আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
কিন্তু কেন এই তীব্র জল সঙ্কট? রাষ্ট্রসঙ্ঘের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ভারতের হালফিল জনসংখ্যা প্রায় ১৩৬ কোটি। এই বিপুল জনসংখ্যার চাপ স্বাভাবিক ভাবেই এসে পড়ছে প্রকৃতির উপর। এছাড়া জল সঞ্চয়ের বিষয়ে বেশিরভাগ মানুষের সাধারণ সচেতনতার অভাব জল সঙ্কটের অন্যতম প্রধান কারণ বলে মনে করছেন বিশেজ্ঞরা। নাসা এবং জার্মানির অ্যারো স্পেস সেন্টারের এক যৌথ সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ভূগর্ভস্থ জল হ্রাসের অন্যতম কারণ কৃষিক্ষেত্র এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে জলের যথেচ্ছ ব্যবহার। ভূগর্ভস্থ জল হ্রাসের আরেক কারণ ব্যাপক হারে বৃক্ষচ্ছেদনও। তাছাড়াও কল-কারখানা থেকে বার হওয়া দূষিত বর্জ্য পদার্থ ভূগর্ভস্থ জলকে ক্রমাগত ঠেলে দিচ্ছে দূষণের দিকে। পরিস্রুত জল হয়ে উঠছে বিষাক্ত। নীতি আয়োগের রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ জলই দূষিত। জলের গুণমানের সূচক হিসাবে যা গোটা বিশ্বে ভারতকে ১২২টি দেশের মধ্যে ১২০ তম স্থানে নামিয়ে ফেলেছে। একইসঙ্গে প্রলম্বিত শীতের মতোই দীর্ঘায়িত হচ্ছে গ্রীষ্ম। বর্ষার দেখা নেই। ভারতের প্রায় অর্ধেকটা জুড়ে আজ ভয়ানক খরার প্রকোপ চলছে। মৌসুমি বায়ু বিলম্বিত, প্রাক্-বর্ষা বৃষ্টি হয়নি বলে ভূগর্ভের জল শুকিয়ে গিয়েছে, জলাধারে সংগৃহীত জল তলানিতে ঠেকেছে। কর্ণাটকে আশি শতাংশ, মহারাষ্ট্রে বাহাত্তর শতাংশ জেলা খরাক্রান্ত। একই অবস্থা আমাদের রাজ্যের পুরুলিয়া-বাঁকুড়ার মতো স্বল্প বৃষ্টির টাঁড় মাটির এই জেলাগুলিতে। কিন্তু যেখানে পৃথিবীর তিনভাগ জল আর একভাগ স্থল, সেখানে কেন এত জলাভাব! তার কারণও কিন্তু মানুষই। গ্রীষ্মের তীব্র জল সঙ্কটের তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ষা বা শীতের মরসুমে আমরা দিব্যি ভুলে যাই।
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘জল ধরো জল ভরো’ নামে যে কর্মসূচি গ্রহণ করেন, তার মূল বক্তব্য ছিল—যে-কোনও উপায়ে বৃষ্টির জল সংরক্ষণ ও তার ব্যবহার। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এই প্রকল্পে প্রায় ২ লক্ষ ৭৯ হাজার পুকুর খনন করা হয়েছে। দেশজুড়ে জলসঙ্কট যে-হারে বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সব দলের জনপ্রতিনিধিদের কাছে তাঁর আবেদন, ঘরোয়া মিটিং, জনসভা, বৈঠকে রাজনীতির পাশাপাশি জল অপচয় বন্ধ করা এবং ‘জল ধরো জল ভরো’ প্রকল্প নিয়েও দু’-চার কথা বলুন। আশার আলো বলতে এইটুকুই।