অমৃতকথা

রাম

সমস্ত জলই যেমন সমুদ্র অভিমুখে যায়, তেমনি সমস্ত মানবাত্মাই ঈশ্বরের দিকে যায়। তিনি সকলের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। যিনি রামের অনবদ্য জীবন এবং রাম শব্দের অর্থ বোঝেন তাঁর কাছে ‘রাম’ শব্দটিই যথেষ্ট। সুতরাং এইভাবে একটি মাত্র শব্দ—যা দিব্যভাবের উদ্দীপক—সাধকের অধ্যাত্ম জীবনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে যায়। তখন সেই ব্যক্তি ঐ নামটি অবিরত জপে। ঐ নাম মনের অবচেতন স্তরে কাজ করে, মনের তলদেশ পর্যন্ত পবিত্র করে।
আমাদের দুর্বলতাগুলি পুরোপুরি মনের উপরিভাগে থাকে না। আমাদের অধিকাংশ দুর্বলতা মনের অবচেতন স্তরে বাস করে আর সেই জন্য ঐ স্তরটি পরিষ্কার করা দরকার। এই উদ্দেশ্যে একটি মাত্র শব্দ—যা পবিত্রতম প্রভুকে বোঝায়—জপ করা খুব ফলপ্রসূ। ভগবানের শক্তিশালী নাম ছাড়া আর কোন বিশেষ উপায় নাই যা দিয়ে মনের তলদেশ পর্যন্ত এত কার্যকরভাবে শুদ্ধ করা যায়। ভগবানের শক্তিশালী নাম ছাড়াও হিন্দু অধ্যাত্ম সংস্কৃতিতে আরও কিছু বীজমন্ত্র আছে। অর্থ জেনে ভক্তি-সহকারে সেই মন্ত্র জপ করলে দিব্যপ্রেম, দিব্যশক্তি, দিব্যজ্ঞান প্রভৃতির উদয় হয়। প্রতিটি শব্দই আন্তর-চৈতন্যরূপ। ভালবাসা শব্দটি শুধু ভা-ল-বা-সা—এই চারটি অক্ষরের সমুচ্চয় নয়, এর গভীরতর অর্থ আছে। “গাছ” শব্দটি দ্বারা আপনি চোখের সামনে ঠিক যেটি দেখছেন বা কানে শুনছেন তাই মাত্র বোঝায় না। আরও গভীরতর কিছু আছে। এই শব্দগুলির অর্থ জানা থাকলে তাদের কথা বললে বা শুনলে এক আন্তর-চৈতন্যের উদয় হয়। ভগবান্‌ বা যীশু বা কৃষ্ণ বা রাম বা রামকৃষ্ণের যথার্থ অর্থবোধ হলে এই নামের যেকোনটির উচ্চারণমাত্র সেই আন্তর-চৈতন্যের উদয় হবে।
ফলে ঐশব্দগুলির যেকোনটি কিছু ভক্তি-বিশ্বাস সহ অধ্যবসায়ের সঙ্গে জপ করলে তা মনের তলদেশ পর্যন্ত শুদ্ধ করে ভগবানের ভক্তি বৃদ্ধির সহায়ক হবে। শ্রীকৃষ্ণ একটি উদাহরণ দিয়েছেন—মনে কর, একতাল সোনা তোমার কাছে আনা হয়েছে। তুমি এটি পরিষ্কার করতে চাও। উপরে কোন ধূলো জমে থাকলে সেটি মুছে ফেল। তারপর দেখলে এর মধ্যে কিছু কাদা মাটি বা অন্যকিছু ঢুকে আছে। এখন তাহলে এটি গালাতে হবে। তার জন্য কোন দক্ষ স্বর্ণকারের কাছে তোমাকে যেতে হবে। সে তখন সোনার তালটি আগুনে ফেলে খাঁটি সোনা থেকে ভেজাল পৃথক্‌ করে দেবে। অনুরূপে শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, “ভগবানের নাম এই উদ্দেশ্য সাধন করে।” শুধু নৈতিক জীবন যাপন করে, সাধু-সঙ্গ করে, সৎ-কর্মের অনুশীলন করে মনের উপরিতলটি পরিষ্কার করা যায়। কিন্তু যতক্ষণ না অভিজ্ঞ গুরুর কাছ থেকে ভগবানের শক্তিশালী নাম মনের মধ্যে ঢুকছে, ততক্ষণ মনের অবচেতন স্তরের অপবিত্রতা দূর করা যায় না। আর এগুলি যতক্ষণ না অপসারিত হচ্ছে ততক্ষণ দৃঢ় মূল ভোগেচ্ছাও থেকে যায়। ভগবানে যথার্থ ভক্তি জন্মায় না। সেইজন্য হিন্দু আধ্যাত্মিক সংস্কৃতি মতে ভগবানের নাম জপ করা উচিত। এতে ক্রমশঃ মন পবিত্র হবে এবং যথার্থ ভক্তির উদয় হবে।
প্রার্থনার ঘনীভূত রূপ মন্ত্রজপ, ধ্যানের সঙ্গে সংযুক্ত। মন্ত্র জপের সঙ্গে সঙ্গে ভগবানের রূপ চিন্তা হয়। ভগবানের সেই রূপটিই আপনার মনে আসে যাঁর কথা আপনি ভাবেন বা যাঁকে পূজা করেন। ভগবানের মূর্ত-বিগ্রহ ছাড়া তাঁর সম্বন্ধে চিন্তা করা আমাদের পক্ষে বড়ই কষ্টকর। 
স্বামী সৎপ্রকাশানন্দের ‘ধ্যান সাধনা সিদ্ধি’ থেকে
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা