উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী যখন পুরনো কর্মীদের বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে সংগঠনের কাজে নামাতে চাইছেন, তখন ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত প্রভাতবাবুর দল ছাড়া নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়েছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তিনি আগে থেকেই বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছিলেন। তা বুঝতে পেরেই জেলা সভাপতি এই মন্তব্য করেন। এব্যাপারে অনুব্রতবাবু বলেন, যিনি নিজের বুথেই ৮৬৬ ভোটে পিছিয়ে আছেন। তিনি দলে থাকলেই কী, গেলেই কী? অনেকদিন ধরেই দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন না। শুনেছি, চিকিৎসা করিয়ে বিজেপিতে যোগ দেবেন। এতে আমাদের কোনও ক্ষতি হবে না।
যদিও পুরসভা ভোটের দোরগড়ায় শহর সভাপতির পদত্যাগ নিয়ে জেলার রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। তবে জল্পনার শুরু হয়েছিল রবিবার থেকেই। রাজ্যজুড়ে যেখানে তৃণমূলের ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। সেখানে বাদ যায়নি অনুব্রতর গড় বীরভূমও। ঠিক সেই সময়ই ওইদিন শহরে মিছিল করে অনুব্রতবাবু শহর সভাপতিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে গিরিগিটি বলার পাশাপাশি বলেন, ওঁর যদি কোথাও ভালো লাগে, যেতে পারেন। উনি যদি দলে আসতে চাইলে ১০ দিনের মধ্যে আসতে পারেন। না হলে চলে যান। ১০ দিন পর সিদ্ধান্ত নেব। সেই সময় থেকেই দল ছাড়ার জল্পনা তীব্র হয়। কারণ জেলা সভাপতির এই বক্তব্যের পর খুব বেশি রাস্তা খোলা ছিল না প্রভাতবাবুর কাছে।
কিন্তু, কেন এমন পরিস্থিতি হল তা নিয়েই নানা জল্পনা সামনে আসছে। তার প্রধান কারণ অবশ্যই লোকসভা ভোটে বিপর্যয়। যেখানে ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১১ ওয়ার্ডে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডেও পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। তবে, দ্বিতীয় কারণই আরও তৎপর্যপূর্ণ। এক বছর আগে দুবরাজপুর পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়েছে। সামনেই নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই চেয়ারম্যান ‘কুর্সি’ নিয়ে শাসক দলের অন্দরে একটি অশুভ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এক্ষেত্রে এক শিবিরে ছিলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যান পীযূষ পাণ্ডে। অন্য শিবিরে প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে খুব বেশি সুযোগ না পেয়ে ক্রমশ গুরুত্ব হারাচ্ছিলেন প্রভাতবাবু। তাই লোকসভা ভোটেও দুই শিবিরে সেই ঐক্যবদ্ধ রূপ ধরা পড়েনি। যার নমুনা ভোটের ফলেই হাতেনাতে পেয়েছে শাসক শিবির। এখানে আড়াই হাজার ভোটে লিড পায় বিজেপি।
একদিকে বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের পাশাপাশি বিপর্যয়ের পিছনে দলের কোন্দলও অন্যতম কারণ। পুরো বিষয়টি নজরে রাখছিল জেলা নেতৃত্ব। তারা পরাজয়ের পরেও প্রাক্তন চেয়ারম্যানের উপরই ভরসা রাখায় দল থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে যান প্রভাতবাবু। বিভিন্ন কর্মসূচিতে তিনি গরহাজির থাকতে শুরু করেন। এমনকী, সোশ্যাল মিডিয়াতেও হার নিয়ে দলের সমালোচনা করেন। তাই তাঁকে নিয়ে দলে অস্বস্তি বাড়ছিল। বিপর্যয়ের পর কর্মীদের চাঙ্গা করতে অনুব্রত মণ্ডলের নেতৃত্বে শহরে মহামিছিলের ডাক দেয় তৃণমূল। কিন্তু সেই কর্মসূচিতেও প্রভাতবাবু না আসায় আর রেয়াত করেনি জেলা সভাপতি। তবে এই সময়ে এধরনের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
যদিও এনিয়ে জেলা সভাপতির হয়ে মাঠে নেমেছেন পীযূষ পাণ্ডে। তিনি বলেন, বহুদিন ধরেই উনি দল বিরোধী কাজ করছিলেন। বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। লোকসভা ভোটে কোনও কাজ করেননি। এখন ভাবছেন, বিজেপি পুরসভা দখল করবে। তাই চেয়ারম্যান হওয়ার লোভে দল ছেড়েছেন। একইভাবে এলাকার তৃণমূল বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউরি বলেন, এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না। আমি যখন ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম, অনেক বিরূপ মন্তব্য করেছিলেন। যদিও এপ্রসঙ্গে প্রভাতবাবু বলেন, তাহলে আগে দল বহিষ্কার করেনি কেন?