দক্ষিণবঙ্গ

‘সুড়ঙ্গে অক্সিজেনের অভাব টের পাই প্রথমদিনই, সে এক দমবন্ধ অবস্থা!’

প্রদীপ্ত দত্ত, আরামবাগ: ‘ধস নামার কিছু পরই সুড়ঙ্গে অক্সিজেনের অভাব টের পাচ্ছিলাম। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সে এক দমবন্ধ করা পরিবেশ!’ বুধবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফোনে সুড়ঙ্গ-যুদ্ধের এমন অভিজ্ঞতার কথা  বলছিলেন পুরশুড়ার সৌভিক পাখিরা। আর এক যুবক জয়দেব পরামানিকও চিকিৎসাধীন। এদিন তিনি মায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। দু’টি পরিবারের সবাই এখন মোটামুটি স্বস্তিতে। দুই ছেলের ফেরার অপেক্ষায় সকলেই। তার আগে আনন্দ ভাগ করে নিতে চান জয়দেবের বাবা তপন পরামানিক। তাঁর চা ও চপের দোকান রয়েছে। তিনি ঠিক করেছেন, ক’দিন পর দোকানে সারাদিন যাঁরাই আসবেন তাঁদের ফ্রিতে চা-চপ খাওয়াবেন। কারণ? ‘গ্রামবাসীরা প্রথম দিন থেকেই আমাদের সঙ্গে ছিলেন।’ আত্মতৃপ্তির সুর তপনের গলায়। 
উত্তরকাশীতে ধসের ঘটনাটি ঘটে দীপাবলির দিন। চারিদিকে আলোর রোসনাইয়ের মাঝে অন্ধকার নেমে আসে ৪১ জন শ্রমিকের জীবনে। সৌভিক ও জয়দেব তাঁদের মধ্যেই ছিলেন। কেমন ছিল প্রথম কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা। এদিন, বা঩ড়ির লোকদের দু’জনেই ফোনে শুনিয়েছেন সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। বলেছেন, ধসে পড়া সেই সুড়ঙ্গ ছিল যেন সাক্ষাৎ যমপুরি! কী করা উচিত, আর কী করা উচিত নয়, তা ভেবেই পাচ্ছিলেন না তাঁরা।  প্রথমদিন কমবেশি সকলের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ওয়াকিটকি বন্ধ হয়ে যায়। বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ ছিন্ন। দ্বিতীয়দিন পাইপ ঢুকিয়ে সুড়ঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ  করতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পরে পাইপের ভিতর দিয়ে ওয়ারেস, হরলিক্স, খেজুর, কিসমিস, পেস্তা পাঠানো শুরু হতে বেঁচে ওঠার প্রেরণা পান সকলেই। তারপরও মাঝে মঝে বাঁচার আশা ছেড়ে দিতেন। কারণ, যখনই উদ্ধারকাজ শুরু হতো তখনই কেঁপে কেঁপে উঠত সুড়ঙ্গ। এই বুঝি আবারও ধস নামল!  
উত্তরাখণ্ডের হাসপাতালের বেডে শুয়ে সৌভিক ফোনে পরিবারকে বলছিলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম সুড়ঙ্গ থেকে পাঁচ-ছয়দিনের মধ্যেই বেরিয়ে আসতে পারব। উদ্ধারের কাজ বারবার থমকে যাওয়ায় উৎকণ্ঠা বাড়ছিল। তবে, প্রথম দিনের পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়ঙ্কর। সুড়ঙ্গে অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছিল। দ্বিতীয়দিন ছয় ইঞ্চির পাইপ দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করতে শরীরে ক্ষমতা পাই। পরবর্তীতে ওয়ারেস, হরলিক্স, খেজুর, কাজুবাদাম, সহ বিভিন্ন ফল সরবরাহ করা হতো। বোতলবন্দি খিচুড়িও খেয়েছি। উদ্ধারকার্যে উপস্থিত স্যররা আমাদের নিয়মিত উজ্জ্বীবিত করতেন। মেশিন দিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু হলে ট্যানেল কেঁপে উঠত। নতুন করে ধস নামার ভয় পেতাম। রাত ও দিনের তফাৎ বুঝতাম না। ঘুটঘুটে অন্ধকার থেকে বেরিয়ে কখন বুক ভরে শ্বাস নেব, সেটা ঈশ্বরের কাছে বলতাম।’
জয়দেবের বাড়ি নিমডাঙ্গীতে। তিনিও এদিন তাঁর মায়ের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেছেন। মা তপতী পরামানিক বলছিলেন, ‘এদিন সকালে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। ও এখন হাসপাতালে। আতঙ্ক না কাটলেও অনেকটাই ভালো রয়েছে বলে জানিয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই ছেলে বাড়ি ফিরবে।’  ফিরলেই তপতীদেবীর ইচ্ছে ছেলেকে নিজে হাতে মাংস রান্না করে খাওয়াবেন।’ বাবা তাপস পরামানিক চান গ্রামবাসীদের ফ্রিতে চা-চপ খাওয়াতে। তাঁর কথায়, ‘আমরা যখন ভেঙে পড়ছিলাম তখন গ্রামের সবাই আশা জুগিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের বাদ দিয়ে আনন্দ করব না। আমার সামান্য ক্ষমতায় ফ্রিতে চপ-চা খাওয়াব।’
হরিণাখালির সৌভিক পাখিরার বাড়িতে এদিন সকাল থেকেই আত্মীয়স্বজন, পাড়া প্রতিবেশী থেকে রাজনৈতিক নেতাদের ভিড়। মা লক্ষ্মী পাখিরা বলছিলেন, ‘সকালে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। বাড়ি এলে ওর প্রিয় খাবার ফ্রায়েড রাইস, চিকেন ও ইলিশ মাছ রান্না করে খাওয়াব।’ বাড়িতে হাজির সাংসদ অপরুপা পোদ্দার বলেন, ‘এতদিন ধরে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম। এখন স্বস্তি পেয়েছি।’ 
8Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা