ঝগড়া এড়িয়ে চলার প্রয়োজন। শরীর স্বাস্থ্য বিষয়ে অহেতুক চিন্তা করা নিষ্প্রয়োজন। আজ আশাহত হবেন না ... বিশদ
বলতে গেলে ঠাকুরবাড়ির কথা বাদ দিলে চলে না। শোনা যায় রাজকীয় বৈভবে কেনাকাটা সারা হতো। বাড়ির মহিলা মহলে আসতেন তাঁতিনীরা। নিয়ে আসতেন নীলাম্বরী, গঙ্গাযমুনা এমন নানা ধরনের শাড়ি। মহিলারা পুজোর সময়ে দিনে পরতেন সোনার গয়না। আর রাতের জন্য নির্দিষ্ট থাকত জড়োয়া। কেনাকাটার আয়োজন ও আড়ম্বর ছিল দেখবার মতো। প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর দরাজ হাতে পরিবারের প্রত্যেকের জন্য দামি উপহার সামগ্রী দিতেন। মেয়ে-বউদের জন্য কেনাকাটার তালিকায় শুধু গয়নাই নয়, দামি সুগন্ধী, খোঁপায় দেওয়ার সোনা বা রুপোর ফুল, কাচের চুড়ি আর বই থাকতই। বাড়ির পুরুষদের জন্য কেনা হতো চাপকান, জরির টুপি ও রেশমি রুমাল। পুজোর তিনমাস আগে থেকেই জুতোর মাপ নিয়ে যেত চিনাম্যান।
বাড়ির প্রতিমাকেও পরানো হতো প্রচুর সোনার গয়না। দু’বেলা বেনারসি শাড়ি বদল করে পরানো হতো।
কালের নিয়মে বদলেছে সময় ও সামাজিক জীবন। দুর্গাপুজোর আবহেও এসেছে নানান পরিবর্তন। এই উত্তর আধুনিক সময়ে ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পুজো উপলক্ষে কামান দাগা যেমন বিলুপ্ত হয়েছে তেমনি অতীতের ধূসর পাতায় জায়গা করে নিয়েছে ঠাকুরবাড়ির পুজো। এখন চলতি হাওয়ার স্বাদ নিয়ে কেনাকাটার নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত চোখ ধাঁধানো শপিং মলে মজেছেন সবাই। আবার দু’হাতে অজস্র ব্যাগ সামলে কপালের দরদর করা ঘাম নিয়েও ফুর্তিতে কেনাকাটা সারেন ফুটপাত বা সাধারণ বিপণিতে। ঝোলাঝুলির দরাদরিতে দু’একটা কম করাতে পারলেই যেন যুদ্ধ জয়। এক মুখ তৃপ্তির হাসি।
কেনাকাটার এহেন সুখ যেন অন্য কিছুতে পাওয়া যায় না। খুব পছন্দের ফিরোজা ফিরোজা ঢাকাই-এর সঙ্গে হন্যে হয়ে খোঁজা কলমকারির ফিউশন ব্লাউজটা যখন ছোঁ মেরে তুলে নেওয়া যায়, উফ্ তখন যে কী শান্তি। অথবা আগুন রঙা লিনেন শাড়ির মানানসই কাড়ি আর বাঁশের গয়না না কিনতে পারলে পুজোর আনন্দটাই পানসে। অ্যাঙ্কেল লেন্থ প্যালাজোর সঙ্গে টুকটুকে লালের মনপসন্দ টপ না মিললেই দিস্তে দিস্তে মনখারাপ। মহিলারা অনেকে রং মিলিয়ে বিছানা, বালিশ, পর্দা, কুশনের নতুন নতুন ডিজাইনে ঘর সাজান। কারও আবার পুজোবার্ষিকী কেনা চাইই চাই।
তাই উৎসবে আনন্দের রেশকে সঙ্গী করে ছুটির ঘণ্টা পড়ার বহু আগে থেকেই কেনাকাটা সুপারহিট।