বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বাংলাদেশের পার্লামেন্টে বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত ২২ জুন তাঁকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করানো হয়েছিল। বাংলাদেশের অন্তর্দেশীয় জনসংযোগ দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, এদিন সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ৯০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রাক্তন এই প্রেসিডেন্ট। বিভিন্ন অঙ্গ ধীরে ধীরে কাজ করা বন্ধ করে দেওয়ায় গত ন’দিন তাঁকে রাখা হয়েছিল আইসিইউতে। লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।
এরশাদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পার্লামেন্টের স্পিকার শিরিন শর্মিন চৌধুরী। শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ভারত সরকারের তরফে শোকপ্রকাশ করেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর ট্যুইট, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এরশাদের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। আগামীকাল সকাল ১০টায় এরশাদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে পার্লামেন্টের সাউথ প্লাজায়। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কাকরাইল রোডে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সেখানে দলীয় কর্মী ও সাধারণ মানুষ প্রাক্তন প্রেসিডেন্টকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে পারবেন। মঙ্গলবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে তাঁর রংপুরের বাড়িতে। সেখান থেকে ফিরিয়ে আনা হবে ঢাকায়। মঙ্গলবারই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বনানীর সেনা কবরস্থানে।
প্রাক্তন সেনাপ্রধান এরশাদ ১৯৮২ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের শাসনক্ষমতা দখল করেন। আট বছর শাসনক্ষমতায় থাকেন। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র ফেরানোর লক্ষ্যে গণঅভ্যুত্থানের জেরে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিভিন্ন অভিযোগে কারাবন্দি হওয়া সত্ত্বেও ন’য়ের দশকে দেশের অন্যতম শক্তিশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে উঠে আসেন তিনি। তাঁর জাতীয় দল বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠনে পরিণত হয়। বহুবার সাধারণ নির্বাচনে জিতে পার্লামেন্টের সদস্য হয়েছেন এরশাদ। এর মধ্যে একবার জেলবন্দি অবস্থায় নির্বাচনে লড়ে জয়ী হয়েছিলেন।
প্রাক্তন সেনাপ্রধান, সামরিক তথা স্বৈরতান্ত্রিকশাসক ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হওয়ার পাশাপাশি কবিও ছিলেন এরশাদ। প্রথমে একনায়ক ও পরে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিরোধীদের কঠোর হাতে দমন করার নজির থাকলেও ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন একজন কোমল হৃদয়ের মানুষ। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশকে সরকারিভাবে ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত করা নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয় তাঁর শাসনকালে।
অবিভক্ত বাংলার কোচবিহার জেলার দিনহাটায় জন্ম এরশাদের। বাবার নাম মকবুল হোসেন, মা মজিদা খাতুন। দেশভাগের একবছর পর ১৯৪৮ সালে পরিবারের সঙ্গে দিনহাটা থেকে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) রংপুরে চলে আসেন এরশাদ। রংপুরের কলেজে পড়াশোনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫০ সালে স্নাতক হন বাংলাদেশের এই প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট। ১৯৫২ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীতে যোগদান। সেই সময় পাকিস্তানেরই অন্তর্ভুক্ত ছিল বাংলাদেশ।