আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
আমরা ইতিহাস থেকে যদি শিক্ষা নিই তবে দেখব, এই ঘটনা নতুন কিছু নয়। দুই রাজনৈতিক দলের শক্তি কিছুটা কাছাকাছি এসে গেলে সংঘাত বাড়ে। অনেকসময়ে তখনই শুরু হয় এলাকা দখলের লড়াই, তোলাবাজির রেষারেষি। আগেও ছিল, এখনও আছে এবং আগামী দিনেও তা থাকতে পারে। ইতিহাস বলছে, কোন দল ক্ষমতায় আছে, সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হল রাজনীতির আধুনিক ধর্ম, পরম্পরা।
এরাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যাঁরা বিষোদ্গার করছেন, তাঁরা কিন্তু একবারও মুখে উত্তরপ্রদেশ বা বিহারের নাম করছেন না। উত্তরপ্রদেশ বা বিহারে কী কম মাৎস্যন্যায় হচ্ছে! যোগী সরকার কি বিভিন্ন ব্যাপারে তাঁর ব্যর্থতার পরিচয় দেয়নি! সুতরাং নিরপেক্ষতা আজ অনেকটাই উধাও। বিহারের কথা বললে অনেক কথাই এসে যায়। উত্তরপ্রদেশ বা বিহারে আজ রাত্রিবেলা মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়! সেখানে মাফিয়ারাজ খতম করা যায়নি। বন্ধ করা যায়নি তোলাবাজি, গ্যাংওয়ার।
এরাজ্যের অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। সিন্ডিকেট, তোলাবাজির অপবাদ নিয়ে বহু নেতা কলার তুলে সাদা গাড়ি হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়ান। পুলিস তাঁদের ভয় করে। তাঁরা নিজেদের এক একটি জায়গিরদারের শাসনকর্তা বলে মনে করেন। এখন আবার নতুন করে কাটমানি বিতর্কে ফেঁসে গিয়েছেন বহু নেতা। যদিও তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তাঁদের দলের ৯৯.৯৯ শতাংশ নেতাই সৎ। দলের পক্ষ থেকে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, যারা ওইসব করত তারা এখন বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে। এখন কেবল সৎ ব্যক্তিরাই তৃণমূলে থেকে যাচ্ছে।
কিন্তু মানুষের অভিজ্ঞতা সত্যিই কি তাই? এখন দেখা যাচ্ছে জেলায় জেলায় বিভিন্ন নেতার বাড়ি ঘেরাও করছেন ভুক্তভোগীরা। তাঁদের দাবি, দিদি বলেছেন, টাকা ফেরত দিতে হবে। অনেক প্রধান, উপপ্রধান, কাউন্সিলার, পঞ্চায়েত সদস্য বাড়ি থেকে উধাও। অনেকে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হয়েছেন। এই দুর্নীতি রোখার তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনেক বেনোজল। শুদ্ধ হবে কীভাবে! এরমধ্যে কিছু বেনোজল বিজেপির ঘরেও ঢুকে পড়েছে। দেখা গিয়েছে একদিন যাঁরা বামেদের হয়ে তোলা তুলতেন, তাঁরা লাল থেকে সবুজ হয়ে, শিবির বদল করে তৃণমূলের হয়ে সিন্ডিকেট, তোলাবাজি, কাটমানির কার্যকলাপে মত্ত হয়ে উঠেছিলেন। তাঁদেরই অনেকে আজ গেরুয়া শিবিরমুখী। এঁদের কেউ বিজেপিতে ঢুকে গিয়েছেন। কেউ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন, আবার কেউ রয়েছেন ওয়েটিং লিস্টে। তৃণমূল কাউন্সিলারদের সভায় বক্তৃতার সময় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে দুর্নীতিগ্রস্তদের সতর্ক করেছেন।একটা বিতর্ক তৈরি হয়। তাই এখন তাঁরই উচিত হবে এর নিবৃত্তি করা। নাহলে অরাজক অবস্থার সৃষ্টি হবে। আর সেই আগুনে ইন্ধন দিয়ে কেউ কেউ রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টাও করবে। তাই কাটমানি ইস্যুর সুরাহা হওয়া উচিত অবিলম্বে। কেউ দোষী থাকলে শাস্তি পাক। কিন্তু রাজ্যে এই অশান্তির বাতাবরণ দূর হোক। এই কাজ মমতাই পারেন। তাঁকেই কড়া হাতে রাশ টানতে হবে।