সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
সোমবার বেলা ১টা নাগাদ মেডিক্যাল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় ডায়ালিসিস ইউনিটের দরজা বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। সেখানে কোনও কর্মীরও দেখা নেই। রোগীর ভিড় ক্রমশ সেখানে বেড়েই চলেছে। এক সময় রোগীরা হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও সহকারী অধ্যক্ষের অফিসের সামনেও ক্ষোভ উগরে দেন। যদিও তাঁদের কেউই এদিন ছিলেন না। পরে রোগী ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা অনেকেই হাসপাতালের সুপারের অফিসের সামনে গিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ইটাহারের বাঙার চেকপোস্ট এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মালেক নামে এক রোগী বলেন, গত মঙ্গলবার শেষবারের মতো ডায়ালেসিস করিয়েছিলাম। আমার দুটি কিডনিই খারাপ। দু’দিন অন্তর অন্তর ডায়ালিসিস করাতে হয়। দেরি হলে নানা রকম অসুস্থতা অনুভব করি। শুক্রবার আমাকে আসতে বলেছিল। ওইদিন এসে দেখি ইউনিট বন্ধ রয়েছে। এরপর সোমবার এসেও ডায়ালিসিস করাতে পারছি না। এতে প্রচণ্ড যন্ত্রণায় ভুগছি। জগদীশপুরের সারিয়াবাদের বাসিন্দা রোগী আবু তালাহার বলেন, এদিন আমাকে আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতালে ডায়ালেসিস ইউনিটের দরজা সকাল থেকে খোলেনি। সেই কয়েক ঘণ্টা বসে থেকে প্রাইভেটে করানোর জন্য গেলাম। সেখানেও সুযোগ হল না। কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডালখোলার বাসিন্দা রোগী বৈদ্যনাথ তেওয়ারি বলেন, দিনের পর দিন আসছি আর পরিষেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছি। অসুস্থ শরীরে এতটা যাতায়াতের ধকল নেওয়া কতটা কষ্ট কেউ বোঝার চেষ্টা করছে না। হেমতাবাদের দধিকোট এলাকার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাকে গত শনিবার ডায়ালিসিসের ডেট দেওয়া হয়েছিল। দু’দিন এসে ফিরে যাচ্ছি। পরিষেবা না পেলে যন্ত্রণা হজম করে করে মরতে হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে মাত্র পাঁচটি শয্যা রয়েছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে ২০ জন রোগীর ডায়ালিসিস করা হয়। দু’দিন অন্তর অন্তর রোগীদের ডায়ালেসিস করতে হয়। এখানে সব মিলিয়ে ৮০ জন রোগীকে নিয়মিত ওই পরিষেবা দেওয়া হয়। ডায়ালিসিস ইউনিটের স্টেবিলাইজার মেশিনটি গত ১৫ আগস্ট পুড়ে গিয়েছে। ওইদিন থেকেই ইউনিটের পরিষেরা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পরিষেবা স্বাভাবিক করতে কলকাতা থেকে ইঞ্জিনিয়ারদের তলব করা হয়েছে। অন্যদিকে, রায়গঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে ২৪টি মৃতদেহ রাখার চেম্বার ১০ তলা বিল্ডিয়ে রয়েছে। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ ধরে সেটির শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ায় সেখানে কোনও মৃতদেহ পরিবারের লোকরা রাখতে পারছেন না। প্রতিদিন অনেক রোগী হাসপাতালে মারা যান। তাঁদের পরিবারের লোকরা অনেকেই দূরদূরান্তে থাকায় মৃতদেহ সেখানে রাখা হয়। কিন্তু দু’সপ্তাহ ধরে এধরনের মৃতদেহের ক্ষেত্রে মৃতের পরিবারের লোকদের বরফের চাঁই কিনে এনে পুলিস মর্গের কর্মীদের সহায়তা নিয়ে সেখানে মৃতদেহ রাখতে হচ্ছে। এনিয়ে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে।