তরুণ প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে অষ্টম স্বরসম্রাট ফেস্টিভ্যালের প্রথম দিনের আসরে চমৎকার পরিবেশনার জন্য অভিষেক লাহিড়ী (সরোদ), মেহতাব আলি নিয়াজি (সেতার), শুভ মহারাজ (তবলা) ও উন্মেষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (তবলা) নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দ্বিতীয় দিনের শুরুতে বাঁশি ও বেহালার যুগলবন্দিতে অংশগ্রহণ করেন রনু মজুমদার ও অতুল উপাধ্যায়। তাঁদের নিবেদনে ছিল রাগ বৃন্দাবনী সারং। তবলায় তন্ময় বসুর সঙ্গত চমৎকার। ধ্রুপদ শিল্পী উদয় ভাওয়ালকর ভীমপলাশি রাগ গেয়ে শোনান। পাখোয়াজে সহযোগিতা করেন প্রতাপ আওয়াধ। অসাধারণ পরিবেশনা। নিশাত খান সেতারে মাড়োয়া রাগে আলাপ জোড় ঝালা ও পরে বিলম্বিত তিনতাল পরিবেশন করেন। অতিরিক্ত তৈরি দেখানোর প্রবণতায় এই রাগের যথাযথ রূপ প্রকাশ পেল না। পরে খাম্বাজ রাগে আর্দ্ধাতালে গৎ ও শেষে ঝালা বাজিয়ে শোনান। তবলায় অনুব্রত চট্টোপাধ্যায় যথাযথ। এদিনের সেরা অনুষ্ঠান মৃদঙ্গ ও তবলার যুগলবন্দি। গুরু করাইকুড়ি মানি মৃদঙ্গে ও শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় তবলায় এক অনবদ্য তালবাদ্য পরিবেশন করেন। সহযোগী শিল্পী সুন্দরকুমারের খঞ্জিরা উল্লেখযোগ্য। শেষ শিল্পী অজয় চক্রবর্তী যোগ রাগে বিলম্বিত একতাল, তিনতাল, ও ঝাঁপতালে তারানা পরিবেশন করেন। তবলায় সন্দীপ ঘোষ পরিমিত। হারমোনিয়মে সহযোগিতা করেন গৌরব চট্টোপাধ্যায়।
তৃতীয় দিনের অনুষ্ঠানের শুরু হয় সুজাতা মহাপাত্রের ওড়িশি নৃত্যে। দুপুরের প্রথম অনুষ্ঠান হওয়ায় খুব কম সংখ্যক দর্শক এই অনন্য নৃত্যের সাক্ষী থাকলেন। সন্তুরে রাহুল শর্মা ভীমপলাশি রাগে আলাপ জোড় ও রূপক এবং তিনতালে গৎ বাজান। তবলায় সঙ্গত করেন রামকুমার মিশ্র। পুরিয়াধানেশ্রী ও হংসকিঙ্কিনী রাগে খেয়াল পরিবেশন করেন আরতি আঙ্কলেকর। তবলা ও হারমোনিয়ামে সহযোগিতা করেন আনন্দগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও জ্যোতি গোহো। কিন্তু তাঁর গান শুনে অত্যন্ত হতাশ হতে হল। বেনারস ঘরানার আঙ্গিকে রূপক ও তিনতালে এক উপভোগ্য তবলা লহরা পরিবেশন করেন কুমার বোস। হারমোনিয়ম ও সারেঙ্গিতে নগমা রাখেন হিরন্ময় মিত্র ও পঙ্কজ মিশ্র। এদিনের শেষ শিল্পী উস্তাদ আশিস খান। সঙ্গে সরোদে সিরাজ খান ও তবলায় বিক্রম ঘোষ। রাগ জয়জয়ন্তি, ঝিঁঝিট ও শেষে একটি ধুন বাজিয়ে তিনি অনুষ্ঠান শেষ করেন।
—তীর্থঙ্কর ব্যানার্জি