অমৃতকথা

মহাপুরুষ

জনৈক সন্ন্যাসী একদিন কথাপ্রসঙ্গে বলিয়াছেন, “১৯০৮ সালে যখন আমি প্রথম মঠে যোগদান করি তখন দেখেছি মহাপুরুষজী মঠের কাজকর্ম দেখতেন; অথচ সর্বদাই নিজের ভাবে বিভোর হয়ে থাকতেন। আর কি কঠোর জীবনই তাঁর ছিল! পরনে সামান্য হাঁটুপর্যন্ত কাপড়, খালি গা, খালি পা—ঐ ভাবে মঠে বেড়াতেন। কখনও গঙ্গার ধারে বেঞ্চের উপর এমন তন্ময় হয়ে বসে থাকতেন যে তাঁকে দেখে মনে হ’ত—বাইরের জগতের সঙ্গে তাঁর কোন সম্বন্ধই নেই। উদাস দৃষ্টি—সামনে দিয়ে লোক চলে যাচ্ছে অথচ তিনি যেন কাউকে দেখতেই পাচ্ছেন না।”
ভক্তবৃন্দের মধ্যে অনেকে মহাপুরুষজীর বৈরাগ্যময় জীবনকাহিনী মাত্র শুনিয়াছিলেন; এখন তাঁহার পূতসঙ্গ লাভ করিয়া তাঁহারা চমৎকৃত ও মুগ্ধ হইলেন। তখন ঠাকুরপূজা ও মঠের যাবতীয় কাজকর্ম দেখাশুনার ভার ছিল স্বামী প্রেমানন্দের উপর। তিনি অসুস্থ হইলে অথবা কর্মোপলক্ষে কলিকাতায় বা অন্যত্র গেলে মহাপুরুষজীই ঠাকুরপূজা ও মঠের অন্যান্য কাজকর্মের তত্ত্বাবধান করিতেন।
ঠাকুরের পূজা করা সম্বন্ধে তিনি পরবর্তীকালে একদিন বলিয়াছিলেন—“দেখ, আমরা যখন পূজো করতাম সে ছিল শুধু ভাবের পূজো। এত আড়ম্বর আমাদের কিছুই ছিল না। পূজো করতে বসে ভাবতাম, তিনি দক্ষিণেশ্বরে যেমন নিজ খাটটিতে বসে থাকতেন তেমনি প্রত্যক্ষভাবেই এখানেও রয়েছেন; সেই ভাবেই তাঁর পা দুখানি ধুইয়ে মুছিয়ে, তাঁকে স্নানাদি করিয়ে কাপড়-চোপড় পরান হ’ত। তারপর ফুলচন্দন দিয়ে সাজিয়ে ফলমূলমিষ্টান্নাদি খেতে দিতাম, পরে আবার অন্নব্যঞ্জনাদি নিবেদন ক’রে দিতাম। ...মন্ত্রতন্ত্র বিধিমত কিছু কিছু থাকলেও তার ওপর আমাদের তেমন ঝোঁক থাকত না এবং পূজোয় আড়ম্বরের লেশমাত্র ছিল না। তিনি আমাদের প্রাণের ঠাকুর, তিনি চান প্রাণের ভালবাসা, আত্মনিবেদন।”
জনৈক পাশ্চাত্ত্যদেশীয় সাধু প্রসঙ্গক্রমে একদিন বলিয়াছিলেন, “আমি যখন প্রথম আমেরিকা হ’তে আসি তখন একদিন মহাপুরুষ মহারাজ মঠের পুরানো চা-বারাণ্ডায় (পশ্চিমের বারাণ্ডায়) বসে গড়গড়ায় তামাক খাচ্ছিলেন। আর সব সাধুভক্তও সেখানে ছিলেন। আমায় তিনি ডেকে সস্নেহে পাশে বসালেন এবং গড়গড়ার শব্দ সম্বন্ধে কৌতুক ক’রে বললেন যে ওর ভেতর ব্যাঙ্‌ আছে। পরে কি ক’রে গড়গড়া টানতে হয় দেখিয়ে আমায় গড়গড়ায় তামাক খেতে দিলেন। ব্যাপারটা আমি তখন সাধারণভাবেই গ্রহণ করেছিলাম; কারণ আমাদের সমাজে ধূমপান একটা মামুলী ব্যাপার—তাতে গুরুলঘু-বিবেচনার আবশ্যক নেই। আর নিছক কৌতুক ছাড়া উহার অন্য কোন তাৎপর্য যে থাকতে পারে, তাও আমার তখন মনে হয়নি। কিন্তু পরে হিন্দুসমাজের সঙ্গে পরিচিত হয়ে বুঝলাম, মহাপুরুষজী সেদিন শুধু যে আমাদের পাশ্চাত্ত্যরীতি মেনে নিয়ে আমার প্রতি গভীর স্নেহ প্রদর্শন করেছিলেন তা নয়, ঐ একই গড়গড়াতে ধূমপান করিয়া তিনি আমাকে সমাজে তুলে নিয়েছিলেন।”
স্বামী অপূর্বানন্দের ‘মহাপুরুষ শিবানন্দ’ থেকে
1d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.০৬ টাকা১১১.৮৬ টাকা
ইউরো৮৯.৯১ টাকা৯৩.৩২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা