিল, উহাও স্বামী কল্যাণানন্দের ভাবে ও ভাষাতে গ্রথিত হইয়াছিল। উক্ত সভায় ভাষণ দান কালে কল্যাণানন্দ আবেগভরে স্বয়ং বলিয়াছিলেনঃ “ইনি (স্বামী শুদ্ধানন্দ) আমাদের সবার মাথার মণি।” বাস্তবিকই বিবেকানন্দ সূত্রে গাঁথা মণিমালার মাঝে শুদ্ধানন্দ ছিলেন একটি অত্যুজ্জ্বল মণি!
স্বামী অব্জজানন্দের ‘স্বামীজীর পদপ্রান্তে’ থেকে
17Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা