যে কোনও ব্যবসায় শুভ ফল লাভ। বিশেষ কোনও ভুল বোঝাবুঝিতে পারিবারিক ক্ষেত্রে চাপ। অর্থপ্রাপ্তি হবে। ... বিশদ
পিকনিক গার্ডেনের চন্দ্রনাথ রোডে ঘিঞ্জি গলি পেরিয়ে তিলজলা থানা। থানার ভিতরে ছোট পুকুর। জলে সাঁতরায় ১২টি রাজহাঁস। থানায় এসে মানুষ ডায়েরি করবেন কি, হাঁস দেখতেই সময় কাবার। এ অঞ্চল মোটেও শান্তিপূর্ণ নয়। প্রায়ই লেগে থাকে ঝামেলা, অশান্তি, মারপিট। কখনও রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে। কখনও পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। ফলে থানার বারাক থাকে সর্বতা সতর্ক। সেই সতর্ক বারাকের পাশেই হাঁসেদের বিচরণক্ষেত্র বলে পুকুরটিতে তোলপাড় চলে। এই থানার সবথেকে পুরনো বাসিন্দা হল রাজহাঁস। পুলিসকর্মীরা কোনওদিন খাওয়ার জন্য তাদের দেন পাউরুটি। কোনও দিন চাল।
বেলার দিকে যখন টহল দিতে বেরয় প্রাণীগুলি। তখন প্রথমে থাকে ওদের ‘গ্রুপ লিডার’। তার পিছনে সারি দিয়ে থাকে বাকিরা। এলাকার বাসিন্দারা জানে টহলদারির সময়। তাই প্রত্যেক বাড়িতে দুপুরে খাবারের ব্যবস্থাও থাকে ওদের জন্য। কেউ ভাত দেন। কেউ হাত রুটি। রুজিনা খাতুন নামে এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমরা আট বছর আগে এখানে ফ্ল্যাট কিনে এসেছি। ওদের দেখছি তখন থেকে। হাঁসগুলো ঠিক জানে, দুপুরে কারা কখন ভাত খায়। সেই সময়ে নিয়ম করে প্রতিদিন এসে প্যাঁক প্যাঁক ডাক দিয়ে জানান দেয়, এসেছি। তারপর খাবার দিলে খেয়েদেয়ে চলে যায়।’
পেঠ ভর্তি করে বিকেল হওয়ার আগেই তারা নিয়ম করে ফেরে থানায়। ক্রেঙ্কার শুনে ডিউটি অফিসার বুঝতে পারেন এসে গিয়েছে। থানার এক অফিসার বলেন, ‘আমরা যেমন থানায় থাকি। ওরাও তেমনই থাকে। ওদের দেখাশোনার একজন রয়েছে। তবে বিশেষ কোনও পরিচর্যা করা হয় না। স্বাভাবিকভাবেই বেঁচে থাকে ওরা।’ থানার পুকুরের এক কোণে বাড়ি হাঁসগুলির। সেখানেই রাতে ঘুমোতে যায়। তার কয়েকঘণ্টা পর ভোর হয়। ফের চেনা পরিচিত প্যাঁক প্যাঁক ডাক শোনে তিলজলার চন্দ্রনাথ রোড। আড়মোড়া ভাঙে ঘিঞ্জি গলি। কেটলিতে চা চাপান কোনও এক পুলিস কর্মী। সূর্য উঁকি দেয় আকাশে।-নিজস্ব চিত্র