অমৃতকথা

দুর্জন

সৎসঙ্গে দিন কাটাবে
মানুষের জীবনচর্যায় করণীয়-অকরণীয় প্রসঙ্গে বলা হয়েছে:
“ত্যজ দুর্জনসংসর্গং ভজ সাধুসমাগম্‌।
কুরু পুণ্যমহোরাত্রং স্মর নিত্যমনিত্যতাম্‌।।”
“ত্যজ দুর্জনসংসর্গং”। দুর্জন মানুষের সান্নিধ্য পরিত্যাগ করা উচিত। দুর্জন কে? যে অন্যকে বিপথগামী করে, অসৎ বুদ্ধি যোগায় সে-ই ‘দুর্জন’। এখন ধর, কোন একজন বিশেষ মানুষ। সে হয়তো সকলের পক্ষে দুর্জন নাও হতে পারে। ধর ‘ক’ ‘খ’-এর পক্ষে দুর্জন, কিন্তু ‘গ’ এর পক্ষে দুর্জন নাও হতে পারে।
তোমরা হয়তো লক্ষ্য করেছ, প্রায় প্রতিটি মানুষের মধ্যে দোষগুণ দুই-ই আছে। ধর, ‘ক’ লোকটা ‘খ’ লোকটার কাছে দুর্জন। ধর, ‘ক’-এর গুণের মাত্রা ২০ ভাগ, দোষের মাত্রা ২৫ ভাগ। তাহলে তার মধ্যে দোষের মাত্রাগুণের মাত্রাকে ৫ ভাগ বেশী ছাড়িয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে ‘ক’ অবশ্যই ‘খ’ এর পক্ষে দুর্জন। আবার ধর ‘খ’ লোকটার মধ্যে গুণ ১৫ ভাগ, দোষ ১৩ ভাগ। তার মধ্যে গুণের মাত্রা ২ ভাগ বেশী। লোকটা অবশ্যই ভাল। কিন্তু তার মধ্যে ভাল গুণের মাত্রা ২ ভাগ, আর ‘ক’ এর মধ্যে অবগুণের মাত্রা ৫। সেক্ষেত্রে দোষের ভাগটার দিকেই পাল্লা ভারী। ‘ক’-এর সংস্পর্শে এসে ‘খ’-এর অবনতির সম্ভাবনা বেশী। কিন্তু ধর, ‘গ’-এর মধ্যে গুণের পরিমাণ ৩০ ভাগ, দোষের পরিমাণ ১৫ ভাগ। তাহলে গুণের দিকে পাল্লা ভারী ১৫ ভাগ। ‘ক’-এর মধ্যে দোষ মাত্র ৫ ভাগ, ‘গ’-এর মধ্যে গুণের পরিমাণ ১৫ ভাগ। সেক্ষেত্রে ‘ক’ ‘গ’ এর সংস্পর্শে এলে ‘ক’-এর তাতে উন্নতিই হবে। সেক্ষেত্রে ‘গ’ ‘ক’ এর পক্ষে দুর্জন নয়। তাই সে চাইলে ‘ক’-কে প্রগতিতে সাহায্য করতে পারে। আর এই জিনিসটা একেবারেই স্থায়ী নয়। মানুষে মানুষে পার্থক্যও হতে পারে। কাজেই ‘দুর্জন’ শব্দটা একান্তই আপেক্ষিক শব্দ। “ত্যজ দুর্জনসংসর্গং”—তোমারপক্ষে যে বা যারা দুর্জন তুমি অবশ্যই তার বা তাদের সাহচর্য এড়িয়ে চলবে। যাদের গড়পড়তা দোষের মাত্রা তোমার গড়পড়তা গুণের মাত্রাকেও ছাড়িয়ে গেছে তাদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবে। তাহলে তুমি করবেটা কী? দুর্জনের সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: “ভজ সাধুসমাগম্‌”। সৎ লোকেদের সাধু মানুষদের সঙ্গ কামনা করবে। এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে ‘সাধু’ কে? ‘সাধু’ শব্দের পরিভাষা হচ্ছে:
“প্রাণা যথাত্মনোঽভীষ্টাঃ ভূতানামপি তে তথা।
আত্মৌপম্যেন ভূতানাং দয়াং কুর্বন্তি সাধবঃ।।”
গেরুয়া বস্ত্র পরলেই মানুষ সাধু হয় না। মানুষ সাধু হয় অন্তর-সম্পদের দৌলতেই। মানুষকে সাধু হতে হবে মনে প্রাণে। হয়তো বাইরে গেরুয়া থাকতেও পারে, নাও পারে। প্রাচীন ভারতীয় বিধি অনুযায়ী যাঁদের ‘সাধু’ বলা হতো বা হয় তাঁরা সাধারণতঃ পুরোপুরি শ্বেত বস্ত্রই পরিধান করতেন, আর সন্ন্যাসীরা পরতেন পুরোপুরি গেরুয়া বস্ত্র। আরও প্রচলিত নিয়ম ছিল বা আছে এই যে সাধুরা নামের শেষে ব্যবহার করতেন ‘দাস’ পদবী। যেমন গোবর্দ্ধন দাস, যমুনা দাস, হরিদাস ইত্যাদি। নামের শেষে ‘দাস’ শব্দ ব্যবহার করাই রীবাজ। আর যাঁরা সন্ন্যাসী তাঁরা নামের শেষে ব্যবহার করতেন বা করেন ‘আনন্দ’ শব্দটা—যেমন বিবেকানন্দ, পরমানন্দ ইত্যাদি। সাধু ও সন্ন্যাসীতে এই হ’ল পার্থক্য।
শ্রীআনন্দমূর্ত্তির ‘আনন্দ বচনামৃতম্‌’ (৩য় খণ্ড) থেকে
15d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা