সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
তবে শুধু উমাকান্তবাবুই নয়। তাঁর প্রতিবেশী তনুশ্রী মান্নাও তাঁর চার বছরের যমজ দুই সন্তানকে নিয়ে রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের সমস্যার জন্য নিত্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এনিয়ে তাঁরা ক্ষুব্ধ। খোদ পুরসভার মধ্যে বসবাস করেও ন্যূনতম পরিষেবাগুলি না মেলায় এলাকার বাসিন্দারাও হতবাক। তাঁরা অনেকেই সমস্যাগুলির দ্রুত প্রতিকারের দাবি তুলেছেন। ওই দু’টি পরিবার বিশেষত রাস্তার সমস্যার জন্য যে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন, তা স্বীকার করে নিয়েছেন ওই ওয়ার্ডের তৃণমূলের কাউন্সিলার তথা শিক্ষক কার্তিক খাঁড়া। তিনি বলেন, ওখানে রাস্তা তৈরির জন্য আমরাও চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনওভাবে রাস্তা বের করতে পারছি না। আর রাস্তা না থাকার জন্য বিদ্যুৎ লাইনও নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না।
ঘাটাল শহরের প্রাণকেন্দ্র থেকে ৫০০ মিটার দূরে এবং ঘাটাল কলেজ মোড়-রানিচক রাস্তা থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে উমাকান্তবাবুর বাড়ি। ২০১৩ সালে তিনি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কোন্নগরে বাড়ি করেছিলেন। তখন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ছিলেন গণেশ বড়দোলই। উমাকান্তবাবুর দাবি, ওই সময় তৎকালীন কাউন্সিলার আশ্বাস দিয়েছিলেন, প্রত্যেকটি নাগরিকের রাস্তা, পানীয় জল এবং বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দায়িত্ব পুরসভার। তাই এগুলি হয়ে যাবে। সেই আশ্বাসেই উমাকান্তবাবু বাড়ি করেন। কিন্তু কাউন্সিলার কথা রাখতে পারেননি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে কার্তিকবাবু তৃণমূল বিরোধী হিসেবে ওই ওয়ার্ড থেকে জয়লাভ করে উমাকান্তবাবুদের জানান, পুরবোর্ডে তৃণমূল রয়েছে। বিরোধী কাউন্সিলার হিসেবে তিনি বারবার ওই এলাকার রাস্তা তৈরি চেষ্টা করছেন। কিন্তু কোনওভাবেই পারছেন না। বছর দেড়েকের মধ্যে কার্তিকবাবু তৃণমূলে যোগদান করেন। শাসক দলের কাউন্সিলার হওয়ায় উমাকান্তবাবু আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু আজ অব্দি সেই রাস্তা হয়নি।
বছর চারেক আগে উমাকান্তবাবুর প্রতিবেশী হন তনুশ্রীদেবীরা। তনুশ্রীদেবী বলেন, রাস্তা করার অনেক উপায় রয়েছে। মাত্র ২০০ ফুট রাস্তা নির্মাণ করে দিলেই আমাদের সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু তা না করার ফলে বছরের মধ্যে ১০ মাস আমাদের দেড় থেকে দু’ফুট করে জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এই দুর্ভোগের জন্য আমাদের বাড়িতে কোনও আত্মীয়স্বজন আসতে চান না। আমরাও কোনও অনুষ্ঠানে যেতে হলে বাড়ি থেকে পোশাক নিয়ে গিয়ে লোকের বাড়ি গিয়ে সেজে বের হই। উমাকান্তাবাবু বলেন, এখন আমার মেয়ে বড় হয়েছে। গত একবছর ধরে ভালো ভালো পরিবার থেকে যোগাযোগও আসছে। কিন্তু জল পেরিয়ে আমাদের বাড়িতে আসতে হয় বলে সমস্ত যোগাযোগই কেটে যাচ্ছে। এছাড়া বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। অন্যের বাড়ি থেকে লাইন নিয়ে দু’একটি পাখা-আলো জ্বালাতে পারি। পানীয় জলও অনেক দূর থেকে বয়ে আনতে হয়। এই অবস্থার মধ্যে কতদিন আমাদের থাকতে হবে, সেটাই প্রশ্ন। তনুশ্রীদেবী বলেন, পুরসভা এলাকায় আছি। অথচ পরিষেবাই পাচ্ছি না। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষকেও এত কষ্টের মধ্যে থাকতে হয় না।