বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
এর আগে একাধিকবার একুশের শহিদ স্মরণের সভায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে ভাষণ দেওয়ার সময় খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বৃষ্টি তাঁর এবং দলের কাছে প্রকৃতির আশীর্বাদের মতো। এবার সেই ‘আশীর্বাদ’ না থাকায় বেজায় রোদ আর ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাস করলেন হাজার হাজার সমর্থক। রোদ থেকে বাঁচতে ধর্মতলার ফুটপাতের পাশে একচিলতে ছায়ায় কেউ মাথা গুঁজলেন, কেউ ছাতা মাথায় নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলেন। মহিলা সমর্থকদের অনেককেই দেখা গেল ওড়না দিয়ে মুখ ঢেকে দাঁড়িয়ে থাকতে। টিপু সুলতান মসজিদের সামনে ছাতা মাথায় দাঁড়িয়েছিলেন রানাঘাট থেকে আসা তৃণমূল সমর্থক সমর বিশ্বাস, চিত্তব্রত দেবনাথ, বিভাস শূররা। সমরবাবু বলেন, এবার সত্যিই ‘অন্য একুশে জুলাই’ দেখছি। প্রত্যেকবার বৃষ্টিতে ভিজতে হয়, আর এবার ঘামে জবজবে। পাশে দাঁড়ানো বিভাসবাবু তখন আইসক্রিম খেতে খেতে বললেন, ছাতা আনলাম বৃষ্টির কথা ভেবে, এখন রোদের জন্য কাজে লেগে গেল। গত সাত-আট বছর ধরে প্রত্যেকবারই একুশের সমাবেশে আসেন খানাকুলের বাসিন্দা ইসমাইল গাজি। তিনি বলেন, এই ঠা ঠা রোদে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা যায় বলুন। ছাতাও আনিনি। বৃষ্টি না হোক, একটু মেঘলা হলেও এতটা কষ্ট হতো না।
সকালে ধর্মতলায় এদিন সামান্য এক পশলা বৃষ্টি হলেও যে সময় থেকে সভামুখী মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করে, তখন থেকেই টানা রোদ ছিল। লোকসভা নির্বাচনে কিছুটা ধাক্কা খাওয়ার পর এবারের সমাবেশের সমাগম নিয়ে নানা মহলের পাশাপাশি তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যেও ছিল চাপা কৌতূহল। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে বৃষ্টি না হওয়া এবং গরম নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা। কলকাতা পুরসভার গেটের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন একদল তৃণমূল কর্মী। তাঁরা সবাই বাসে করে এসেছেন বর্ধমান থেকে। তাঁদের মধ্যে একজন বিমল সাঁপুই বলেন, জলের ট্যাঙ্ক অনেক রাখা হয়েছে বলে শুনেছি। সেই ট্যাঙ্ক খুঁজতে খুঁজতেই এখানে চলে এলাম। আমরা শুরুর দিকে অর্থাৎ সেই বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বসেছিলাম। আর পারছিলাম না গরমে। তাই জলের খোঁজে এদিকে চলে এলাম।
গরম যেমনই থাক না কেন, তার মধ্যেই দলনেত্রীর ভাষণ শোনার জন্য উৎসাহে খামতি ছিল না। মমতা ভাষণ শুরুর সময়ে দেখা যায়, সভার শুরু থেকে বসে থাকা কিছু লোকজন উঠে আসতে বাধ্য হলেও রোদের দাপটে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে থাকা প্রচুর মানুষ তখন সভামঞ্চের দিকে এগচ্ছেন ভিড় সরিয়ে। সেই ভিড়ের মধ্যে বহু সমর্থককেই বলতে শোনা গেল, এবার বৃষ্টির দেখা মিলল না একুশের সমাবেশে। এমন রোদে পুড়ে একুশের শহিদ স্মরণ শেষ কবে হয়েছে, মনে করতে পারছেন না প্রবীণ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও।