অমৃতকথা

অখণ্ডানন্দ

দুর্ভিক্ষের করালগ্রাসে মুর্শিদাবাদের কয়েকটি অঞ্চল তখন বিপর্যস্ত। বহরমপুর থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরবর্তী দাদপুর গ্রামে উপস্থিত হয়ে স্বামী অখণ্ডানন্দ একটি মুসলমান গরিব বালিকাকে ক্রন্দনরতা অবস্থায় দেখতে পেলেন। অনুসন্ধানে জানলেন তার একটি মাটির কলসি ভেঙে গিয়েছে—বাড়িতে গেলে তার মা সেজন্য তাকে বকাবকি করবে এবং বাটীতে দ্বিতীয় কলসি নেই যে, তা নিয়ে সে জল আনবে। বালিকার দুঃখের কাহিনি শুনে স্বামী অখণ্ডানন্দের হৃদয় দ্রবীভূত হলো। তাঁর কাছে তখন চার আনা মাত্র পয়সা ছিল। তিনি দু-পয়সা দিয়ে মুদির দোকান থেকে বালিকাকে একটি কলসি ও দু-পয়সার মুড়িমুড়কি কিনে দিলেন এবং ঐ স্থানেই বসে বিশ্রাম করতে লাগলেন। কিছুক্ষণ পরে বারো-তেরো জন চীর পরিহিতা শীর্ণকায়া বৃদ্ধা এসে তাঁকে ঘিরে ‘বাবা, কে তুমি? খাবার দিচ্ছ?’ বলে তাঁর কাছে কাতরস্বরে সাহায্য প্রার্থনা করতে লাগল। তিনি তৎক্ষণাৎ ওই মুদির কাছ থেকে তাঁর শেষ সম্বল তিন আনার মুড়িমুড়কি কিনে তাদের মধ্যে বিতরণ করলেন। এখন তিনি কপর্দকশূন্য। কিছুক্ষণ পরে সংবাদ পেলেন, একটি অনাথা বৃদ্ধা অনশনক্লিষ্টা ও রোগগ্রস্তা হয়ে ঐ গ্রামেরই এক স্থানে পড়ে আছে। সংবাদ পাওয়ামাত্র তিনি তৎক্ষণাৎ গিয়ে যথাশক্তি তার শুশ্রূষা করতে শুরু করলেন। আগেই বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে তখন দুর্ভিক্ষের তাণ্ডবলীলা চলছিল, কিন্তু সেই বার্তা স্বামী অখণ্ডানন্দ মোটেই জানতেন না। সেই সময় আলমবাজার মঠে ‘Indian Mirror’ ও ‘Educational Gazette’—এই দুখানি খবরের কাগজ এলেও ‘গ্রাম্যবার্তা’ পড়বার প্রবৃত্তি স্বামী অখণ্ডানন্দের আদৌ ছিল না। কাজেই তিনি নদীয়া ও মুর্শিদাবাদের দুর্ভিক্ষের প্রকোপ সম্বন্ধে কিছুই জানতেন না। সুতরাং এভাবে উপরি-উক্ত স্থানেই তিনি প্রথম দুর্ভিক্ষ দর্শন করলেন। কিন্তু ঐ স্থান থেকে মুর্শিদাবাদের দিকে যতই অগ্রসর হতে লাগলেন, ততই দুর্ভিক্ষের করাল থেকে করালতর মূর্তি তাঁর দৃষ্টিগোচর হতে লাগল। শেষে মহুলা গ্রামে উপস্থিত হয়ে আর অগ্রসর হতে পারলেন না। দুর্ভিক্ষগ্রস্তদের সেবা না করে এখান থেকে ফিরবেন না—এই দৃঢ় সঙ্কল্প তাঁর হলো। মহুলাতে দুর্ভিক্ষমোচন কার্যের আরম্ভ হলো ১৫ মে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে। এই কার্যে যাঁরা সাহায্য করেছিলেন তাঁদের মধ্যে তখনকার ম্যাজিস্ট্রেট ই. ভি. লেভিঞ্জ এবং ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নৃত্যগোপাল মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দুর্ভিক্ষনিবারণ কার্য চালাতে চালাতে স্বামী অখণ্ডানন্দ কয়েকটি অনাথ বালক ও বালিকার সংস্পর্শে আসেন এবং দু-একটি অনাথ বালককে পেয়ে তাদের সম্পূর্ণ প্রতিপালনের ভার নিতে বাধ্য হন। এইভাবে সেখানে একটি স্থায়ী অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠার সঙ্কল্প তাঁর হৃদয়ে জাগরিত হয়। ম্যাজিস্ট্রেট ই. ভি. লেভিঞ্জ মহোদয় ও পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট জি. দি. গ্রেহাম সাহেব ঐ জেলায় অনাথ বালক পেলেই অখণ্ডানন্দজীর কাছে পাঠানোর জন্য চতুর্দিকের থানায় পরোয়ানা জারি করবার আদেশ করেন। লেভিঞ্জ সাহেব স্বামী অখণ্ডানন্দকে অনাথ আশ্রম স্থাপনের জন্য নানাপ্রকারে উৎসাহিত করেন। 
সরসীলাল সরকারের ‘অখণ্ডানন্দজীর স্মৃতি’ থেকে
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মের ক্ষেত্রে ও ঘরে বাইরে বাধা থাকবে। কারও প্ররোচনায় যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সতর্ক হন। ...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.৯৭ টাকা৮৬.৭১ টাকা
পাউন্ড১০৫.৭০ টাকা১০৯.৪৩ টাকা
ইউরো৮৭.৫৩ টাকা৯০.৮৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা