সংবাদদাতা, বনগাঁ: চতুষ্কোণ প্রেমের জেরে প্রথম পক্ষের স্বামীর হাতে আক্রান্ত স্ত্রী। ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দেহে একাধিক জায়গায় কোপানো হয়েছে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হন সন্ধ্যা দাস বর্তমানে বারাসত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গাইঘাটা থানার নট্টগ্রাম এলাকায়। অভিযুক্ত প্রথম পক্ষের স্বামী নেপাল দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। শনিবার তাকে আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচদিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নেপাল দাস সন্ধ্যার প্রথম পক্ষের স্বামী। সে মূলত জমির দালালি করে। এই পক্ষের এক ছেলে রয়েছে। সাংসারিক অশান্তির কারণে একটা সময় পরিবার ছেড়ে বেরিয়ে যান সন্ধ্যা। তবে সেই বেরিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে ছিল পরিতোষ দাসের ভূমিকা। শেষমেশ সন্ধ্যা পরিতোষকে বিয়ে করেন। কিন্তু দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গেও সম্পর্ক বেশিদিন টেকেনি। কারণ সন্ধ্যা ফের প্রাক্তন স্বামীর সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। পুরনো সম্পর্ক জিইয়ে রাখার কারণে বিষয়টি মেনে নেননি দ্বিতীয় স্বামী। এ নিয়ে প্রায়ই অশান্তি হতো। পরিতোষ তাঁকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁর সঙ্গে থাকতে হলে নেপালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে না। কিন্তু তারপরেও গোপনে মেলামেশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন সন্ধ্যা। একদিন এ নিয়ে চূড়ান্ত ঝামেলা হওয়ার পর তাঁকে ছেড়ে চলে যান পরিতোষ। স্ত্রী ফিরে যান তাঁর পুরনো স্বামীর কাছে। তাঁরা একসঙ্গে থাকতেও শুরু করেন। এরমধ্যে ফের এক প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সন্ধ্যা। এই সম্পর্ককে আবার মানতে চায়নি নেপাল। যা নিয়ে শুরু হয় নতুন করে টানাপোড়েন। জানা গিয়েছে, নেপাল ওই প্রতিবেশীকে এনিয়ে হুমকিও দিয়েছিল। কিন্তু প্রতিবেশী যুবককে ছাড়তে চাননি ওই মহিলা। এই আক্রোশেই সন্ধ্যাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়েছে নেপাল।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ গুমা থেকে কাজ সেরে ফিরছিলেন নেপাল ও সন্ধ্যা। তাঁরা বাড়ির কাছে একটি ফাঁকা মাঠের পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছিলেন, তখন স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করে নেপাল। স্থানীয়রাই রক্তাক্ত অবস্থায় সন্ধ্যা দাসকে নিয়ে আসেন হাবড়া হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বারাসত হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন। ছেলের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে অভিযুক্ত নেপাল দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস।