সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
আমি এখন চরিত্রের সঙ্গে সঙ্গে সিনেমাকেও বড় করে দেখছি। সিনেমার পরিভাষা এখন বদলে গিয়েছে। আগের মতো একজনই নায়ক বা নায়িকা হবেন, সেই জায়গা থেকে আমরা সরে এসেছি। এখন অনসমবল কাস্ট বা কনসেপ্ট পৌঁছে দিতে কারও উপর নির্ভর করতে হয়। তাছাড়া শিবু-নন্দিতাদির (শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায়) সঙ্গে আমি বহুদিন ধরেই জড়িত। ওরা ভালোই জানে বাঙালি ঠিক কী চায়।
ছবিতে আপনি প্রধান চরিত্র নন। আপনার সঙ্গে কি এমন ছবি খাপ খায়?
একটা ভালো বিষয়কে সাপোর্ট করাটা সবসময় অঙ্ক কষে হয় না। এরকম ছবি করলে আমি কোনওদিন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত থেকে কমে যাব না। একই জায়গায় থাকব। এছাড়া কণীনিকা, অনসূয়াদি, বিশ্বনাথ এরা প্রত্যেকেই ভালো অভিনেতা। কখনও ওরা আমাকে সাপোর্ট করেছে। কোনওদিন না হয় আমিই সাপোর্ট করলাম।
তাহলে বলছেন বাংলা সিনেমার কনসেপ্ট বদলাচ্ছে?
অবশ্যই বদলাচ্ছে। জীবনের যে সব অংশ আগে বাংলা ছবিতে দেখা যেত না, এখন সেসব দেখানো হয়। যেমন আমার আহা রে ছবিতেই এমন সাধারণ মানুষের কথা বলেছি।
প্রসঙ্গ তুললেন বলে জিজ্ঞেস করছি, বসুন্ধরা তো ওখানে রান্না করছে, হোম ডেলিভারি করছে। ঋতুপর্ণা কী পারে?
বাঙালি রান্নাটা ঋতুপর্ণা ঠিক করে উঠতে পারে না। গ্রিল-বেকড কন্টিনেন্টাল রান্নাটা পারি। কোন ফোড়ন কখন দিতে হবে সেটা সমস্যার। যদি শুক্তো বা ঘণ্ট বানাতে বলে, তবে ঘণ্ট করে রেখে দেব। কিন্তু রান্নায় আমার আগ্রহ আছে।
রাস্তায় ফুচকা খান?
রাস্তায় খেতে পারি না। কিন্তু ফুচকাকে আমি ছাড়িনি। বাড়িতে এনে খাই। গাড়িতে বসে খাই।
মুখার্জিদার বউ ছবির ট্রেলার দেখে মনে হচ্ছে, আপনি পুরুষশাসিত সমাজের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করছেন।
ঠিক পুরুষের বিরুদ্ধে জেহাদ নয়। তবে পুরুষকে কিছুটা বোঝানোর ব্যাপার আছে। আমি ফেমিনিস্ট নই। আমি মনে করি একজন পুরুষও নারীর জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন। তবে কোনও পুরুষ কিন্তু আই অ্যাম এ ম্যান, এটা বর্জন করতে পারে না। তাই এটাই বলার যে, পুরুষও নারীদের বুঝুক।
বসু পরিবার ছবিতে বহুদিন পরে আপনি অপর্ণা সেন-সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করলেন। কেমন অভিজ্ঞতা হল?
বলার কিছু নেই। ওঁরা ক্লাস। ওদের দেখে শুধু ভাবি কতটা শিখব, জানব। এমনকী এমনি আলোচনা করলেও ভালো লাগে। ওঁদের সঙ্গে কাজ করাটা অন্য ব্যাপার। ওঁরা অতুলনীয়।
সিনেমা জগতে তো আপনার ২৫ বছর হয়ে গেল। এখনও কোনও ছবিতে আপনি থাকলে, আপনার জন্য লোকে হলে যায়। রহস্যটা কোথায়?
আসলে আমি আমার দর্শককে কোনওদিন ঠকাইনি। কখনও চমক দিয়ে বা ফাঁকি মেরে মন জয় করতে চাইনি। যা করেছি মন দিয়ে করেছি।
বলিউড হোক বা টলিউড, আপনার মতো বহু অভিনেতাকেই প্রযোজনায় আসতে দেখা যাচ্ছে, কারণটা কী?
