অমৃতকথা

ধ্যান

গভীর ধ্যানে বাহ্যজ্ঞান শূন্য হয়। ধ্যানে একাগ্রতা হয়, অন্য কিছু দেখাশুনা যায় না, এমন কি স্পর্শবোধ পর্য্যন্ত হয় না। গায়ের উপর দিয়ে যদি সাপ চলে যায় তাহলে যে ধ্যান করে সেও বুঝতে পারে না, সাপটাও জানতে পারে না। গভীর ধ্যানে মন বহির্ম্মুখ থাকে না, ইন্দ্রিয়ের কাজ সব বন্ধ হয়ে যায়; যেন বার বাড়ীতে কপাট পড়ল। রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ, ইন্দ্রিয়ের এই পাঁচটী বিষয় বাহিরে পড়ে থাকে। প্রথম প্রথম ধ্যানের সময় ঐ পাঁচটী বিষয় সামনে আসে। গভীর ধ্যানে আর সে সকল আসে না। ধ্যান এমন করবে যে তাঁতে একেবারে তন্ময় হয়ে যাবে—ডাইলিউট (Dilute) হয়ে যাবে; যখন ঠিক ধ্যান হয়, পাখীরা তার গায়ে বসে, কিন্তু সে টের পায় না। মা কালীর মন্দিরের নাটমন্দিরের আমি যখন বসে ধ্যান করতুম, তখন সেখানকার লোকেরা বোলতো ‘আপনার গায়ে চড়াই ও শালিক পাখী বসে খেলা করে।”
দেখ, আমি তখন ভাবতুম, ভগবান যেন সমুদ্রের জলের মত সব জায়গা পূর্ণ করে রয়েছেন, আর আমি যেন একটি মাছ—সেই সচ্চিদানন্দ সাগরে ডুবছি, ভাসছি, সাঁতার দিচ্ছি! ঠিক ধ্যান হলে এইটি সত্য সত্য দেখবে। আবার কখন মনে হোত আমি যেন একটী কুম্ভ, সেই জলে ডুবে রয়েছি, আর আমার ভিতরে বাহিরে সেই অখণ্ড সচ্চিদানন্দ পূর্ণ হয়ে রয়েছেন।
তাঁকে ধ্যান করতে হলে, প্রথমে তিনি উপাধি শূন্য, বাক্য মনের অতীত এই ভাবে তাঁকে ধ্যান করবার চেষ্টা করতে হয়। কিন্তু এ ধ্যানে সিদ্ধ হওয়া বড় কঠিন। তিনি যখন মানুষে অবতীর্ণ হন তখন ধ্যানের খুব সুবিধা। দেহটী আবরণ, যেন লণ্ঠনের ভিতর আলো জ্বলছে; অথবা সার্সির ভিতর বহুমূল্য জিনিষ দেখছি। তেমনি মানুষের ভিতর নারায়ণ রয়েছেন। নিরাকার ধ্যান বড় কঠিন। যা কিছু দেখছ শুনছ সব লীন হয়ে যাবে। কেবল স্ব-স্বরূপ চিন্তা করে ‘আমি কি’—‘আমি কি’ বলে শিব নাচেন। একে বলে ‘শিবযোগ’। নেতি নেতি করে জগৎ ছেড়ে স্ব-স্বরূপ চিন্তা। ধ্যানের সময় কপালে দৃষ্টি রাখতে হয়। আর এক আছে ‘বিষ্ণুযোগ’। নাসাগ্রে দৃষ্টি, অর্দ্ধেক জগতে, অর্দ্ধেক অন্তরে।
ধ্যান করবে মনে, কোণে, বনে। ঈশ্বর চিন্তা যত লোকে টের না পায়, ততই ভাল। যদি বল কোন্‌ মূর্ত্তির চিন্তা কোরবো; যাকে ভাল লাগে, যে ভাব ভাল লাগে, তারই ধ্যান করবে। একজনকে বা একটাকে পাকা করে ধর, তবে তো আঁট হবে। কিন্তু জানবে যে সব এক। কারু উপর বিদ্বেষ করতে নাই। শিব, কালী, হরি,—সবই একেরই ভিন্ন রূপ। যে এক করেছে সেই ধন্য। ‘বহিঃ শৈব, হৃদে কালী, মুখে হরিবোল।’ স্মরণ মনন থাকলেই হল। ইহাতেই ধ্যান হয়। পদ্মাসনে (সাধারণ ভাবে) বসে বাম করতলের উপর দক্ষিণ করপৃষ্ঠ রেখে উভয় হাত বক্ষে ধারণ করে চোখ বুজে সাকার ধ্যান করতে হয়। হৃদয় ডঙ্কাপেটা জায়গা। হৃদয়ে অথবা সহস্রারে ধ্যান হতে পারে। এগুলি আইনের ধ্যান—শাস্ত্রে আছে। কোথায় তিনি নাই? তবে যখন সব স্থানই ব্রহ্মময়, তখন তোমার যেখানে ইচ্ছা ধ্যান করতে পার।
কুমারকৃষ্ণ নন্দী সংকলিত ‘শ্রীরামকৃষ্ণ বাণী ও শাস্ত্রপ্রমাণ’ থেকে
13d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে বাধায় চিন্তা ও উদ্বেগ। বেকারদের ভালো প্রতিষ্ঠানে কর্মপ্রাপ্তির প্রবল যোগ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৩ টাকা৮৪.৯৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.০৬ টাকা১১১.৮৬ টাকা
ইউরো৮৯.৯১ টাকা৯৩.৩২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
17th     October,   2024
দিন পঞ্জিকা