আবেগের বশে কোনও কাজ না করাই ভালো। দাম্পত্য জীবনে বনিবনার অভাবে সংসারে অশান্তি বাড়বে। কর্মে ... বিশদ
রাস্তাঘাটে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানো থেকে শুরু করে বেআইনি ভাটিখানা বন্ধে যাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা—এহেন একজন পুলিস অফিসার এভাবে বেহেড অবস্থায় মাদক-বিরোধী পদযাত্রাতেই অংশ নেওয়ায় পুলিস মহলে ঢি ঢি পড়ে যায়। শুধু নাকি তাই নয়! সংবাদে প্রকাশ, রাজ্য পুলিসের সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সোনারপুর থানার আইসি অসিত কুইল্যার উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাত্রা ও তার জেরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে নবান্নে ভূরিভূরি অভিযোগ গিয়েছে। তা নিয়ে অসিতবাবুর উপর এমনিতে অসন্তুষ্ট ছিল নবান্ন। মাদক বিরোধী মিছিলের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানে আসায় তিনি আরও রেগে যান। এরপর তিনিই আইসিকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেন বলে সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই গুরুত্বপূর্ণ থানার অফিসারের বিরুদ্ধে আরও নানান অভিযোগ নাকি জমা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু, সেক্ষেত্রে কেন তাঁর বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্নটাই এখন বড় হয়ে উঠছে। কারণ, তাঁর আচরণে গোটা ব্যবস্থারই মুখে চুনকালি পড়েছে। সামগ্রিক এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আইসি’র বিরুদ্ধে থানার একাংশ, নাগরিকরা নবান্নে অভিযোগ জানান। বিষয়টি আরও জোরদার হয় মাদক বিরোধী মিছিলে একেবারে জেলা পুলিসকর্তাদের সামনে নেশা করে হাঁটার জন্য। বিশেষ করে বারুইপুর জেলা পুলিসের উদ্যোগে এই পদযাত্রার দায়িত্বেও নাকি ছিলেন এই অফিসার। সংবাদে আরও জানা গিয়েছে, মিছিল শুরুর আগে বড়কর্তাদের সামনে আইসি মাউথ স্পিকার নিয়ে কথা বলার সময় টলছিলেন। কথাও জড়িয়ে যাচ্ছিল। এ নিয়ে মিছিলে আসা লোকজন হাসাহাসি করেন। যা নিয়ে পুলিসকর্তাদের অস্বস্তিতে পড়তে হয়। তখনই মিছিল থেকে তাঁকে বার করে থানায় পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হন।
অতএব, দেখা যাচ্ছে—যে মাদক-বিরোধী সচেতনতা গড়ে তুলতে পুলিসের অগ্রণী ভূমিকা থাকা দরকার, তা একমাত্র এই একজন অফিসারের ‘বদান্যতায়’ কালিমালিপ্ত হয়ে থাকল। পুলিসের বিরুদ্ধে নানান সময় নানান অভিযোগ ওঠে, একথা সত্যি। কিন্তু, এটাও ঠিক যে পুলিসই আমাদের অন্যায়-অত্যাচার-অবিচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জিয়নকাঠি। কয়েকজন অসৎ, উচ্ছৃঙ্খল, দুর্বিনীত, পথভ্রষ্ট, অর্থ লালায়িত ও দলদাসের জন্য গোটা বিভাগটার উপর মানুষ বীতশ্রদ্ধ হয়ে থাকেন। সুতরাং, তাঁদেরই উচিত সাধারণ মানুষের মন থেকে সেই ভয়ভীতি, ঘৃণা, অশ্রদ্ধা দূর করে সমাজের কল্যাণে নিজেদের আচরণকে আরও সংযত করা। উর্দি দেখলে যাতে আমাদের মনে না হয়, গব্বর সিং আসছে। মাথার টুপিটাকে মর্যাদার সঙ্গে মাথায় রাখাই দক্ষ পুলিসের কাজ। কারণ, ওই টুপিতেই দেশের সুরক্ষার, সুশাসনের কবজ আঁকা আছে।