অমৃতকথা

গান

মাস্টারমশাই (শ্রীম) অসম্ভব লাজুক ছিলেন। আমরা যখন মাস্টারমশাইয়ের কাছে প্রথম গেলুম, মাস্টারমশাই আমাদের গান গাইতে বললেন, গেয়েছিলুম। একা গাইতে অসুবিধে, তাই বললুম, ‘আমরা দুজনে একসঙ্গে গাইব।’ তা তিনি বললেন, ‘বেশ, তাই গাও।’ তখন আমরা গাইলুম, ‘পাতকী বলিয়ে কি গো পায়ে ঠেলা...।’ গান শুনে তিনি বলেছিলেন, ‘দেখ বাপু, ঠাকুর এত পাপী-তাপী ভালবাসতেন না, তোমরা আনন্দের গান গাও।’ তখন আমরা আরেকটা গান গেয়েছিলুম, কোন্‌ গানটা—এখন আর তা মনে নেই। আমি আর আত্মারামানন্দ গান গেয়েছিলুম। স্বামী আত্মারামানন্দ মঠে join করেছিলেন, তাঁর দেহত্যাগও হয়ে গেছে অনেক দিন।
দাক্ষিণাত্যে উচ্চবর্ণের লোকেরা একটা মন্দির বন্ধ করে দিল। কেন? না, ঠাকুর ম্লেচ্ছ হয়ে গেছেন। একজন সাধু ত্রিচূরে প্রসাদ নিতে গেছেন, সেখানে গিয়ে দেখেন, প্রসাদ যে দিচ্ছে সে হরিজন। এখন তাঁর ধর্মসঙ্কট! সমস্যা হলো, হরিজনের হাত থেকে প্রসাদ নিতেও পারছেন না, আবার ‘নেব না’ এ কথাও বলতে পারছেন না। সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলেন। প্রাচীন সংস্কার ভিতরে এমনভাবে বদ্ধমূল হয়ে আছে যে সহজে যায় না। সাধারণ লোকেদের এমন সংস্কার নেই, তারা হোটেলে খায়। আমাদের একজন সাধু ছিলেন, তিনি সিলেটের গোঁড়া বামুনের ছেলে। স্টিমারে করে যাচ্ছেন। খিদে লেগেছে খুব, সঙ্গে শুকনো খাবারও আছে, কিন্তু তিনি খেতে পারছেন না। স্টিমারে কিভাবে খাবেন তিনি? চারিদিকে নানান জাতের লোক, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে খেলে কাঠের পাটাতনে ছোঁয়াছুঁয়ি হয়ে যাবে যে! মহা সমস্যা। এক বন্ধুর কাছে শুনেছি, সেই সাধুটি তখন মাথা থেকে এক বুদ্ধি বের করলেন। সাধুটি একটু লাফ দেন আর লাফানো অবস্থাতেই মুখে শুকনো চিঁড়ে দেন, তারপর আবার একটু লাফ দেন, সেই লাফানো অবস্থাতেই মুখে মিষ্টি (বাতাসা) দেন, এর পর আরেকটু লাফ দেন আর মুখে জল দেন। এইভাবে তিনি তাঁর খিদের নিবৃত্তি করেছিলেন। এতে তো আর ছোঁয়াছুঁয়ি হলো না। একবার একটি মুচির ছেলে আমার পাশে খেতে বসেছে, প্রথমে তীব্র প্রতিক্রিয়া এল মনে, মুচির ছেলে আমার পাশে বসে খাচ্ছে? তখন স্বামীজীর কথা মনে করে ভাবলুম—স্বামীজীর আদর্শ মানি আর ওর পাশে বসে খেতে পারব না? তারপর সব ঠিক হয়ে গেল! কাশীতে যখন ছিলুম, তখন পুঁটিয়ার রানীর ছত্রে ভিক্ষা করতুম আর খেতুম। তারা ভক্ত। সমস্যা হলো, আমাদের কোথায় বসিয়ে খেতে দেবে? বামুনদের জন্য জায়গা আছে সেখানে দিতে পারে না, আমাদের জাত নেই, আমরা সন্ন্যাসী। কাঙালিদের যেখানে জায়গা আছে সেখানেও দিতে পারে না। তারপর বুদ্ধি করে ম্যানেজারের ঘরে জায়গা করে আমাদের খাওয়ালে। দক্ষিণেশ্বরে প্রথম প্রথম ঠাকুর অন্যের হাতে খেতেন না, নিজে রান্না করে খেতেন। পরে অবশ্য অন্যের হাতে খেতেন। আবার বলতেন—‘মা আমাকে কৈবর্তের অন্ন খাওয়ালি?’ আবার সেই ঠাকুরই কাঙালিরা খেয়ে গেছে, তাদের এঁটো থেকে মুখে দিচ্ছেন। তারপর আছে যে, অশুচি জিনিস খেলেই যদি জাতিচ্যুত হতো, তবে কুকুরও অশুচি জিনিস খায় আবার তত্ত্বজ্ঞ পুরুষও অশুচি জিনিস খান। তবে কুকুরে আর তত্ত্বজ্ঞ পুরুষে কি তফাত থাকত?
আগরতলায় বাবা আর ছেলে খুব কাজ করছে। তাই তো বলে—
‘বাপকা বেটা সিপাই কি ঘোড়া
কুছ্‌ না হো তো থোড়া থোড়া।’
ওরা এবার আগরতলায় খুব নতুনত্ব দেখিয়েছে। সমস্ত রাস্তা জুড়ে বকুল ফুল ছড়িয়ে দিয়েছিল, তার ওপর দিয়ে হেঁটে যাবার জন্য।
‘অমৃত সন্ধানের কথা’ (স্বামী ভূতেশানন্দজীর কথোপকথন ও ভাষণের সংকলন) থেকে
28d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

কর্মস্থলে জটিলকর্মে অনায়াস সাফল্য ও প্রশংসালাভ। আর্থিক দিকটি শুভ। ক্রীড়াস্থলে বিশেষ সাফল্য।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১০ টাকা৮৪.৮৪ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৪ টাকা১১২.১৯ টাকা
ইউরো৯১.৫৩ টাকা৯৪.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
14th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা