অমৃতকথা

মন্ত্র

মনকে সুখ-দুঃখ ভালমন্দ ইত্যাদির দিক থেকে সরিয়ে এনে মন্ত্রের আশ্রয়ে নিয়ে এস। ভাল সুখ লাভ ইত্যাদিকে শক্ত করে ধরতে যেও না, শক্ত করে ধরতে চেষ্টা কর মন্ত্রকে। কারণ সুখ লাভ ভাল ইত্যাদি অনিবার্য্যভাবে দুঃখ ক্ষতি মন্দ ইত্যাদিকে নিয়ে আসবেই এবং তোমাকে ভুগিয়ে মারবেই। অর্থাৎ তুমি মনের খপ্পরে পড়ো না, মনের পারে মন্ত্রের আশ্রয়ে চলে যাও। মনটিকে ক্রমশ শূন্য নিষ্ক্রিয় প্রতিক্রিয়াবর্জ্জিত করার চেষ্টা কর। এটিই হ’ল সাধনা এবং সিদ্ধি যুগপৎ উভয়ই। বেদবেদান্ত গীতা ইত্যাদি যেখানে যত সাধনা এবং সিদ্ধির কথা বলা হয়েছে—তার মূল কথা এই—পথের মধ্যেই লক্ষ্য নিহিত, তোমার যথার্থ সাধনপ্রয়াসের মধ্যে তোমার সিদ্ধি, means-এর মধ্যে end লুকিয়ে আছে। বেদান্ত বারবার মনটি উড়িয়ে দিতে পরামর্শ দিচ্ছেন। গীতা বারবার সুখ-দুঃখ লাভ-অলাভ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখবার কথা বলছেন।
এগুলি তো নেতিবাচক দিক। তবে ইতিবাচকটি কি? অর্থাৎ কাকে নিয়ে থাকব, কার আশ্রয়ে থাকব, কে আমাকে এই দোলাচল মনোবৃত্তি থেকে মুক্তি দেবে? জগতে এমন কিছু আছে কি? আছে, তিনি হলেন মন্ত্র—মন্ত্র স্বয়ম্ভূ স্বয়ংক্রিয় স্বয়ংসিদ্ধ স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি, যা অনাদিকাল থেকে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে বিরাজিত। যাঁর আশ্রয়ে আমার পূর্ব্বে লক্ষকোটি জীব আশ্রয়ে পেয়ে গেছে এবং আমার পরেও পাবে। আমি সেই মন্ত্রের নিশ্চিত আশ্রয়ে যাই না কেন। ঈশ্বর বা ব্রহ্মকে দেখতে জানতে বা শুনতে পাই না। কিন্তু বেদ ও তন্ত্রের কৃপায় মন্ত্র আমাদের কাছে এসেছে। আমরা সেই মন্ত্রের আশ্রয়ে নিজেদের সমর্পণ করি। ব্যক্তি নয়, দর্শন নয়, মতবাদ নয়, শুষ্ক ধর্ম্ম নয়—এদের কারও আশ্রয় নয়। এরা কেউ তোমাকে অন্তিমে রক্ষা করতে সমর্থ হবে না। সমর্থ হবে একমাত্র মন্ত্র।
অনাদিকাল ধরে মন্ত্র জগতে বিরাজিত, অনন্তকাল পর্যন্ত মন্ত্রই একমাত্র বিরাজিত থাকবে। এস বন্ধু, আমরা সেই পতিতপাবন তারকব্রহ্ম মহামন্ত্রের আশ্রয় গ্রহণ করি। তাঁরই সেবায় নিত্য রত হই, আমাদের সকল প্রয়াস তাঁকে আশ্রয় করেই গড়ে উঠুক। আমাদের সকল কৃতকার্যতা তাঁরই সেবায় নিরিখে নির্ণীত হ’ক। 
সুখ বলতে অনুভব কর মন্ত্র, লোকসান যখন হবে তখন মন্ত্রেরই লীলা বলে বোধ কর। মন্ত্রই জীবজগতে নিত্যক্রিয়াশীল—এটি উপলব্ধি করার জন্য সর্ব্বদা প্রয়াসী হও। সংকল্প থেকে সৃষ্টি। ব্রহ্মের সংকল্প হল মন্ত্র স্বয়ং। সুতরাং মন্ত্রকে ছেড়ে আমি ভিন্ন সঙ্কল্পের পিছনে ছুটে দ্বিচারিণী হব কেন? মন্ত্রের এই নিত্য স্মরণ-মননের নাম জপসাধনা। সর্বত্র মন্ত্রের নিত্য উপস্থিতি প্রত্যক্ষ করাই হল মন্ত্রদর্শন। সহস্র আনুকূল্য প্রতিকূলতার মধ্যে মন্ত্রের মহিমময় বোধে আস্থা এবং প্রতিষ্ঠার নাম মন্ত্রসিদ্ধি। মন্ত্রের জীবন্ত উপস্থিতির দিকে নজর না-রেখে মন্ত্রের যান্ত্রিক আবৃত্তি দ্বারা জপসাধনা হয় না, মন্ত্রকে সর্ব্বত্র সর্ব্বভূতে প্রত্যক্ষ ক্রিয়াশীল দেখা যায় না, মন্ত্রদর্শন হয় না। মন্ত্রের একনিষ্ঠ সাধনাই হল সর্ব্বসুখ সর্ব্বপ্রাপ্তি সর্ব্বসিদ্ধির মূল। সাধকের সংকল্প শুধু একটি মাত্রই—আমি যেন সর্ব্বদা মন্ত্রনিষ্ঠ থাকতে পারি। বাকি সকল সংকল্প সাধক সমূলে বিসর্জন দেন। মন্ত্র তাঁকে যেখানে নিয়ে যায় সেখানেই তিনি নির্ভয়ে নিঃসংকোচে মন্ত্রের হাত ধরে যাবেন। ‘ইন্দ্রিয়গ্রামকে বাহিরের শাসনে পঙ্গু বা অকর্ম্মণ্য, অক্ষম বা অব্যবহৃত বা অবমেলা-ক্লিষ্ট রাখিতে পারিলেই কাজ হইল না, তাহার চাইতে শতগুণ অধিক প্রয়োজনীয় হইতেছে মনকে নির্ম্মল, নিষ্কলুষ, নির্ব্বিকার, নির্লিপ্ত এবং অচঞ্চল রাখা। 
অযাচকের ‘জপ’ (২য় খণ্ড) থেকে
29d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মস্থলে জটিলকর্মে অনায়াস সাফল্য ও প্রশংসালাভ। আর্থিক দিকটি শুভ। ক্রীড়াস্থলে বিশেষ সাফল্য।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১০ টাকা৮৪.৮৪ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৪ টাকা১১২.১৯ টাকা
ইউরো৯১.৫৩ টাকা৯৪.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
14th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা