সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
বরুণ ধাওয়ান আলিয়া ভাট কুণাল খেমু
যে যাই বলুক, এখনও মাধুরী ম্যাজিকের জন্যে অপেক্ষায় থাকেন তাঁর অগণিত ভক্ত। আর আম আদমির অপেক্ষা থাকেন ব্লকবাস্টারের। কলঙ্ক, চলতি ইংরেজি বছরের অন্যতম মাল্টিস্টারার ছবি তো বটেই সেই সঙ্গে সঞ্জয় দত্ত ও মাধুরী দীক্ষিত ম্যাজিক জুটির ছবিও। বহু বছর বাদে তাঁরা আবার একসঙ্গে কাজ করলেন। ফলে সিনেমাপ্রেমীদের উৎসাহের খামতি ছিল না। আলিয়া ভাট, সোনাক্ষী সিনহা, মাধুরী দীক্ষিত— এই তিন নক্ষত্রের সঙ্গে সঞ্জয় দত্ত, বরুণ ধাওয়ান, আদিত্য রায় কাপুর ও কুণাল খেমুর মিলমিশে ‘কলঙ্ক’। ছবির শুরু একেবারে রূপকথার মতো। প্রতিটি ফ্রেম ঝকঝকে রঙিন – ঝুলনের খেলনা যেন। প্রথম অর্ধে পাঁচ মিনিট অন্তর গান। নাচ সহযোগে। এবার কিছু প্রশ্ন রাখা যাক। স্বাধীনতার আগে এমন অলীক ভারত কোথায় ছিল কে জানে – যেখানে অভিজাত হিন্দু পরিবারের বধূ সিঁদুর-মঙ্গলসূত্র-শাড়ি না পরে, ঘাগরা চোলি পরে ঘুরে বেড়াত। যেখানকার মুসলিম মহল্লায় চিৎকার-সহ রামভজনা হতো আর তর্কের খাতিরে (পড়ুন ছবির খাতিরে) যদি ধরেও নেওয়া হয়, সেই সময় হিন্দু-মুসলিম ঐক্য অটুট ছিল, তবে সেও মহল্লায় শুধুমাত্র একজনের (কুণাল খেমু) উস্কানিতে গোটা মুসলমান পাড়া ঝাঁপিয়ে পড়ল হিন্দু নিধনে? এদিকে একবারের জন্যও আজান শোনা গেল না ছবিতে। বারবার কেন যে ‘রাম রাম’ বাজল ব্যাকগ্রাউন্ডে, বোঝা গেল না। কোথা থেকে যেন উড়ে এল গরুড়। নাচের সিকোয়েন্সগুলোতে সম্ভবত সঞ্জয়লীলা বনসালির প্রভাব এড়াতে পারেননি পরিচালক অভিষেক বর্মন। তাই রং, বিশালত্ব, গ্র্যাঞ্জার দেখতে দেখতে হাই উঠতে থাকে একসময়। এবার একটু গল্পে ফিরি। বাংলা সিরিয়ালের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে ছবির প্লটের। অবৈধ সন্তান, অনাথ যুবকের প্রতিহিংসা, পতিতা মায়ের অসহায় মুখ, মৃত্যুপথযাত্রী স্ত্রী, জেদি যুবতী, দাম্ভিক পিতা, উচ্চশিক্ষিত পুত্র— সবই মজুত। তবে সবকিছুই বাস্তব থেকে বহুদূরে। যাঁরা, মাধুরী-সঞ্জয়কে দেখতে যাবেন, তাঁদের জেনে রাখা ভালো, দু’জনকে একটিই দৃশ্যে, এক ফ্রেমে পাওয়া যাবে এবং চেহারা, অ্যাপিয়ারেন্স সবেতেই আপনাদের মনে পড়তে বাধ্য, ‘জীবন চলে গেছে কুড়ি কুড়ি বছরের পর’। মাধুরী অসম্ভব শীর্ণ। বয়সের করাল ছাপ এমন, যে চেনাই মুশকিল। সঞ্জয় অত্যন্ত ভারী । আর হ্যাঁ, মাধুরী নাচও করেছেন। সেই ‘সাজন’ ছবির মুদ্রায়। কিন্তু জমেনি কিছুই। অতি নাটকীয় চিত্রনাট্য, চিত্রহার সদৃশ চলচ্চিত্রায়ণ, অতিদীর্ঘ বিস্তার, কাল্পনিক সেট, চড়া দাগের সংলাপ— সব মিলিয়ে ‘কলঙ্ক’ দেখার অভিজ্ঞতা একেবারেই সুখকর নয়। মাধুরী, সঞ্জয়, সোনাক্ষী কারোরই কিছু করার ছিল না। আলিয়া যতটা পারেন টেনে নিয়ে গিয়েছেন, কিন্তু চিত্রনাট্যের সহযোগিতা না পাওয়ায়, সেই চেষ্টায় সফল হননি। খুবই ভালো কাজ করেছেন কুণাল খেমু এবং বরুণ ধাওয়ান। আদিত্য রায় কাপুর যথারীতি আড়ষ্ট। গানগুলি হল থেকে বেরনোর আগেই ভুলে যাবেন। এ ছবি আসলে চিত্রনাট্য ও অভিনেতাদের অপচয়।
অদিতি বসুরায়