অনেক সময় অন্য প্রযোজকের হাতে থাকলে, আমাদের সিনেমা ভাবনাটা ঠিক ফুটে উঠে না। মনে হয় কোথাও যেন একটা ফাঁক থেকে গেল। তাছাড়া কিছু বিষয় নিজের কাছে রাখতেই ইচ্ছা করে। আমি প্রযোজনা করে বহু প্রতিভাকে সামনে এনেছি। এমনকী, শিবুকেও।
টলিউডের বেগমজানকে যখন বলিউডে রিপ্লেস করে দেওয়া হল, তখন খারাপ লাগেনি?
এখন আর এসব নিয়ে ভাবি না। আমি যে বেগমজান করে দিয়ে গিলাম, সেটা কেউ এখনও টপকাতে পারেনি। এটাই আমার প্রাপ্তি। জাতীয় পর্যায় একটু আলাদা ঠিকই। কিন্তু এখন আঞ্চলিক ছবিও প্রচার পাচ্ছে।
একসময় রাজ্যে সবচেয়ে বড় প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে আপনার লড়াই ছিল। সেই লড়াইয়ে কীভাবে নিজেকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন?
আমি বরাবরই লড়াকু। লড়াই করেই আমি সবকিছু পেতে চাই। শুধু মুখে বলার জন্য বলি না। আমি লড়ি। সেই জন্যই আমি এখানে আছি। আমার অনুপ্রেরণা আমি নিজে। আমার উপর অনেকে নির্ভর করে। আমি কারও উপর নির্ভরশীল নই।
ইন্ডাস্ট্রিতে কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবেন?
কম্পিটিশন এখন ওভাবে হয় না। আর আমি এখন যে জায়গায় আছি, সেখানে কেরিয়ারকে অন্যভাবে দেখি। আমি ওই প্রতিযোগিতার ঊর্ধ্বে।
বেগমজান করার অনেক আগেই আপনি বেগমজান বলছেন তো..
এক্সজ্যাক্টলি (হাসি)। হয়তো তাই। বেগমজানের আখ্যা দর্শক অনেকদিন আগেই আমাকে দিয়েছেন।
অনেক পরিচালকের সঙ্গে কাজ করেছেন। আর কেউ আছেন যাঁর সঙ্গে কাজ করতে চান?
গৌতম ঘোষ। গৌতমদা ছাড়া প্রায় সবার সঙ্গে কাজ করে ফেলেছি।
বাঁশুরি আপনার হিন্দি কাম-ব্যাক ফিল্ম বলা হচ্ছে?
কেন যে কাম-ব্যাক বলে কে জানে। আমি কী সিনেমা ছেড়ে গিয়েছি। বাঁশুরি নিয়ে আমি এক্সাইটেড। গল্পটা খুব ভালো। অনুরাগ আমার খুব পছন্দের। ও আমার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছে।
মুখার্জিদার বউ ছবিতে একটি সংলাপ আছে, বিয়ের আগে প্রেম করেছেন? এই প্রশ্ন আপনাকেও করছি।
(হেসে) স্কুলজীবনে ভীষণ রেস্ট্রিকশন ছিল। কলেজ থেকে একটু ছাড় পেয়েছি। প্রেম করব কী করে। কেউ তাকাল, কিংবা চিঠি দিল, তাতেই তো বাড়িতে ধুন্ধুমার।
অভিনেত্রী হবেন ভেবেছিলেন?
না। টিচার হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নাচের একটি প্রোগ্রোম দেখে আমাকে একজন পছন্দ করল। তারপর ‘শ্বেত পাথরের থালা’। পুরোদমে অভিনেত্রীই হয়ে গেলাম। প্রচুর বিজ্ঞাপনে কাজ করলাম। এখনও অন্য ধরনের ছবির পাশাপাশি সেমি কমার্শিয়াল ছবি করি।
আপনি দু’ধারার ছবিতেই সফল। নিজেকে মহানায়িকা ভাবেন?
আমাকে এই নামে অনেকেই সম্বোধন করেন। আমি নিজেকে ভাবি না। কারণ যেদিন ভাবব, আরও বড় কাজের ইচ্ছাটা চলে যাবে। তবে এরকম কথা আমার কানে এসেছে।