শিক্ষার জন্য দূরে কোথাও যেতে পারেন। প্রেম-প্রণয়ে নতুন যোগাযোগ হবে। বিবাহের কথাবার্তাও পাকা হতে পারে। ... বিশদ
কওসরকে ছাড়ানোর জন্য সমস্তরকম পরিকল্পনাই চূড়ান্ত করে ফেলেছিল দুই অভিযুক্ত। ধৃতদের জেরা করে জানা যাচ্ছে, জেল থেকে আদালতে নিয়ে আসার সময় খাগড়াগড়ের এই অভিযুক্তকে কী ধরনের নিরাপত্তা দেওয়া হয়, কতজন পুলিসকর্মী থাকেন, তার পুরো তথ্যই তাদের হাতে এসে গিয়েছিল। তবে এতটা যে নিরাপত্তা থাকতে পারে, তা দুই অভিযুক্ত ভাবতে পারেনি। এই নিরাপত্তার বেড়াজাল টপকে কীভাবে কওসরকে ছাড়ানো যায়, তার কৌশলও তারা তৈরি করছিল। পাশাপাশি তারা এও ভাবছিল, যে ধরনের নিরাপত্তা রয়েছে, তাতে ছাড়ানোর পরেও ধরা পড়ে যাওয়ার একটা আশঙ্কা রয়েছে। যদি কোনও কারণে কলকাতায় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়, তার জন্য প্ল্যান বি তৈরি করেছিল দুই অভিযুক্ত। ধৃতরা পুলিসকে জানিয়েছেন, কওসরের বিরুদ্ধে পটনায় ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির মামলা রয়েছে। যাতে ইতিমধ্যেই চার্জশিট হয়ে গিয়েছে তার নামে। তাই আদালতের নির্দেশ মতো নির্দিষ্ট তারিখে তাকে পাটনা আদালতে হাজির করাতে হবে। সেই কারণে সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কীরকম ও কোথায় কোথায় ফাঁকফোকর রয়েছে, তার তথ্যও জোগাড় করছিল তারা। এরজন্য সেখানকার বেশ কিছু যুবককে তারা নিয়োগ করেছিল। যারা এই সংক্রান্ত খবরাখবর সংগ্রহ করছিল। পাশাপাশি পটনার যে আদালতে কওসরকে তোলা হয় তার ছবি ও আসাযাওয়ার রাস্তাও খতিয়ে দেখে তারা। এই সংক্রান্ত ফুটেজও আরিফুলের কাছে আসে। তাতে তাদের নজরে এসেছিল, কলকাতায় যে ধরনের আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা রয়েছে, তা অন্য রাজ্যে কিছুটা কম। সেই কারণে পাটনা ছিল তাদের দ্বিতীয় টার্গেট।
গুলিবৃষ্টি ঘটিয়ে কওসরকে ছাড়ানোর জন্য তারা পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এজন্য অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রের প্রয়োজন ছিল। যা তাদের হাতে ছিল না। কারণ দুজনেই বুঝে গিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়তে গেলে উন্নতমানের আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োজন। ধৃতদের বক্তব্য, জেএমবির উপর এসটিএফ সহ অন্যান্য গোয়েন্দা কর্তাদের নজর থাকায়, বাংলাদেশ থেকে তারা টাকা পাঠাতে পারছিল না। যে কারণে তারা আর্থিক সঙ্কটে পড়ে। টাকার সংস্থান করতেই দক্ষিণ ভারতের বেশ কয়েকটি জায়গায় ডাকাতি করে ধৃতরা। সেখান থেকে মোটা অঙ্কের টাকা জোগাড় করে। তারপর মালদহ ও মুর্শিদাবাদের বেশ কয়েকজন বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র কারবারির সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাদের মাধ্যমে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র কেনা পাকা হয়ে গিয়েছিল। গোয়েন্দারা জেনেছেন, মালদহ ও মুর্শিদাবাদের ওই দুই আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারির আবার বাংলাদেশে যাতায়াত রয়েছে। তাদের মাধ্যমে জেএমবির কাছ থেকে অস্ত্র আনার কোনও পরিকল্পনা করা হয়েছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর পাশাপাশি এই দুই জেলার বেশ কিছু যুবককে নিয়োগ করেছিল তারা। তাদের জেহাদি প্রশিক্ষণও দেয় ধৃতরা। কওসরকে ছাড়ানোর জন্যই এই টিম তৈরি করা হচ্ছিল বলে ধৃতরা জানিয়েছে। পলাতক এই জেহাদিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিস।