অমৃতকথা

সদ্‌গুরু

পৃথিবীর প্রায় সব প্রধান ধর্মের মানুষ ভগবানের পথে চলার শুরুতেই সদ্‌গুরুর কাছে ভগবানের পবিত্র নাম স্মরণ-মননের উপদেশ তথা দীক্ষা লাভ করেন। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান—সব ধর্মেই দীক্ষা ব্যবস্থা আছে। সব ধর্মের ঈশ্বর-প্রেমিক মানুষ দীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে ঈশ্বরলাভের পথে যাত্রা শুরু করেন। সদ্‌গুরুর নিকট মন্ত্রদীক্ষা ছাড়া ঈশ্বরের পথে চলার চেষ্টা খরস্রোতা নদীতে মাঝিবিহীন নৌকার মতো। শ্রীরামচন্দ্র, শ্রীকৃষ্ণ, চৈতন্যদেব এবং শ্রীরামকৃষ্ণ সমস্ত অবতার পুরুষই দীক্ষা গ্রহণ করেছেন।
শ্রীরামকৃষ্ণ বলেছেন, “তাঁর নাম কর, তাঁর নামে সকলে দেহ-মন পবিত্র কর, জিহ্বাকে পবিত্র কর।... রোজ তাঁকে ডাকা অভ্যাস করতে হয়। একদিনে হয় না। রোজ ডাকতে ডাকতে ব্যাকুলতা আসে। শরীর এই আছে, এই নাই। তাড়াতাড়ি তাঁকে ডেকে নিতে হয়।” যীশু বলেছেন, “আমি সত্য সত্যই তোমাদের বলছি যে, বারি-সিঞ্চনদ্বারা আত্মায় অভিষিক্ত না হ’লে কেউ ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে পারে না।’ গুরু কর্ত্তৃক দীক্ষা এবং বারি-সিঞ্চনের দ্বারা খ্রিস্টীয় দীক্ষা একই বস্তু।”
দীক্ষা কী?
ভগবানকে ডাকতে হলে যে বিশেষ নাম বা শব্দ উচ্চারণ করে ভগবানকে ডাকা হয় সেই নামরূপ মন্ত্র গ্রহণই দীক্ষা। নাম এবং নামী অভেদ, অর্থাৎ ভগবান এবং তাঁর পবিত্র নাম এক। “যাহা ধীরে ধীরে কর্মের ক্ষয় করিয়া বিমল জ্ঞান (ঈশ্বরের) মনে আনিয়া দেয় তাহাকেই দীক্ষা বলে।” ‘দীক্ষা’ শব্দের অর্থ—কিছু আরম্ভ করবার সঙ্কল্প বা ব্রত-গ্রহণ। ইংরেজীতে দীক্ষাকে বলা হয় Initiation, প্রবর্তন বা সূচনা অর্থাৎ কোন বিশেষ পদ্ধতি অনুসরণ করা অথবা করানো।... দীক্ষা হলো গুরুনির্দিষ্ট পন্থা অনুসরণ করে ঐ মন্ত্র জপকরা।’
দীক্ষা প্রসঙ্গে অযাচক: “দীয়তে (দেওয়া) এবং ক্ষীয়তে (ক্ষয় পাওয়া) এই দুটি শব্দ সমন্বয়ে ‘দীক্ষা’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি। আলো দেওয়া এবং অন্ধকার ক্ষয়—এই হল সকল দীক্ষাকর্মের মূল ভাবনা। কুলার্ণবতন্ত্রে বলা হয়েছে—‘দীয়তে বিমলং জ্ঞানং ক্ষীয়তে কর্মবাসনা’ অর্থাৎ দীক্ষা হল তাই যাতে বিমল জ্ঞানের উৎপত্তি ঘটে ও জীবের কর্মবাসনা নিঃশেষে ক্ষয় পায়। ‘দীক্ষা মানে দয়াপূর্বক ঈক্ষণ’—পরমেশ্বরের অর্থাৎ সদ্‌গুরুর সস্নেহ কৃপাদৃষ্টিপাতের নাম দীক্ষা। “একটি সুনির্দ্দিষ্ট জীবনাদর্শের নিকটে নিজেকে নিঃশেষে নিবেদনের জন্য সঙ্কল্প গ্রহণের নাম দীক্ষা। সেই আদর্শটি কোনও দেবতা, মন্ত্র, মূর্তি, প্রতীক, ভাব, ব্যক্তি বা মতবাদকে অবলম্বন করে প্রকটিত হতে পারে। যিনি যে মত বা পথেই দীক্ষিত হয়ে থাকুন না কেন, কোন একটা উচ্চ লক্ষ্য বা আদর্শ সামনে না থাকলে তা যথার্থ দীক্ষা হয় না।
“জন্ম, মৃত্যু, বিবাহের মতনই দীক্ষা মানুষের জীবনের একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। অথবা বলা চলে জন্ম, মৃত্যু বিবাহের চেয়েও তা গুরুত্বপূর্ণ কারণ জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ জড় জীবজগতকে নিয়েই কারবার করে। দীক্ষার মধ্য দিয়ে জড় ছাড়িয়ে আমি চৈতন্যের অভিসারী হই অথবা জড়ের মধ্যে চৈতন্যকে খুঁজে পাই।... দীক্ষা শুধু নব জন্ম নয়, জন্ম-জন্মান্তরের মধ্যে এক ভিন্নতর জন্মের নিশানা।
প্রভাস দাশ ও দীপক কুমার সরকার সঙ্কলিত ‘দীক্ষার আগে ও পরে’ থেকে
16d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কাজকর্মের ক্ষেত্রে দিনটি বিশেষ শুভ। নতুন যোগাযোগ ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্র প্রস্তুত হতে পারে। বিদ্যায়...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৪.১৩ টাকা৮৫.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.২৭ টাকা১০৭.৯৮ টাকা
ইউরো৮৬.৪২ টাকা৮৯.৭৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা