অমৃতকথা

শ্রীকৃষ্ণ

শ্রীভগবান ভক্তবাঞ্ছাকল্পতরু। যে তাঁকে যে ভাবে উপাসনা করে, যে রূপে পেতে চায়, তিনি তাকে সেইভাবেই তুষ্ট করেন—“যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্।” শ্রীরামকৃষ্ণলীলায় তাই দেখি ভক্ত আপন আপন ভাব অনুসারে তাঁর মাঝে কৃষ্ণ, কালী, খৃষ্ট বা শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য রূপের দর্শন পেয়ে ধন্য হয়েছেন। আবার শ্রীসত্যানন্দলীলায়ও ভক্ত তাঁকে যে রূপে চেয়েছে সেই রূপেই তিনি তাকে কৃপা করেছেন। কেউ তাঁকে দর্শন করেছেন রাম, কৃষ্ণ, রাধা, মহাপ্রভু বা গোপাল রূপে। কারও কাছে ধরা দিয়েছেন সাক্ষাৎ ভবতারিণী বা ত্রিনয়নী রূপে। আবার কেউ তাঁকে শ্রীরামকৃষ্ণ রূপে দর্শন ক’রে হয়েছেন ধন্যাতিধন্য। সত্যানন্দদেবের কৃপা লাভের পূর্বে রামকৃষ্ণদেব ছিলেন আমার মন প্রাণ জুড়ে। সংকল্প ছিল রামকৃষ্ণদেব ছাড়া কোথাও মাথা নোয়াব না। তাই প্রথম দিনই শ্রীশ্রীঠাকুর সত্যানন্দদেবকে শ্রীরামকৃষ্ণ রূপে দর্শন ক’রে বিস্ময় ও আনন্দ অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। কাজেই স্বাভাবিক ভাবেই ঠাকুরকে শ্রীরামকৃষ্ণ রূপে দর্শন করার জন্যই মন সব সময় ব্যাকুল হত। এ বিষয়ে যখনই অন্তরে তীব্র প্রার্থনা জাগতো ভক্তবাঞ্ছাকল্পতরু শ্রীসত্যানন্দ ঠিক তা পূরণ করতেন। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের যে ভাব বা রূপের দর্শন প্রার্থনা করতাম কৃপা ক’রে ঠাকুর ঠিক সেই রূপের দর্শন-আনন্দে ভরে দিতেন অন্তর। একদিন রাত্রে শ্রীঠাকুর গঙ্গার ধারের বারান্দায় বসে আছেন আপন আসনে। ভক্তরা তন্ময় হয়ে শুনছেন শ্রীমুখের অপূর্ব গীতাভাষ্য। আমার সেদিকে মন নেই। আমি তখন মনে মনে নিবিড় প্রার্থনা জানাচ্ছি—শ্রীরামকৃষ্ণদেব যে ভাবে ডান হাত আকাশে তুলে বাঁ হাত বুকের কাছে রেখে সমাধিস্থ হয়েছিলেন সেই অপূর্ব দিব্য রূপের দর্শনের। ঠাকুরের দিব্য আলোচনা চলছে। মাঝে মাঝে রঙ্গময় ঠাকুরের দিব্যরসিকতায় ভক্তদের মধ্যে হাসির রোল উঠছে। আমার সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই। প্রার্থনা ক’রে চলেছি, আর এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছি দেবতনুর দিকে—কখন্ প্রার্থনা মঞ্জুর হয়, রামকৃষ্ণদেবের ঐ সমাধিস্থ রূপের দর্শন হয়, এই আশায়। হঠাৎ এক সময় দেখি ঠাকুরের পিঠের কাপড়টা ধীরে ধীরে খসে যাচ্ছে। পরিধেয় গৈরিক বস্ত্রের একাংশ ঠাকুরের পিঠ ঢেকে বুকের সামনে ছড়িয়ে থাকতো। বস্ত্রের সেই অংশটি পড়ে যাচ্ছে। শ্রীঠাকুরের পৃষ্ঠ ও বক্ষদেশ সম্পূর্ণ অনাবৃত হয়ে গেল। আহা! অনাবৃত দেবতনুর সে কি অনিন্দ্যসুন্দর রূপ! আঁচলটা আবার গায়ে জড়িয়ে নেবার প্রয়াসে ডান হাত দিয়ে পেছন থেকে আঁচলটা ওপরের দিকে তুলে যে মুহূর্তে বুকের দিকে ঘোরালেন, বাঁ হাতখানিও সঙ্গে সঙ্গে আঁচলটি ধরবার জন্য বুকের কাছে এগিয়ে এল। আশ্চর্য্য! ঠিক সেই মুহূর্তেই আসনে উপবিষ্ট শ্রীঠাকুরের মধ্যে আমার কাঙ্ক্ষিত রামকৃষ্ণদেবের ঐ ভাবে সমাধিস্থ হওয়ার দিব্যাতিদিব্য রূপটির পেলাম দুর্লভ দর্শন, যা আজও আমার স্মৃতির মণিকোঠায় ধ্যানের এক স্বর্ণোজ্বল বস্তু হয়ে আছে।
এসব দর্শনের এক অদ্ভুত রহস্য ছিল। ভক্তদের সঙ্গে কথা বলছেন, কি অন্য কাজে ব্যস্ত আছেন, তারই মাঝে ভক্তবাঞ্ছাকল্পতরু সত্যানন্দ ভগবান কখন কাকে কী রূপে দর্শন দিয়ে কৃপা করছেন তা ভক্ত নিজে না প্রকাশ করলে কারও জানার উপায় ছিল না। প্রথমে এ রহস্য বুঝিনি। 
স্বামী হীরানন্দের ‘আলোর দেবতা সত্যানন্দ’ থেকে
19d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা