খরচের চাপ এত বেশি থাকবে সে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। কর্মক্ষেত্রে নানান সমস্যা দেখা ... বিশদ
প্রশাসন সূত্রে জানা গয়েছে, আগামী ২৫ জানুয়ারি বীরভূমের ১০টি ব্লকে বোরো চাষের জন্য জল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। সেইমতো গত ১৭ ডিসেম্বর বৈঠক করে সেচ দপ্তরকে ম্যাসাঞ্জোর জলাধার থেকে জল ছাড়ার ব্যাপারে সেচ ও জলপথ দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলাশাসক বৈঠক করে জল ছাড়ার জন্য সেচ ক্যানেলগুলিকেও সংস্কারের নির্দেশ দেন।
কিন্তু, জল দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হলেও চাষিদের বোরো ধানের বীজতলা তৈরিতে দেরি হয়েছে বলে দাবি কৃষিদপ্তরের। তাই জল দেওয়ার সিদ্ধান্ত পিছতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ব্যাপারে বীরভূম জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি নন্দেশ্বর মণ্ডল বলেন, কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা আমাদের বীজতলা প্রস্তুতি নিয়ে জানিয়েছেন। জেলায় এখনও বীজতলা তৈরি সম্পূর্ণ হয়নি বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাই জল দেওয়ার সিদ্ধান্ত ২৫ জানুয়ারির পরিবর্তন হতে পারে। সেই ব্যাপারে স্থায়ী সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনও পরিকল্পনা নেবে।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিক থেকেই চাষিরা বোরো ধানের জন্য বীজতলা প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু, খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য বীজতলা তৈরিতে দেরি হয়েছে বহু চাষিরই। তাছাড়া কারও কারও বীজে রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা গিয়েছে। ফলে, চাষিরা বিপাকে পড়েন।
প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে জেলায় বেশ কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি হতে থাকে। তাছাড়া শীতের কামড়ও ছিল অত্যধিক। এমনকী, কয়েক সপ্তাহ ধরে কুয়াশার প্রভাবেও চাষিরা সমস্যায় পড়েন। চাষিদের দাবি, বৃষ্টির ফলে আলু চাষের ক্ষেত্রে যেমন প্রভাব পড়েছে তেমনি কুয়াশার ফলে বোরো ধানের বীজতলাতেও প্রভাব পড়েছে। তাই কোনও কোনও চাষিকে বীজতলা তৈরি করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরেও জেলায় কুয়শার তীব্রতা ব্যাপক ছিল। রবিবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। তার জেরে আকাশ ছিল মেঘলা। রোদের দেখা মেলেনি। এই আবহাওয়াও বীজতলা তৈরির ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি চাষিদের।
কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমে ১৯টি ব্লক হলেও বোরো চাষের জন্য সিউড়ি-১, ২, সাঁইথিয়া, মহম্মদবাজার, দুবরাজপুর, বোলপুর-শ্রীনিকেতন, ময়ূরেশ্বর-১, ২, লাভপুর ও ইলামবাজারে জল দেওয়া হবে। ওই ১০টি ব্লকের ৩৮ হাজার ৭৮৫ একর জমিতে জল দেওয়া হবে। জেলায় প্রায় ৯০ হাজার হেক্টরের কাছাকাছি জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে কৃষিদপ্তরের। প্রশাসনের দাবি, চলতি শীতের মরশুমে বোরো ধানের ফলন ভালো করতেই এই জল দেওয়া হবে। জেলায় বোরো চাষের জন্য চারবার জল দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। সেইমতো এলাকায় চাষিদের জল দেওয়ার খবর জানাতে প্রশাসনের তরফে লিফলেট ছড়িয়ে প্রচারও করা হয়েছে।
কৃষিদপ্তরের আধিকারিকদের দাবি, চলতি মরশুমে আবহাওয়ার জন্য বীজতলা প্রস্তুতিতে দেরি হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জল না দেওয়াই ভালো। তাই জল দেওয়া নিয়ে ফের বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সিউড়ির চাষি ভাস্কর মণ্ডল বলেন, বোরো ধানের জন্য বীজতলা তৈরি করেছি। কিন্তু, চারা গাছে এক ধরনের দাগ হয়ে গিয়েছে। বীজতলা পরিচর্যা করছি। সেচের জন্য ক্যানেলের পাশাপাশি সাবমার্সিবলও এলাকায় রয়েছে।
ময়ূরেশ্বরের চাষি অপূর্ব পাণ্ডা বলেন, খামখেয়ালি আবহাওয়ার জন্য অনেকেই এখনও বীজতলা করতে পারেননি। কেউ কেউ অবশ্য করেছেন। তবে, অনেকের জমিতেই ধসা লাগার মতো লাল হয়ে যাচ্ছে। তাই সবার বীজতলা তৈরি হলে তারপর জল দিলেই ভালো হয়।