বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে দু-এক সপ্তাহ আগেও বোনা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। খরিফ মুগের জন্য সম্রাট, বাসন্তী, পন্থমুগ ৫ প্রভৃতি জাত ভালো। সারিতে বুনলে হেক্টরে ৩০ কেজি বীজ লাগবে। ছিটিয়ে বুনলে আরও ১০ কেজি বেশি বীজ প্রয়োজন। বোনার এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি বীজ ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা ৩ গ্রাম মাত্রায় ডাইথেন এমন ৪৫ মিশিয়ে শোধন করে নিতে হবে। রাইজোবিয়াম জীবাণুসার দিয়ে বীজ বপন করা দরকার। প্রতি বিঘা বীজের জন্য রাইজোবিয়াম জীবাণুসার প্রয়োজন ২০০ গ্রাম।
জীবাণুসার জলে গুলে লেই তৈরি করে তাতে বীজ মাখাতে হবে। বপনের আগে ঠান্ডা জলে আধঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখতে পারলে ভালো। ১০০ গ্রাম চিটেগুড় ১ লিটার জলে মিশিয়ে বেশ কিছুক্ষণ ফোটাতে হবে। তার পর তা ঠান্ডা করতে হবে। এবার ওই গুড়ের দ্রবণে জীবাণুসার যোগ করতে হবে। দ্রবণে মাখিয়ে নেওয়ার পর ছায়ায় শুকিয়ে নিতে হবে বীজ। যাঁরা খরিফে মুগ চাষ করবেন, তাঁদের বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জমি তৈরির কাজ শুরু করে দিতে হবে। মুগ চাষের জন্য তিন-চারবার চাষ দিয়ে মইয়ের সাহায্যে জমি সমান করে নিতে হবে। জমির আগাছা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। জল নিকাশির উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকা দরকার। মুগের জমিতে প্রথম চাষের সময় হেক্টর প্রতি ৬০ কুইন্টাল গোবর বা আবর্জনা সার দিতে হবে। জমি তৈরির সময় মূলসার হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে ২০: ৪০: ২০ কেজি হারে নাইট্রোজেন, ফসফেট ও পটাশ সার। সেক্ষেত্রে ইউরিয়া ৪৩ কেজি, সিঙ্গল সুপার ফসফেট ২৫০ কেজি, মিউরিয়েট অফ পটাশ ৩৩ কেজি ব্যবহার করতে হবে। ফসফেট ঘটিত সার হিসেবে সিঙ্গল সুপার ফসফেট ব্যবহার না করলে আলাদাভাবে হেক্টরে ২০ কেজি সালফার প্রয়োগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি আধিকারিকরা। মুগের জমিতে যদি অণুখাদ্যের অভাব থাকে, তা হলে ফসল বোনার ২৫-৩০ দিনের মাথায় ০.২ শতাংশ বোরাক্স দ্রবণের সঙ্গে ০.০৫ শতাংশ অ্যামোনিয়াম মলিবডেট দ্রবণ মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করা যেতে পারে। এতে বোরণ ও মলিবডেনামের ঘাটতি মেটানো যায়। বেশি ফলন পেতে সারিতে বীজ বোনা ভালো। সারি থেকে সারির দূরত্ব ১০ ইঞ্চি এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১০ সেমি রাখা দরকার। ৫ সেমি গভীরতায় মুগ বীজ বুনতে হবে। চারা বের হওয়ার ৩ সপ্তাহ পর জমির আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। অবাঞ্ছিত গাছ তুলে ফেলে দিতে হবে। খরিফে মুগের জমিতে আলাদা করে সেচের প্রয়োজন হয় না। বৃষ্টির জলেই চাহিদা মিটে যায়। তবে প্রাক খরিফ মরশুমে মাটিতে রসের টান থাকলে ফসল বোনার আগে একটি সেচ দিয়ে নিতে হবে। ফুল আসার আগে একটি সেচ দিয়ে নিতে হবে। দানা পুষ্ট হওয়ার সময় আরও একটি সেচ দিতে পারলে ভালো। আখ, তিল ও পাটের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে মুগ চাষ করা যায়।
অড়হর, তুলো, ভুট্টার সঙ্গেও এটি চাষ করা সম্ভব। বোনার ৬০ দিনের মধ্যে প্রথমবার শুঁটি তোলা যায়। তার ১৫ দিন পর বাকি শুঁটি পেকে যায়। তখন দ্বিতীয়বার ফসল তোলা যায়। ফসল নেওয়ার পর মুগ গাছ কেটে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। এতে মাটির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি পায়।
যেসব জাতের শুঁটি একসঙ্গে পাকে, এমন জাত চাষ করতে পারলে ভালো। আমাদের রাজ্যে খরিফে চাষের জন্য মুগের ভালো জাত নরেন্দ্রমুগ ১, পন্থমুগ ৪, ৫, এমএইচ ২, ১৫, সুকুমার, পুসা বিশাল, স্নেহা। গ্রীষ্মকালীন মুগ চাষের জন্য ভালো জাত পিপিএম ১৩৯, পুসা বিশাল, পন্থমুগ ৫, হাম ১২, ১৬, টিএমবি ৩৭। রবি মরশুমে চাষ করলে পাউডারি মিলডিউ প্রতিরোধী জাত টিএআরএম ১৬, টিএম ৯৬-২, ড্যামব্যান ২ প্রভৃতি। হলুদ কুটে রোগ প্রতিরোধী জাত সম্রাট, পন্থমুগ ৪, ৬, আইপিএম ২, ৩, হাম ১, ১২।