নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: ইংলিশবাজার শহরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সম্প্রসারণ করার উদ্যোগ নিয়েছে পুরসভা। শহরের নেতাজি রোড, বাঁধ রোড ও মালদহ জেলা সংশোধনাগার লাগোয়া রাস্তা চওড়া করা হবে বলে পুরকর্তারা জানিয়েছেন। যানবাহন এবং পথচারীর চাপ বাড়লেও রাস্তাগুলি দীর্ঘদিন চওড়া হয়নি। উল্টে বেশকিছু জায়গা জবরদখল হয়ে রয়েছে। রাস্তা সম্প্রসারণের আগে জবরদখল হঠাতে পুরসভার তরফে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। 
পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলির বেশিরভাগই অত্যন্ত সংকীর্ণ। দীর্ঘদিন সেগুলি চওড়া করা হয়নি বলে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। পথচারীদেরও সমস্যা হচ্ছে। তাই আমরা রাস্তা চওড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পুরসভার শেষ বোর্ড মিটিংয়ের এব্যাপারে প্রস্তাব পাশ হয়েছে।
বাঁধ রোডে পিচ বা ‘ব্ল্যাক টপে’র দু’পাশে বেশকিছুটা অংশ মাটির। সেটা এবার কংক্রিটের করা হবে। অন্যদিকে, নেতাজি রোড ও সংশোধনাগার হয়ে রামনগর কাছারির দিকে যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে পিচ দেওয়া হবে। ওইসব রাস্তায় দুটি চারচাকার গাড়ি যাতে পাশাপাশি অনায়াসে যেতে পারে তার জন্যই এই উদ্যোগ। সবমিলিয়ে প্রায় ৩ কিমি রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ হবে। চেয়ারম্যান আরও বলেন,বহু জায়গায় রাস্তা বা ফুটপাতের উপর জবরদখল রয়েছে। গুমটি ও ঝুপড়ির পাশাপাশি স্থায়ী দোকান থেকেও অনেকে রাস্তার উপর ছাউনি নামিয়ে দিয়েছেন। সেখানে তাঁরা দিনের বেলায় দোকানের সামগ্রী রাখেন। এভাবে রাস্তা দখল করতে দেওয়া যাবে না। ফলে সম্প্রসারণের আগে আমরা উচ্ছেদ অভিযান চালাব। পুরসভা ময়দানে নামার আগেই ওইসব কাঠামো রাস্তার উপর থেকে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের বলা হচ্ছে। 
অভিযোগ, পুরসভা এবং প্রশাসনের নজরদারির অভাবে ইংলিশবাজার শহরের প্রায় সব রাস্তার দু’পাশেই কিছু কিছু জায়গায় বেআইনি নির্মাণ করা হয়েছে। ওইসব নির্মাণের সঙ্গে যুক্তরা সরকারি জায়গা দখল করে রেখেছেন। পাশাপাশি রাস্তার দু’পাশে ফুটপাতের একাংশও দখল হয়ে গিয়েছে। নিকাশিনালার উপর কংক্রিটের স্ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। তার উপর গুমটি বসানো হয়েছে। কোনও কোনও জায়গায় ইটের দেওয়াল তুলেও দোকান তৈরি হয়েছে। তারফলে রাস্তা আরও সঙ্কীর্ণ হয়েছে। সেই কারণে সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছে। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ইংলিশবাজার শহর এমনিতেই ঘিঞ্জি। শহরের রাস্তাঘাট প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম চওড়া। অথচ অন্যান্য শহরের তুলনায় লোকসংখ্যা বেশি। শহরে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ বাস করেন। যা সাধারণত দেড় হাজার থাকার কথা বলে পুরকর্তারা দাবি করেছেন। ফলে বিপুল জনসংখ্যার ভার সামলানোর মতো পরিস্থিতি শহরের সিংহভাগ রাস্তার নেই। অফিস টাইমে শহরের বেশিরভাগ রাস্তায় যানজট লেগে থাকে। বাইক সহ অন্যান্য ছোট গাড়ির চালকদের পক্ষে সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় না। এই পরিস্থিতিতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ তথা ব্যস্ততম রাস্তাগুলি সম্প্রসারণ জরুরি বলে বাসিন্দাদের অভিমত। তবে সব বাধা কাটিয়ে পুরসভার উদ্যোগ কতটা বাস্তবায়িত হয় সেদিকেই এখন শহরবাসী তাকিয়ে।