বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর

বন্ধ সুগার মিল, বিকল্প চাষে ঝোঁক
নদীয়া, মুর্শিদাবাদের আখ চাষিদের

সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর: পলাশি সুগার মিলের উৎপাদন বন্ধ হলেও  প্রতি বছর মিল কর্তৃপক্ষ আখ চাষ করে। তবে এবার মিল কর্তারা পলাশি সুগার মিলে এখনও পর্যন্ত আখ চাষ করেননি। সুগার মিল খোলার স্বপ্ন বুকে নিয়ে কালীগঞ্জ ব্লক সহ নদীয়া মুর্শিদাবাদের গোটা ছয়েক ব্লকের কয়েক হাজার আখ চাষি আজও বেঁচে আছেন। এই মুহূর্তে মিলের আখ চাষ না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে বেড়েছে দুঃশ্চিন্তা। বছর পাঁচেক আগে নভেম্বর আসতে আসতেই আখ চাষের তোড়জোড় শুরু হয়ে যেত। গলগল করে বের হতো পলাশি সুগার মিলের ধোঁয়া। রাজ্যের অন্যতম এই মিলকে জোগান দিতে চাষিরা আখ চাষ করতেন। এখন সব অতীত। জানা গিয়েছে, বছর আটেক আগেও ১২০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হতো। প্রায় ৩৫০০ চাষি আখ চাষ করতেন। বর্তমানে এর দশ শতাংশ চাষি আখ চাষ করেন। তবে কৃষিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও ৫০০ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়। প্রায় ত্রিশ শতাংশ চাষি এখনও আখ চাষ করেন। এ প্রসঙ্গে কালীগঞ্জের সহ কৃষি অধিকর্তা নীলপদ বিশ্বাস বলেন, এই আখ চাষিরা উঁচু জমি থাকলে বিকল্প ফুল, কুল, পেয়ারা সহ একাধিক সবজি চাষ করার দিকে ঝুঁকছেন। তবে আখ চাষ এখনও ৫০০ হেক্টর জমিতে হয়। গত চার বছর হল পলাশি সুগার মিলের উৎপাদন বন্ধ। চাষি, কর্মীদের পাওনা গন্ডা পাওয়া নিয়ে পথ অবরোধ আন্দোলন প্রায়শই হয়। কারখানার যন্ত্রাংশও চুরি হচ্ছে। ঠিক এই অবস্থায় সুগার মিলকে কেন্দ্র করে নদীয়ার মুর্শিদাবাদের ছ’টা ব্লক নিয়ে কয়েক হাজার চাষির এই সময়টা চরম দুর্দশার মধ্যে কাটছে। কালীগঞ্জ, নাকাশীপাড়া, তেহট্ট-১ ও ২ ও মুর্শিদাবাদের রেজিনগর, বেলডাঙা  ব্লকের চাষিরা ২০১৭ সালে মিলের উৎপাদন বন্ধ হওয়ার সময়ও কম-বেশি আখের চাষ করেছে। মিল কবে খুলবে এ নিয়ে এই  চাষিরা চরম হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকেই বাধ্য হয়ে বিকল্প ধান, পাট, সর্ষে, মুসুরি, সব্জি সহ একাধিক চাষে ঝুঁকেছেন। কিন্ত মিল খুলবে না, তা তাঁরা ভাবতে পারেন না। তবে এ বছর মিল কর্তারা এখনও পর্যন্ত আখ চাষ না করায় আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আখ চাষিরা কুইন্ট্যাল পিছু ২০০- ২৩০ টাকা দরে গুড় বিক্রেতাদের কাছে আখ বিক্রি করে। এই আখ বিক্রি করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আখ চাষিদের। আখ চাষি ইসমাইল শেখ বলেন, আমরা আখ বিক্রি করে যে দাম পাচ্ছি তা পরিশ্রমের তুলনায় কম। এছাড়া ঢলতা দিতে হয়ে। ওজনেও অনেক বেশি দিতে হয়। এতে আমাদের লাভ থাকে খুবই সামান্য। আখ চাষি সরিফুল শেখ বলেন, বিঘা প্রতি জমিতে রেটুন প্রক্রিয়াতে পনেরো মাসে দু’বার আখ পাওয়া যায। লাভটা বেড়ে যায়। তাই আমরা আখ চাষ গুরুত্ব দিয়ে করি। কিন্তু যা পরিস্থিতি তাতে আমরা বাধ্য হয়ে বিকল্প চাষ করছি। আশায় আছি, একদিন সুগার মিল খুলবে। তবে এবার এখনও পর্যন্ত মিলের লোকজন আখ চাষ না করায় আমরা আশঙ্কিত। এই মিলের শ্রমিক নেতা লোকনাথ আগরওয়ালা বলেন, প্রতি বছর মিল কর্তৃপক্ষ নিজেরা আখ চাষ করে। গত বছর কম করেও ৩০০ বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছিল। এবার তারা চাষ না করায় আখ চাষিদের মধ্যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এখন সুগার মিল ফের চালু করবে কিনা সেটা সত্যি ভাববার। এ প্রসঙ্গে সুগার মিলের জি এম জিতেন্দ্র সাক্সেনা বলেন, আদালতে কেস চলছে। যতক্ষণ কেস না মিটছে ততক্ষণ আখ চাষ করা যাচ্ছে না।

21st     March,   2022
 
 
কলকাতা
 
রাজ্য
 
দেশ
 
বিদেশ
 
খেলা
 
বিনোদন
 
আজকের দিনে
 
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
এখনকার দর
দিন পঞ্জিকা
 
শরীর ও স্বাস্থ্য
 
বিশেষ নিবন্ধ
 
সিনেমা
 
প্রচ্ছদ নিবন্ধ