অমৃতকথা

চোরের বৈকুণ্ঠ লাভ

বর্ষাকাল। আকাশ ভরা কালো মেঘ। থেকে থেকেই ঝম্‌ ঝম্‌ করে বৃষ্টি ঝরে পড়ছে। রাজপথে লোকজন নেই বললেই চলে। এরই মধ্যে এক চোর বেরিয়েছে চুরি করার উদ্দেশ্য নিয়ে। এমন দুর্যোগপূর্ণ দিনে, কেউ কি বেরোয়। চোরও ভেবেছে সে কথা। কিন্তু সে তো নিরুপায়। ঘরে কিছু নেই। ছেলেপুলেরা খাবে কি? তাই সব জেনে-শুনেই চোর বেরিয়েছে চুরি করতে। পথে বেরিয়ে চোর দেখে লোকজন একেবারেই নেই। রাস্তার কানাচে কানাচে থৈ থৈ করছে জল। এবার চোরের মাথায় এল অন্য ভাবনা। চোর ভাবল,—আজ কি আর চুরি করা যাবে। আজ যে লোকজন সব ঘরেই রয়েছে। তার মধ্যে তো চুরি করা সম্ভব নয়। একটা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে লোকটা ভাবছিল এ কথা। এ কথা মনে আসতেই সে ভগবানের কাছে বলতে লাগল, ‘ভগবান বৃষ্টিটা এবার থামিয়ে দাও। ক’ঘণ্টা ধরেই তো হলো। পৃথিবী তো জলে ভাসছে। আর তো বৃষ্টির প্রয়োজন নেই। আর তা ছাড়া তোমাকে তো লোকে দয়াময় বলে। তুমি তো জানো আমার ঘরে কতগুলো অপগণ্ড শিশু। ওরা আমার আশায়ই তো বসে আছে। বৃষ্টি না কমলে, সব লোকজন যে ঘরেই বসে থাকবে, তা হলে বাচ্চাগুলোর উপায় কি হবে? এই রকম ভাবতেই বৃষ্টিটা কিন্তু একটু ধরে এল। চোরটা মনে মনে খুশী হয়ে উঠল। ‘নাঃ, ভগবান আছেন।’ — বলে লোকটা একটু শান্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
বৃষ্টি ধরতেই সে এদিক ওদিক তাকাতে লাগল। উদ্দেশ্য, দেখা, যে পথে লোকজন বেরোয় কি না। কিন্তু না, ভগবান বৃষ্টি ধরালেও লোকদের মনে সুবুদ্ধির উদয় করালেন না। দু’চার জন ছাড়া বিশেষ কাউকেই পথে চলতে দেখা গেলো না। অগত্যা চোরটী কখনো বৃষ্টি, কখনো খরার মধ্যেই এদিক ওদিক ঘুরতে লাগল, সুযোগের অপেক্ষায়। কিন্তু হায়! সকাল গিয়ে দুপুর হ’ল, দুপুর গিয়ে বিকেল গড়াল, ক্রমে সন্ধ্যাও হয়ে এল, কিন্তু চুরি করার সুযোগ তার আর মিলল না। সারা দিন পথে পথে ঘোরাই তার সার হ’ল। ক্রমে সন্ধ্যা ঘনিয়ে এল। দিনমান গেছে অনাহারে অবিশ্রামে। তাই চোরটি ঘরে ফেরার উদ্দেশ্যে ঘরের পথে পা বাড়াল। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই আবার ঘনিয়ে উঠল দুর্যোগ। তীব্র বেগে বাতাস বইতে আরম্ভ করল, মুশল ধারায় নামল বৃষ্টি, আর আকাশ চীরে বিদ্যুৎ গর্জাতে লাগল, কানের পর্দা ফাটিয়ে দিয়ে কড়্‌কড়্‌ করে বাজ পড়তে লাগল। এ অবস্থায় কি আর বাইরে থাকা যায়। তাই চোরটী আশ্রয় খুঁজতে লাগল। এদিক ওদিক তাকাতেই সে দেখতে পেল অদূরেই একটি মন্দির। নিরুপায় হয়ে চোরটী দৌড়ে মন্দিরে গিয়ে আশ্রয় নিল।
তখন অন্ধকার বেশ ঘনিয়ে গেছে। রাতের অন্ধকারও। আর চতুর্দিকে সমানে চলছে ঘনঘোর দুর্যোগ।
লোকটীর সামনে আর কোন উপায়ই রইল না বাড়ী ফেরার। তাই মন্দিরেই তাকে রাত কাটাতে হবে।
কিন্তু মন্দিরের মেঝে তখন জলে জলময় হয়ে গেছে, বৃষ্টির ছাঁটে। চোরটী একটি কাপড় দিয়ে সব জল মুছে মুছে মন্দিরটি শুকাতে লাগল তার রাত্রিবাসের উদ্দেশ্যে। মন্দির মুছে ক্লান্ত চোরটী শুয়ে পড়ল। সারাদিনের ক্ষুধা, তৃষ্ণা ও ক্লান্তিতে সে ঘুমিয়ে পড়ল। শোবার আগে ঠাকুরের দিকে পা না পড়ে তা দেখতে গিয়ে সে দেখল মন্দিরটি বিষ্ণু-মন্দির।
লোকটী ঘুমিয়ে আছে। তখন মধ্যরাত্রি। হঠাৎ আকাশ চৌচির করে ফাটিয়ে দিয়ে নেমে এল বজ্র। লোকটী জাগতে গিয়েও জাগতে পারল না। ঘুমের মধ্যেই তার মৃত্যু ঘটল।
শ্রী শিবানন্দ সংকলিত ‘মায়ের মুখের গল্প শোনো’ থেকে
5d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায়...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.১৩ টাকা৮৫.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.২৭ টাকা১০৭.৯৮ টাকা
ইউরো৮৬.৪২ টাকা৮৯.৭৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা