সঠিক বন্ধু নির্বাচন আবশ্যক। কর্মরতদের ক্ষেত্রে শুভ। বদলির কোনও সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই। শেয়ার বা ... বিশদ
এব্যাপারে রেলের আসানসোল ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক রাহুল রঞ্জন বলেন, রেল ট্র্যাকের সংস্কার করা হচ্ছে। সিউড়ি থেকে অণ্ডাল যাওয়ার বিকল্প ট্রেন যোগাযোগ রয়েছে। তাই গুরুত্বের বিচার করে নতুন করে ওই রুটে ট্রেন চালানোর কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি।
জানা গিয়েছে, সিউড়ি থেকে প্রতিদিন হাওড়া যাওয়ার জন্য ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জার ছাড়াও হুল এক্সপ্রেস চলত। সিউড়ি-হাওড়া আরও একটি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস সাঁইথিয়া হয়ে চলাচল করত। কিন্তু কর্তৃপক্ষের দাবি, রেলওয়ে ট্র্যাকের কাজ চলার জন্য গত ১৬ আগস্ট থেকে হুল ও সিউড়ি-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই দু’টি ট্রেন চলবে না। রেলের তরফে তা নোটিস জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি স্টেশনে প্রচারও করা হচ্ছে বলে দাবি। কিন্তু সিউড়ি থেকে হাওড়াগামী ময়ূরাক্ষী ছাড়া আর কোনও ট্রেন না থাকায় বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা।
যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সিউড়ি থেকে হাওড়া যাওয়ার জন্য মানুষকে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। সকালে ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের পর হাওড়া যাওয়ার কোনও ট্রেনই নেই। তাছাড়া ময়ূরাক্ষীর পর অন্য কোনও ট্রেন দেওয়ার দাবি দীর্ঘদিন ধরে জানানো হলেও তা ফলপ্রসু হয়নি। এমনকী বর্তমানে সিউড়ি থেকে হাওড়াগামী দু’টি এক্সপ্রেস ট্রেনই বাতিল করা হলেও বিকল্প ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে যাত্রীদের অণ্ডাল পর্যন্ত প্যাসেঞ্জার ট্রেনে করে যেতে হচ্ছে। পরে সেখান থেকে অন্য ট্রেন ধরে হাওড়ায় যেতে হচ্ছে। নিত্য যাত্রীদের দাবি, ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারে প্রতিদিন সিউড়ি থেকে বহু যাত্রী যাতায়াত করেন। ফলে রামপুরহাট থেকেই ট্রেনটি ভিড়ে ঠাসা হয়ে থাকে। ময়ূরাক্ষীর পরে বা আগে কোনও ট্রেন না থাকায় অগত্যা যাত্রীদের তাতেই যেতে হয়।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে সিউড়ি থেকে ময়ূরাক্ষী ছাড়া কয়েক জোড়া প্যাসেঞ্জার ট্রেন সাঁইথিয়া থেকে অণ্ডাল যাতায়াত করে। তাও সেই প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলিও অপ্রতুল। কাজের সময় ট্রেন না পেয়ে অনেকেই সমস্যায় পড়ছেন। বাধ্য হয়ে অনেক বেশি টাকা ভাড়া দিয়ে তাঁদের বাসে যাতায়াত করতে হচ্ছে। যার ফলে সময়ও নষ্ট হচ্ছে। যাত্রীদের দাবি, সকালে অণ্ডাল থেকে সিউড়ি আসার জন্য ট্রেনের সংখ্যা অপ্রতুল। ফলে, সেখান থেকেও সময়মতো সিউড়ি বা সাঁইথিয়া আসার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
বাসিন্দাদের দাবি, সিউড়ি বীরভূমের জেলা সদর হওয়ার পরেও ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক না থাকায় এলাকার উন্নয়নেও গতি আসেনি। যাত্রীদের অনেক সময় হাওড়া যাওয়ার জন্য সাঁইথিয়া বা আহমদপুরে যেতে হয়। সেক্ষেত্রে হয়রানির শিকার হতে হয়। অণ্ডাল হয়ে হাওড়া যাওয়ার জন্য অতিরিক্ত সময় লাগে বলে যাত্রীদের অনেকেই ওভাবে যাতায়াত করেন। কিন্তু সিউড়ি থেকে হাওড়া যাতায়াত স্বাভাবিক করার জন্য নিত্য যাত্রীদের তরফেও একাধিকবার দাবি জানানো হয়েছে।
বাসিন্দাদের দাবি, সিউড়ি থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ ব্যবসা সহ নানা কাজে হাওড়া বা বর্ধমানে যাতায়াত করেন। এছাড়া অসংখ্য ছাত্রছাত্রীকেও চলাচল করতে হয়। সিউড়ি থেকে কলকাতাগামী বহু সরকারি বা বেসরকারি বাস চলাচল করলেও ট্রেনের জন্য অনেককেই দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। বর্তমানে একজোড়া ট্রেন বাতিল থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে। সিউড়ির এক ব্যবসায়ী জয়ন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বর্তমানে হুল ও ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস দু’টি ট্রেনই বাতিল করা হয়েছে। রেল লাইনের কাজ হচ্ছে বলে তা বন্ধ করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ওই দু’টি ট্রেনের বদলে অন্য ট্রেন দিলে যাত্রীদের সুবিধা হতো। এছাড়া ময়ূরাক্ষী ফাস্ট প্যাসেঞ্জারের আগে নতুন একটি ট্রেন সিউড়ি থেকে অণ্ডাল, বর্ধমান হয়ে কর্ডলাইনে হাওড়া গেলে যাত্রীদের খুব সুবিধা হয়। হাওড়া থেকে সিউড়ি আসার জন্য বিকেলে ট্রেনের দাবি রয়েছে। কিন্তু সেই বিষয়ে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও কোনও সুরাহা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা বরুণ দাস বলেন, সিউড়ির যাত্রীরা বরাবর ব্রাত্য হয়েছেন। ময়ূরাক্ষীতে বাড়তি কামরা বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু যাত্রী পরিষেবায় রেল কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই।