খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
হঠাৎ করেই থমকে গেল স্বাভাবিক জনজীবন। সাধারণ মানুষ ভয় পেয়ে একসঙ্গে দুই মাসের খাবার, জল, ওষুধ সঞ্চয় করতে শুরু করল। ফলে দোকান-বাজার থেকে দৈনন্দিন দরকারি জিনিসপত্র উধাও হয়ে গেল নিমেষে। যাঁরা একটু দেরি করে ফেলেছেন, তাঁরা পড়েছেন এক অদ্ভূত আঁধারে। কারও বাড়িতে বাচ্চার জন্য দুধের অভাব, কারও বাড়িতে বয়স্ক মানুষের জন্য ওষুধ পাওয়া কষ্টকর। যখনই নিজের জমা করা খাবারের দিকে তাকাই , কামু-র প্লেগ মনে পড়ে। ‘নো বডি ইস কেপেবেল অব রিয়েলি থিঙ্কিং অ্যাবাউট এনিওয়ান, ইভেন ইন দ্য ওয়ার্স্ট ক্যালামিটি’।
যত দিন এগোচ্ছে তত বাড়ছে ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা। বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে লকডাউন। যাকে আরও একটু নমনীয় করে বলা হচ্ছে ‘ঘরবন্দি থাকা’। একদম কাছের মানুষ নিজের অজান্তেই সাহায্যের হাত সরিয়ে নিচ্ছে। শুধুমাত্র আতঙ্কে। প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন সমস্ত আজগুবি গল্প ছড়াচ্ছে, যার কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। অথচ, তা ভাইরাল হয়ে চলেছে। মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, আমরা যেন বার্গম্যানের ‘সেভেন্থ সিল’ ছবির আন্তেনিও চরিত্র হয়ে উঠেছি। আমরা প্রত্যেকে আমাদের মতো করে ‘ঘর’-এ ফিরছি। দেখছি মানুষের দীনতা আর দাবার বোর্ডে চ্যালেঞ্জ করছি মৃত্যুকে।
এদেশের কর্মসংস্কৃতি আমায় মুগ্ধ করেছে। শিখিয়েছে কাজের প্রতি নিষ্ঠাবান ও কঠোর পরিশ্রমী হতে। কিন্তু এই প্রথম নিষ্ঠার অভাবেই বিশেষ অসুবিধায় পড়ে গিয়েছি। কোভিড ১৯ সর্বগ্রাসী না হওয়া পর্যন্ত আমি বা আমার স্ত্রী কেউই কর্মক্ষেত্র থেকে ওয়ার্ক ফ্রম হোমের নির্দেশ পাইনি। যখন সেই নির্দেশ এল, তখন দেরি হয়ে গিয়েছে। আকাশপথে আমার যাওয়া বা স্ত্রীয়ের ফ্লোরিডা থেকে বস্টনে আসা আরও বেশি বিপজ্জনক। ফলে, একই দেশে থেকে এই ভয়ঙ্কর সময়ে পরস্পরের থেকে প্রায় ১৪ হাজার মাইলের দূরত্বে। যতই বড় হই, বিপদের সময় শুধু চোখে ভাসে বাবা আর মা। ওঁরা এখানে নেই। এই বিভুঁইয়ে একমাত্র আপনজন আমার স্ত্রী, তাঁকেও আলাদা করে দিয়েছে এই কঠিন সময়।