অমৃতকথা

শ্রীরামকৃষ্ণের শক্তি সাধনার নবমাত্রা

সাধারণের সামর্থ্য সীমার গন্ডি পেরিয়ে যাঁরা অসাধারণ বলয়ে প্রবেশাধিকার লাভ করেন এবং যাঁদের শক্তি সামর্থ্যের নূতন দিক-সীমা স্থাপন করে নিজেদের চিহ্নিত করে স্বমহিমায় সুদীর্ঘকাল মানব সমাজে ভাস্বর হয়ে থাকেন, এমন মহাপুরুষ ভারতীয় আধ্যাত্মিক সাধন সাম্রাজ্যে একাধিক। এই শ্রেণিভুক্ত মহাপুরুষদের মধ্যেও দিব্যমহিমায় ভাস্বর অতলান্ত সামর্থ্য প্রকাশে অসাধারণ মহাপুরুষদের মধ্যেও বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন এমন কোনও জ্যোতির তনয় যদি কেউ থেকে থাকেন তিনি শ্রীরামকৃষ্ণ বৈ অন্য কেউ নন। লীলা বৈচিত্রে, মাধুর্যে, জ্ঞানে ও প্রেমে সর্বতোভাবে অভিনব অনন্য এই মানুষ যিনি সাধারণের জন্য সাধারণ, অসাধারণের মধ্যে অসাধারণ। পুরুষের নিকট পুরুষ প্রধান তাঁর পৌরুষে, নারীর নিকট তিনি নারীপ্রতিম, জ্ঞানীর নিকট জ্ঞানাধীশ, সাধকের নিকট ভাস্বর দৃষ্টান্ত ও প্রেরণা পুরুষ, ত্যাগীকুলের মধ্যে ত্যাগসম্রাট, প্রেমিক মধ্যে রসঘন মূর্তি, সাধারণ দুর্বল মানুষের পথ প্রদর্শক তথা গন্ডীভাঙা দরদি বন্ধু, বিপথগামীর উদ্ধারকারী অথচ বিনয়াবনত সমদরদি, দরিদ্র আর্ত পীড়িতের সমব্যথী ত্রাণকর্তা।
শাশ্বত ও সনাতন বৈদিক সাধনার সমস্ত পথের অভিজ্ঞতা লাভের অভিনব দৃষ্টান্তস্বরূপ তিনি। বেদ, উপনিষদ, পুরাণ ও তন্ত্র মতের সমস্ত সাধনজ্ঞান তাঁর করায়ত্ত দ্বাদশ বর্ষের সাধনকালে। বেদ ও উপনিষদ প্রতিপাদ্য সত্য নির্গুণ ব্রহ্ম, ঈশ্বর বা সগুণ মায়াবাদ তত্ত্ব অতি সরলভাবে তিনি স্থাপন করে গেলেন নব দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গী সহায়ে। 
বেদান্ত মতে যে মায়া জ্ঞান-বিরোধী, সেই মায়াই তন্ত্রশাস্ত্র মতে অজ্ঞান-নাশক হয়ে জীবের ভক্তি-মুক্তি এবং পরমপুরুষার্থ লাভের উপায়। শাস্ত্রোক্ত শক্তি সাধন পন্থা কীভাবে নিত্যকার জীবন মায়ামুক্ত হবার পথ হতে পারে তার দৃষ্টান্ত তাঁর জীবন। তাঁর জীবন হতে দর্শন, আবার ফলিত-দর্শন উপমাস্থল স্বরূপ, যা তাঁর নিত্যকার লীলায় ও ব্যবহারে প্রকাশিত। তাঁর কথায় বলতে হয়, ‘‘যাঁর নিত্য, তাঁরই লীলা।’’ ব্রহ্ম ও ব্রহ্মময়ী কালী— নির্গুণ-সগুণ তথা সগুণ-নির্গুণ। ‘‘তিনি কি— মুখে বলা যায় না।’’
ভারতীয় আধ্যাত্মিক সাধনার ইতিহাসে শক্তিতত্ত্ব অতি প্রাচীন এবং বৈদিক কাল থেকে উপনিষদাদিতে বীজাকারে এই তত্ত্ব দেখা যায়। বেদান্ত সাধনার দুটি ধারা— একটি ঈশ্বরতত্ত্ব, যাঁকে অবলম্বন করে মায়াবাদ ও সৃষ্টিতত্ত্ব। পরবর্তীকালে পৌরাণিক যুগের মাধ্যমে এটি আরও পুষ্টিলাভ করে। পৌরাণিক যুগ থেকে অবতারবাদের সূত্রপাত। শক্তিতত্ত্বের বিকাশ সোপান হল তন্ত্রসাধনা। তাও অতি প্রাচীন। তন্ত্রসাধনার মাধ্যমে শক্তিতত্ত্ব বিকাশ তথা পরিপূর্ণতা লাভ করে। বেদান্তের অপর ধারাটি হচ্ছে জ্ঞানমার্গ যাতে মায়াবাদ জগৎ ব্যাখ্যার মূল তত্ত্বস্বরূপ। মায়া এখানে জ্ঞানবাধক—অনির্বচনীয়, ভাবরূপ, যৎকিঞ্চিৎ, জ্ঞানবিরোধী। তন্ত্র সাধনায় এই মায়াই জ্ঞানপ্রাপ্তির সহায়ক হয়ে ওঠে। 
অবতারতত্ত্বে শক্তি স্বীকৃত এবং অবতারলীলায় শক্তির বিকাশ। ‘সাম্যাবস্থা গুণোপাধিকা ব্রহ্মরূপিণী দেবী।’ অর্থাৎ দেবী হচ্ছেন ব্রহ্মস্বরূপিণী—যিনি সমরূপ সাম্যাবস্থায় সত্ত্ব, রজঃ ও তমোগুণের দ্বারা শর্তাবদ্ধ। দেবী ব্রহ্মের সঙ্গে সহাবস্থান করেন, দেবী যাবতীয় সৃষ্টির জননী। কোন মানুষ মুক্তির জন্য ভক্তিপূর্ণ হৃদয়ে প্রার্থনা করলে দেবীই তাকে সেই মহিমান্বিত অবস্থায় উত্তরণের পথ খুলে দেন।
স্বামী বামানন্দের ‘তোমাদের চৈতন্য হোক’ থেকে
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা