সন্তানের বিদ্যাশিক্ষায় নজর দেওয়া প্রয়োজন। অতিরিক্ত পরিশ্রমে শরীরে অবনতি। নানাভাবে অর্থ অপচয়। কর্মপরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি।প্রতিকার: ... বিশদ
অপ্রচলিত চাকরিতে মহিলাদের সুযোগ পাওয়ার কথায় তিনি বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে আমার প্রথম দিনটি ভোলার নয়। আমার সহকর্মী সবাই ভেবেছিলেন আমি সুরঙ্গ খোঁড়ার কাজ দেখতে এসেছি। একজন মহিলা হয়ে হাতেকলমে যে আমিও সুরঙ্গ খুঁডতে পারি তা কারও মাথায় আসেনি। আজও দেশে আমিই একমাত্র মহিলা টানেল ইঞ্জিনিয়ার। তাই টানেল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশাটি এখনও মেয়েদের কাছে অপ্রচলিত।’ অ্যানির কথায়, যখন সহকর্মীরা বুঝেছিলেন তিনিও তাঁদের সঙ্গে কাজ করবেন, তখন নানারকম ঠাট্টা শুরু হয় তাঁদের মধ্যে। একজন নাকি মুখের ওপরেই বলেছিলন, এখানে তো মহিলাদের ব্যবহারের জন্য সঠিক টয়লেটই নেই। এমন পরিস্থিতিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হলে শেষে কি একজন মহিলার সঙ্গে টয়লেটও শেয়ার করতে হবে? কাজের প্রতিটি মুহূর্তই যেন অগ্নিপরীক্ষা, এমনই প্রকট হয়ে উঠেছিল লিঙ্গবৈষম্য।
আর সেই বৈষম্যের অভিব্যক্তি যে শুধুমাত্র ভারতীয়দের মধ্যেই তিনি দেখেছেন, তা নয়। জার্মান বসও তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। অ্যানির কথায়, ‘প্রথম দিনে কাজে কোনও অভিজ্ঞতাই নেই, মাটি কেটে সুরঙ্গ তৈরির যন্ত্র গেল বিকল হয়ে। ও মা, আমায় ডেকে আমার বস বললেন, মেশিনের ভিতর ঢুকে একটা নাট আটকে গিয়েছে তা খুলে বার করতে। এদিকে হাতেকলমে মেশিন চালানোর কোনও অভিজ্ঞতাই আমার নেই। তবু সাহস করে ভিতরে ঢুকলাম। আর ঢুকেই বিপত্তি। নাট ধরে টানাটানি করতেই একরাশ হাইড্রোলিক গ্যাস মুখে এসে পড়ল অমার। কোনওক্রমে গ্যাসের তাড়না এড়িয়ে বাইরে এসে দেখি সবাই আমার অনভিজ্ঞ আচরণে দারুণ মজা পেয়েছেন। এক সহকর্মী বললেন, ভালোই হল মুখ একেবারে জন্মের মতো চকচকে হয়ে থাকবে। প্রসাধনীর দরকার পড়বে না।’ সহকর্মীদের হাসিঠাট্টার পাত্রী হয়ে প্রায় রণে ভঙ্গ দেওয়ার দশা হয়েছিল তাঁর। তবু হার না মেনে কর্মক্ষেত্রে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন অ্যানি সিংহ রায়। আজ প্রায় দেড় দশক পেরিয়ে সুরঙ্গ খোঁড়ার কাজে তিনি দক্ষ। বেঙ্গালুরুর একাংশের টানেলিংয়ের সব দায়িত্ব একাই সামলেছেন তিনি। বললেন, ‘আক্ষেপ একটাই, পনেরো বছর পরেও একজন মহিলা সহকর্মী পেলাম না।’