যে কোনও কর্মেই একটু বাধা থাকবে। তবে উপার্জন মন্দ হবে না। ললিতকলায় ব্যুৎপত্তি ও স্বীকৃতি। ... বিশদ
আকার, আয়তন, সৌন্দর্যের পাশাপাশি এটি তৈরির ইতিহাসও বেশ আকর্ষণীয়। শুরুটা হয় ১৯৭১ সালে। সেই সময় রোমানিয়ার শাসক ছিলেন নিকোলাই চাও চেস্কো। তিনি একবার উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিলেন। সেখানকার স্থাপত্য দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন নিকোলাই। দেশে ফিরে চোখ ধাঁধানো কোনও মহল বা প্রাসাদ তৈরির কথা ভাবতে থাকেন। কিন্তু, কী তৈরি করবেন, কোথায় তৈরি করবেন— কোনওকিছুই স্থির করতে পারছিলেন না। এভাবেই কয়েকবছর কেটে যায়। ১৯৭৭ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয় রোমানিয়ায়। তাতে বড় বড় ইমারত চোখের নিমিষে মাটিতে মিশে যায়। দু’- একটা যাও বেঁচে ছিল সেগুলোকেও ভেঙে দেন তিনি। ঠিক করেন নতুনভাবে সাজিয়ে তুলবেন গোটা বুকারেস্ট শহরকে। তারই অংশ হিসেবে বুকারেস্টের প্রাণকেন্দ্রে তৈরি হবে বিরাট এক প্রাসাদ। যা দেখে সকলের চোখ ধাঁধিয়ে যাবে। কাজ শুরু করতে করতে সাত বছর লেগে যায়। ১৯৮৪ সালের ২৫ জুন শুরু হয় প্রাসাদ তৈরির কাজ। উত্তর কোরিয়ায় গিয়ে সেখানকার স্থাপত্য নিকোলাইয়ের মনে ভালোই দাগ কেটেছিল। ‘প্যালেস অব দ্য পার্লামেন্ট’ তৈরিতেও তার প্রভাব স্পষ্ট। সে দেশের স্থপতিদের বক্তব্য, উত্তর কোরিয়ার টোটালিটারিয়ান স্টাইলেই প্রাসাদটি তৈরির পরিকল্পনা করেন নিকোলাই। ওই প্রাসাদ তৈরি করতে ২০ হাজারেরও বেশি শ্রমিক কাজ করেছিলেন। নিয়োগ করা হয় রোমানিয়ার সেনাবাহিনীকেও। কয়েকশো আর্কিটেক্টের নির্দেশে তাঁরা দিনরাত এক করে প্রাসাদ তৈরির করেন। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয় ‘প্রজেক্ট বুকারেস্ট’। এই প্রাসাদ তৈরিতে খরচ হয় ৪০০ কোটি ইউরো। এর জেরে রোমানিয়ায় কোষাগার প্রায় শূন্য হয়ে যায়। মাটির তলা দিয়ে শহরের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাড়ি, অফিসের যাওয়ার জন্য ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ একাধিক রাস্তা রয়েছে। এই ধরনের একটি প্রাসাদের আকর্ষণ দেশ-বিদেশের বহু ইঞ্জিনিয়ারকে টেনে এনেছে। তারা বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখতে গিয়ে এটির ধীরে ধীরে মাটিতে ঢুকে যাওয়ার বিষয়টিও জানতে পারেন এবং বিশ্বের সবচেয়ে ভারী ইমারতের স্বীকৃতি দেন ‘প্যালেস অব দ্য পার্লামেন্ট’কে।