যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
পৃথিবীর আকৃতি অনেকটা কমলালেবুর মতো, গোলাকার হলেও এর উত্তর ও দক্ষিণভাগ সামান্য চাপা। নিজের অক্ষের উপর ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। সৌরমণ্ডলের এই বিচিত্র গ্রহটি সকল প্রাণের সকল প্রাণীর আশ্রয়স্থল। এমন বাসযোগ্য অভিনব প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জলবায়ু অন্য কোনও গ্রহে পাওয়া যায় না। তাই তো এই গ্রহটির শেষ পথকে নিয়ে মানুষের কৌতূহলও অশেষ।
ই-৬৯ হাইওয়ে পৃথিবীর শেষ রাস্তা নামে পরিচিত। উত্তর মেরুর গা ঘেঁষে চলে যাওয়া এই রাস্তাটি নরওয়েতে অবস্থিত। উত্তর ইউরোপের নর্ডক্যাপকে নরওয়ের ওল্ডারফিউওর্ড গ্রামের সঙ্গে যুক্ত করেছে এই পথটি। পৃথিবীর এই শেষ রাস্তার শেষটা কোথায় সেটা স্বচক্ষে দেখার জন্য অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা সদাব্যস্ত। কিন্তু এই পথে একা যাওয়া নিষেধ। মানুষের তৈরি এই রহস্যময় পথকে ঘিরে নানা কাহিনি ছড়িয়ে রয়েছে। তবে কিছু ভৌগোলিক কারণের জন্য এই পথে একা কাউকে যেতে দেওয়া হয় না।
দ্য লাস্ট রোড অব দ্য ওয়ার্ল্ডের দৈর্ঘ্য ১২৯ কিলোমিটার। এই পথটি পেরতে গেলে পাঁচটি টানেলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ টানেল নর্থকেপের দৈর্ঘ্য ৬.৯ কিলোমিটার। পথের দু’ধারের অপরূপ প্রাকৃতিক শোভা, সমুদ্র আর বরফ যেকোনও প্রকৃতিপ্রেমীকে মুগ্ধ করবেই ।
যেসব অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা পথকেই সঙ্গী করে বেরিয়ে পড়েন তাঁদের জন্য এই পথটি চির রুদ্ধ। কারণ এখানকার আবহাওয়া। প্রচুর বরফ আর ভয়ানক ঠান্ডা সেইসঙ্গে তীব্র বাতাসের গতি। এই অঞ্চলের আবহাওয়া এমন অনিশ্চিত যে গ্রীষ্মকালেও বরফ পড়ে! আবার সমুদ্র উপকূলবর্তী হওয়ায় যেকোনও মুহূর্তে আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখা যায়। যখন তখন ঝড়ও ওঠে। শীতকালে পথ পুরোপুরি বন্ধ থাকে। তাপমাত্রা মাইনাস ২৬ থেকে মাইনাস ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। অতিরিক্ত তুষারপাত কিংবা বৃষ্টি হলে এই পথে গাড়ি চালানো বিপজ্জনক। এখানে বছরে ছয় মাস দিন এবং ছয় মাস রাত। এইসব প্রতিকূলতার কারণেই এই পথে একা কাউকে যেতে দেওয়া হয় না।
১৯৩০ সালে ই -৬৯ হাইওয়ে তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়। ১৯৩৪ সালে হাইওয়ে তৈরির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অর্থাৎ পৃথিবীর শেষ পথের শুরু ওই সময়ই। এই হাইওয়ের ওল্ডারফিউওর্ড সংলগ্ন রাশিনিসে রয়েছে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি ফেরি ঘাট । ১৯৯২ সালে রাস্তাটি তৈরি সম্পূর্ণ হয়।
অস্তমান সূর্য এবং মেরুজ্যোতির সৌন্দর্যে সৃষ্ট এক ভিন্ন জগৎ ই-৬৯ হাইওয়ে। হাজার প্রতিকূলতাকে নিয়েও এই ভয়ঙ্কর সুন্দরকে প্রত্যক্ষ করতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ আসেন। গাঢ় নীল আকাশে সবুজ এবং গোলাপি আলোর খেলা পৃথিবীর শেষ পথটিকে মোহময়ী
করে তোলে।