হঠাৎ নেওয়া সিদ্ধান্তে বিপদে পড়তে পারেন। চলচিত্র ও যাত্রা শিল্পী, পরিচালকদের শুভ দিন। ধনাগম হবে। ... বিশদ
এমনিতে বাঙালি পোশাকে সাজতে খুবই ভালোবাসেন তিনি। জনপ্রিয় অভিনেতা অর্জুন চক্রবর্তী নিজেই জানালেন সেকথা। চারুপমার পুজো স্পেশাল শ্যুটের জন্য যে ধরনের কালেকশন সাজিয়েছিলাম আমরা, তার মধ্যে সিল্ক শার্ট, কুর্তা চুড়িদার এবং ধুতি পাঞ্জাবি সবই ছিল। তিন ধরনের পোশাকই তাঁর মনে ধরেছে বলে জানিয়েছেন অর্জুন। তবে কাজের ব্যস্ততায় তাঁকে ওয়েস্টার্ন ওয়্যার বেশি পরতে হয়। ‘কারণ জিনস শার্ট বা টি শার্ট পরে অনেক আরাম,’ বললেন ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ সোনাদার দুষ্টু সঙ্গী। আরামের জন্যই খাদির শার্টটি তাঁর বেশ লেগেছে। এর সঙ্গে বললেন, পুজোর সময়টা অবশ্যই স্পেশাল। তাই এ সময় ধুতি পাঞ্জাবি মাস্ট। তাঁর কথায়, ‘ট্র্যাডিশনাল পোশাক সবচেয়ে বেশি স্টাইলিশ।’
পুজোয় এবার কী করার ইচ্ছে আছে? অর্জুন বললেন, ‘পুজোয় সে অর্থে কোনও প্ল্যান ঠিক করা থাকে না। এই সময় আমি বাইরে বেরতে খুব পছন্দ করি না। কমপ্লেক্সের পুজোয় যাওয়ার চেষ্টা করি। আর পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডা দেওয়া তো আছেই। এটা ছাড়া মাঝেমধ্যে গাড়িতে করে একটু ঘুরে আসি। ছোটখাট পুজোগুলো বাইরে থেকে দেখার চেষ্টা করি।’ তাঁর নিজের কাজের ধরন যা, তাতে আলো-শব্দ সবই অনেকটা সময় জুড়ে থাকে। তাই অর্জুন বলেন, ‘পুজোর মধ্যে আর ওগুলো পছন্দ হয় না। ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে চলতে ভালোবাসি।’ এবারের পুজোয় কী প্রার্থনা করবেন দশভুজার কাছে? তিনি বললেন, ‘মানুষ আনন্দ করুন। সেটা দেখতে সবসময়েই ভালো লাগে। কিন্তু মহামারীর সময়টা যে আমরা পেরিয়ে যাইনি, সেটা মনে রাখতে হবে। মাস্ক পরে ঠাকুর দেখা অসম্ভব কিছু তো নয়। তাই সবাই সেটা মেনে চললে খুব ভালো হয়। কোভিড প্রোটোকল এবং হাইজিন মেনে যদি সকলে চলেন, তাহলে সেটা আমাদের প্রত্যেকের জন্যই ভালো। সেভাবেই স্বাভাবিক জীবনে দ্রুত ফেরার কথা ভাবতে পারি আমরা।’
অর্জুনের পছন্দের খাদির সিল্কের প্রিন্টেড শার্টটির মতো আরও নানা ডিজাইনে পুরুষদের শার্ট পাঞ্জাবি কুর্তা ফতুয়া পেয়ে যাবেন খাদি ইন্ডিয়ায়। সংস্থার তরফে অশোক সাহা জানালেন, হাফ বা ফুল স্লিভ শার্ট কটন, সিল্ক এবং মসলিনে (ফাইন কটন) পেয়ে যাবেন। সিল্কের মধ্যে প্রিন্টেড পাবেন। সুতির মধ্যে একরঙা শার্ট পাবেন। কটনের শার্ট শুরু ৩৫৭ টাকা-৭৫০ টাকা। আর সিল্কের মধ্যে শার্ট পাবেন ১২০০-২০০০ টাকার মধ্যে। পাঞ্জাবি ও কুর্তাও কটন এবং সিল্ক দুইয়ের মধ্যে পাবেন। কটন পাঞ্জাবির দাম শুরু ৫২০-এক হাজারের মধ্যে। সিল্কের পাঞ্জাবি ১৫০০-৩০০০ টাকার মধ্যে পাবেন। এতে যেমন প্লেন ডিজাইন আছে, তেমনই প্রিন্ট ও কাঁথাকাজের মধ্যে রয়েছে। সিল্কে রয়েছে বাটিকও। এছাড়া বাড়িতে পরার মতো হাফ হাতা ফতুয়াও পাওয়া যাচ্ছে। এর সঙ্গে স্টাইল কোশেন্ট বাড়াতে আছে জহর কোট— সিল্ক এবং কটনের মধ্যে পাবেন। এগুলি মূলত একরঙা।
পিওর তসরের কাজ করা নজরকাড়া পাঞ্জাবিটি অর্জুন বেছে নিয়েছিলেন রেনি থেকে। মেরুন এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবিতে সাইড নেকলাইনে মাল্টিকালারড এমব্রয়ডারি কাজ রয়েছে, যা পুজো বা অন্য যে কোনও অনুষ্ঠানে পরার জন্য খুব মানানসই। এবার পুজোয় রেনিতে পুরুষদের জন্য আছে আরও আকর্ষণীয় পাঞ্জাবির সম্ভার। দোকানের তরফে জানা গেল, এখানে প্রতিটি পোশাকই ফ্যাশন ডিজাইনারা তৈরি করে দেন। ইনহাউস ডিজাইন ও নিজস্ব প্রোডাকশন হওয়ায় প্রতিটি পোশাক অভিনব ও অনন্য। এছাড়া পাবেন কটন সিল্ক স্লাবের এক্সক্লুসিভ পাঞ্জাবি, যার মধ্যে কোনওটায় অলওভার নানারকম নকশায় কাঁথাস্টিচের কারুকার্য, কোথাও অল্প কাজ। এছাড়াও বিভিন্ন স্টাইলিশ কাটের এমব্রয়ডারি পাঞ্জাবিও রয়েছে। উৎসবের মরশুমের কথা মাথায় রেখে এগুলো বিভিন্ন রঙে পাওয়া যাচ্ছে। দাম শুরু ২১৯৫ টাকা থেকে। পাশাপাশি একরঙা পাঞ্জাবিতে অ্যাসিমেট্রিক কাট এখন ফ্যাশনে ইন। নানারকম বোতামের ব্যবহার এগুলোর লুক আরও স্মার্ট করে তুলেছে। এগুলো জিনসের সঙ্গে পরা যায় বলে তরুণদের মধ্যেও খুব জনপ্রিয়। রয়েছে কটন ইক্কতের নানারঙা ক্যাজুয়াল পাঞ্জাবি। এগুলো কাচা ধোয়াও যেমন সহজ, তেমনই সব ঋতুতেই পরা যায়। ক্যাজুয়াল পাঞ্জাবির দাম ১২২৫ টাকা থেকে শুরু। মেটেরিয়াল হিসেবে কটন, লিনেন ছাড়াও উৎসবের কথা ভেবে তসর, ভাগলপুরি ও কটন সিল্কের ব্যবহার করা হয়েছে পোশাকে। তাতে থাকছে রকমারি প্রিন্ট, উইভিং টেক্সচার ও অভিনব এমব্রয়ডারি। বিভিন্ন বয়সের মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে পাঞ্জাবি ছাড়াও এখানে পাওয়া যাবে কটন প্রিন্টেড ক্যাজুয়াল শার্ট। আজরখ, ইক্কত ও কলমকারি প্রিন্টের নকশা চোখে পড়ার মতো। এগুলো মাত্র ৭২৫ টাকা থেকে পাওয়া যাবে। রয়েছে জুট লিনেন ও কটন লিনেনের এথনিক জ্যাকেট যা পাঞ্জাবি বা শার্টের সঙ্গে পরলে ব্যক্তিত্বে এক অন্য মাত্রা যোগ করে। এগুলো সলিড কালার বা প্রিন্টেড দু’রকমই মিলবে। দাম শুরু ১৪৭৫ টাকা থেকে। রেনির শোরুম ছাড়াও পুজোর কালেকশন সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট (www.reneindia.com)-এ পাওয়া যাচ্ছে।
অর্জুনের পরনে যে কালো ধুতি পাঞ্জাবির সেটটি দেখছেন, সেটি বাগুইআটির শ্রী গোপাল পাঞ্জাবি মহলের। কটন গিছা কাপড়ে আড়ি কাজ রয়েছে পাঞ্জাবিতে। সঙ্গে হ্যান্ড ব্লক প্রিন্টেড ডুপিয়ান সিল্কের রেডিমেড ধুতি। এই ধুতি পরে চলাফেরা করতে কোনও অসুবিধা হয় না, জানালেন দোকানের কর্ণধার তপন দাস। এবার পুজো উপলক্ষে কী কী কালেকশন ভালো চলছে, প্রশ্ন করেছিলাম তাঁকে। তপনবাবু বললেন, ‘মহামারীর জন্যই এ বছর বাজার খুব একটা ভালো নয়। তার মধ্যেই যতটুকু যা কেনাকাটি চলছে তাতে সুতির পাঞ্জাবির কদর বেশি।’ তিনি জানালেন, যেহেতু মানুষ এখন কমদামি জিনিস খুঁজছেন, তাই সাড়ে সাতশো থেকে শুরু হওয়া সুতির পাঞ্জাবি রাখছেন তাঁরা। আর গর্জিয়াস পাঞ্জাবির রেঞ্জেও দাম কিছুটা কমিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। যেমন কালো ধুতি-পাঞ্জাবির সেটটি এখন পাওয়া যাচ্ছে ৪২০০ টাকার মধ্যে। আগে কিন্তু শুধু পাঞ্জাবির দাম ছিল ৩ হাজার টাকা। তাঁরা পোশাক বানাতে গিয়ে বুঝছেন কোভিড পরিস্থিতি কীভাবে কঠিন করে দিয়েছে কাজের গোটা প্রক্রিয়াটাই। তিনি জানালেন, পুজোয় অঞ্জলি দেওয়ার মতো সাদা ফতুয়া-পাজামার চাহিদা বরং রয়েছে। তাছাড়া আছে আর্ট ডুপিয়ান, আর্ট গিছা ইত্যাদি কাপড়ের উপরে নকশাকাটা পাঞ্জাবি। এগুলোর রেঞ্জ ২০০০-২৫০০-র মধ্যে। সাধারণ মানুষ সেগুলোই পছন্দ করছেন বেশি।
মডেল: অর্জুন চক্রবর্তী মেকআপ: অভিজিৎ পাল ছবি: বিজয়া দত্ত
পোশাক: খাদি ইন্ডিয়া, দক্ষিণাপণ,
যোগাযোগ: ৯৪৩৩২৪৫৬১২
শ্যুটিংস্থল: জে ডব্লু ম্যারিয়ট, কলকাতা
পাঞ্জাবি: রেনি, যোগাযোগ: ৯২৩০৫১৮৯৩৬
ধুতি-পাঞ্জাবি: শ্রীগোপাল পাঞ্জাবি মহল, বাগুইআটি, যোগাযোগ: ৯৮৩৬৫৯২৫৪৯