অমৃতকথা

কৃষ্ণভক্ত

যিনি নিরন্তর কৃষ্ণভাবনায় ভাবিত, তাঁকে বলা হয় কৃষ্ণভক্ত। শ্রীল রূপ গোস্বামী বলেছেন যে, পূর্বে বর্ণিত শ্রীকৃষ্ণের সমস্ত দিব্য গুণগুলি কৃষ্ণভক্তের মধ্যেও দেখা যায়। কৃষ্ণভক্তদের দুটি ভাগে ভাগ করা যায়—যাঁরা দিব্যধামে প্রবেশ করার জন্য ভগবদ্ভক্তির সাধন করেন, এবং যাঁরা ইতিমধ্যেই ভগবদ্ভক্তির সিদ্ধ অবস্থা প্রাপ্ত হয়েছেন। যাঁর হৃদয়ে শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আসক্তির উদয় হয়েছে এবং জড়-জাগতিক অনর্থগুলি থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হতে না পারলেও যিনি ভগবৎ-ধামে প্রবেশ করার যোগ্যতা অর্জন করেছেন, তাঁকে সাধক বলা হয়। সাধক কথাটির অর্থ হচ্ছে যিনি কৃষ্ণভাবনা অনুশীলন করছেন। শ্রীমদ্ভাগবতের একাদশ স্কন্ধে এই ধরনের ভক্তের বর্ণনা রয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ভগবানের প্রতি যিনি অনন্য ভক্তিপরায়ণ, ভগবদ্ভক্তের প্রতি যিনি মৈত্রী ভাবাপন্ন, অজ্ঞানদের যিনি ভক্তিমার্গে নিয়ে এসে কৃপা করেন এবং ভগবৎ-বিদ্বেষীদের উপেক্ষা করেন, তিনিই হচ্ছেন ভগবদ্ভক্তির সাধক।
কেউ যখন ভগবানের লীলা শ্রবণ করে অশ্রু বিসর্জন করেন, তখন বুঝতে হবে যে, এই জলধারার প্রভাবে ভব-মহাদাবাগ্নি নির্বাপিত হয়ে যাবে। যাঁর শরীর পুলকিত ও রোমাঞ্চিত হয়, তিনি অচিরেই সিদ্ধিলাভ করবেন বলে বুঝতে হবে। সাধক-ভক্তের দৃষ্টান্ত হচ্ছেন শ্রীবিল্বমঙ্গল ঠাকুর। ভক্তিযোগ সাধন করার ফলে যাঁর কোন রকম পরিশ্রম অনুভব হয় না এবং যিনি সর্বদাই কৃষ্ণভাবনায় ভাবিত কার্যকলাপে যুক্ত থেকে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিরন্তর অপ্রাকৃত রস আস্বাদন করেন, তাঁকে বলা হয় সিদ্ধ। এই সিদ্ধ অবস্থা দুভাবে প্রাপ্ত হওয়া যায়—ভগবদ্ভক্তির সাধন দ্বারা ধীরে ধীরে এই স্তরে উন্নীত হওয়া যায়, এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে ভগবদ্ভক্তির বিধি-নিষেধের অনুশীলন না করেই শ্রীকৃষ্ণের অহৈতুকী কৃপার প্রভাবে এই সিদ্ধ অবস্থা প্রাপ্ত হওয়া যায়। শ্রীমদ্ভাগবতের তৃতীয় স্কন্ধে নিয়মিতভাবে ভগবদ্ভক্তির অনুশীলন করার ফলে ভক্তের সিদ্ধি লাভের বর্ণনা রয়েছে—“জড় অস্তিত্বের মিথ্যা অহঙ্কার থেকে মুক্ত পুরুষ অথবা উন্নত স্তরের যোগী বৈকুণ্ঠ নামক ভগবৎ-ধামে প্রবেশ করতে পারেন। এই ধরনের যোগী বৈধীভক্তির নিরন্তর আচরণ করে অত্যন্ত উৎফুল্ল হন এবং তার ফলে পরমেশ্বর ভগবানের বিশেষ কৃপা লাভ করেন। যমরাজ এই ধরনের ভক্তের কাছে যেতেও ভয় পান।” সুতরাং এর থেকে আমরা উত্তম ভক্তের শক্তি অনুমান করতে পারি, বিশেষ করে ভক্তরা যখন একত্রিত হয়ে পরমেশ্বর ভগবানের লীলা আলোচনা করেন। সেই সমস্ত ভক্তরা এমনভাবে তাঁদের অন্তরের অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন যে, আপনা থেকেই তাঁদের হৃদয় দিব্য আনন্দে দ্রবীভূত হয় এবং তাদের শরীরে নানা রকম দিব্য লক্ষণ দেখা যায়। যে মানুষ ভগবদ্ভক্তির পথে উন্নতি সাধনে অভিলাষী, তাকে এই ধরনের ভক্তদের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে।
প্রহ্লাদ মহারাজ বলেছেন যে, উত্তম ভক্তদের পদধূলির দ্বারা অভিষিক্ত না হলে ভক্তিমার্গে সিদ্ধিলাভ করা যায় না। মার্কণ্ডেয় ঋষির মতো তত্ত্বজ্ঞানী পুরুষেরাও বৈধীভক্তি অনুশীলন করে ভক্তিমার্গে সিদ্ধিলাভ করেছেন। 
শ্রীল রূপগোস্বামীর বিরচিত ‘ভক্তিরসামৃতসিন্ধু’ থেকে
14d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা