যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
দেশের অন্যান্য রাজ্যের মতো বাংলাতেও ধীরে ধীরে ক্রিকেট তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এর ফলে এসময়ের স্কুল-কলেজের পড়ুয়াদের মধ্যে একটা হবি লক্ষ করা যায়— বিভিন্ন ক্রিকেটারদের ছবি জমানো। শুধু ক্রিকেট কেন ফুটবলারদের পোস্টারও জমানো হতো। এমনই এক সময় একটি চুইংগাম কোম্পানি দেশ-বিদেশের ক্রিকেটারদের ছবি সম্বলিত ওই কার্ড প্রকাশ করে।
সেই কার্ড জমানোর হিড়িক পড়ে যায় স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে। শচীন তেন্ডুলকার, মহম্মদ আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজা, জাভাগাল শ্রীনাথের মতো সে সময়ের জনপ্রিয় ভারতীয় ক্রিকেটারদের পাশাপাশি অ্যালান ডোনাল্ড, শ্যেন ওয়ার্ন, ওয়াসিম আক্রম, গ্যারি কাস্টেন, মুরলীধরনের মতো বিদেশি ক্রিকেট তারকারাও অনায়াসে জায়গা করে নেন পড়ুয়াদের ব্যাগে। আবার যে ক্রিকেটারের রেকর্ড যত ভালো তার উপর ভিত্তি করে গোল্ড, সিলভার ও ব্রোঞ্চ লেখা ট্যাগ সাঁটানো থাকত। একই কার্ড একাধিক থাকলে স্কুলে বন্ধুদের মধ্যে এক্সচেঞ্জও চলত। অর্থাৎ, এক কার্ড বন্ধুকে দিয়ে অন্য একটা কার্ড তার থেকে নেওয়া।
এক্ষত্রে ডব্লুডব্লুএফ (পরবর্তীকালে ডব্লুডব্লুই নামে পরিচিত)-এর তারকাদের কার্ডের বিষয়টিও উল্লেখ করতে হয়। টিভিতে এই আজব খেলা দেখে খুদেরা তাজ্জব হয়ে যেত! বক্সিংয়ের রিংয়ের মতো একটা জায়গা। সেখানে দু’জন ষণ্ডামার্কা লোক তুমুল মারপিট করছেন। সে অর্থে নিয়মের কোনও বালাই নেই! কখনও আবার রেফারিকেই দমাদ্দম মেরে বসতেন প্রতিযোগীরা। এসব দেখে খুব মজা পেত খুদেরা। অবশ্য, বড়রা বলতেন, এই খেলার মারধর আসলে লোকদেখানো। তবে, কিশোর মন কি সেকথা শুনতে চায়?
তাদের মনজুড়ে থাকতেন আন্ডারটেকার, হাল্ক, দ্য রক, কার্ট অ্যাঙ্গেল, জন সিনা, এজ, ট্রিপল এইচ, কেন, জেফ হার্ডির মতো ডব্লুডব্লুএফ তারকারা। এই কার্ডেও থাকত সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য। তাঁর র্যাঙ্ক, ওজন ইত্যাদি। আর এই তথ্যগুলির ভিত্তিতেই স্কুলের বন্ধুরা বসে যেত সেই কার্ড নিয়ে খেলতে। খেলাটা ছিল অনেকটা তাসের মতো।
একটা সময় স্কুলের অফ-পিরিয়ড আর টিফিন টাইম জুড়ে থাকত এই ধরনের নানা কার্ড। এদেশে মোবাইল ফোন এলেও তখনও মানুষের হাতে হাতে পৌঁছে যায়নি। সবে বাড়িতে বাড়িতে ঢুকছে কেবল টিভি। ভিডিও গেমও তেমন সহজলভ্য নয়। সেই সময় শিশু-কিশোরদের জীবনজুড়ে ছিল এই রকমই হরেক কার্ড। তোমাদেরও কি ইচ্ছা করছে এই ধরনের কার্ড জমাতে?